এখন, ইউনিভার্স শত টনেরও কম প্রোপ্যাল্যান্ট নিয়ে এখানে নামাতে হাতে সময়ের কোনো অভাব নেই এবং তাই কাজও গজিয়ে উঠছে আপনাআপনি।
উদ্ধারকর্তাদের প্রতি উদ্ধারকৃতদের কৃতজ্ঞতা দু দলকে এক করে দিয়েছে নিমেষে। ঝালাই-ঘষা মাজা আর ফুয়েলিংসহ সব কাজ শেষ হয়ে গেলে তারা এক দল হিসেবেই উপস্থিত হবে পৃথিবীর অর্বিটে।
উল্লাসে ফেটে পড়েছে ক্রুরা এক খবর পেয়ে। স্যার লরেন্স বলেছে, কদিনের মধ্যেই অত্যাধুনিক… না, সর্বাধুনিক শিপের জন্ম হচ্ছে, গ্যালাক্সি টু। শিপের কন্ট্রাক্ট দিতে পারছে না সুং কোম্পানি বিভিন্ন আইনী জটিলতার কারণে। লয়েডস এর সাথে একটা বোঝাপড়ায় আসার জন্য তার আইনবিদেরা উঠেপড়ে লেগেছে। কোম্পানিটা এখন নতুন কথা বলে হরদম, তাদের মতে, মহাকাশ ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা তাদের চুক্তিপত্রের আওতায় পড়ে না। লয়েডস এর বীমা এক্তিয়ারে এমন কোনো ব্যাপার মহাকাশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
ঘটনার জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি। এই ঝামেলায় না যেতে চাচ্ছে সুং কর্পোরেশন না লয়েডস। যে দল বছরের পর বছর ধরে পরিকল্পনা করে এত নিখুঁতভাবে গ্যালাক্সিকে হাইজ্যাক করতে পারে তাদের বিপরীতে অবস্থান নেয়া
বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইউনাইটেড স্টেটস অব সাউদার্ন আফ্রিকা জোর গলায় প্রতিবাদ জানিয়েছে। বরং অফিসিয়ালি যে কোনো সংস্থার যে কোনো তদন্ত মাথা পেতে নিতে রাজি। ডার বান্ডও যথারীতি হল্লা করে মরছে, দোষ চাপাচ্ছে শাকার উপর।
ড. ক্রুগারকে এম্নিতে কোনো হুমকি দেয়া হয়েছে কিনা তা এখনো তিনি দেখেননি। শুধু হাজার হাজার ই-মেইল দেখেই তিনি তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন। সবগুলোই ন্যাকা কথায় ঠাসা, বিশ্বাসঘাতক, কৃতঘ্ন… ইত্যাদি ইত্যাদি।
লেখাগুলোর বেশিরভাগই আফ্রিকান ভাষায় হলেও অনেক অনেক চিঠির বানানে ভুল, ফ্রেজের কোনো আগামাথা নেই, ব্যাকরণতো বাদ। দেখেই বোঝা যায় বেচারাদের বোধশক্তি নিম্নস্তরের, নয়তো কোনো অপপ্রচারে মাথা গেছে ঘুরে।
তাই তিনি সাথে সাথেই চিঠিগুলো পাঠিয়ে দিলেন অ্যাস্ট্রোপোলে। ইন্টারপোলের এই নবরূপ সেগুলো নিল ঠিকই, ধন্যবাদও দিল অনেক, কিন্তু যা তিনি আশা করেছিলেন তা আর হল না। কোনো মন্তব্য করল না তারা।
যে দু বহির্বিশ্বের আগন্তুকের সাথে সেকেন্ড অফিসার ফ্লয়েড আর চ্যাঙ কথাবার্তা বলেছিল এবং অবশ্যই, মুখোমুখি হয়েছিল সে দুজনের। তাই, সে গল্প শুনতে তাদের প্রায়ই দাওয়াত করা হয় গ্যানিমিডের বড় বড় জায়গায়। সেখানে তারা খাবার পর এবং এমনকি খাবার সময়টাতেও হাজার প্রশ্নে জর্জরিত হয়। ভদ্র প্রশ্ন, অবশ্যই-এমন প্রশ্ন যা দেখে ঠিক প্রশ্ন বলে মনে হবে না। বোঝাই যায় বিভিন্ন সংস্থা শাকার অস্তিত্বের ভিত নড়িয়ে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ভ্যান ডার বার্গ, যে খুব সূক্ষ্মভাবে এই পুরো ব্যাপারটার সাথে জড়িয়ে গিয়ে সময় মতো আর্থিক ও বৈজ্ঞানিক দিক থেকে দারুণ লাভবান হয়ে গা বাঁচিয়ে সটকে পড়েছে সে এবার দাও মারার নতুন ক্ষেত্র গড়ার চেষ্টায় মত্ত। পৃথিবীর ইউনিভার্সিটি আর ল্যাবগুলো থেকে, সায়েন্টিফিক অর্গানাইজেশনগুলো থেকে অনেক অনেক অফার আসছে সারাক্ষণ। কিন্তু নিয়তির কী নিষ্ঠুর পরিহাস, সেসব গ্রহণের কোনো সুযোগ আর নেই। সে এতোদিন এক ষষ্ঠাংশ গ্রাভিটিতে বসবাস করেছে যে এখন আর, মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনো ফেরা নেই।
এখনো চাঁদে একটা সুযোগ আছে, আর হেউড ফ্লয়েড পাস্তুরের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করাতে সেখানেও চান্স নেয়া যায়।
আমরা এখানে একটা স্পেস ইউনিভার্সিটি গড়ার ধান্ধায় আছি। বলল সে, যেন বাইরের দুনিয়ার মানুষেরা, যারা এক জি সহ্য করতে পারে না তারা এগিয়ে আসতে পারে। রিয়েল টাইম পড়াশোনা করতে পারে পৃথিবীর মানুষের সাথে। লেকচার হল, কনফারেন্স রুম, ল্যাব সবই থাকবে। কোনো কোনোটা থাকবে শুধু কম্পিউটারের ভিতরে। কিন্তু দেখে বোঝার কোনো উপায় থাকবে না। আর, মনের অস্থিরতা কমানের জন্য আপনি হরদম ভিডিও শপিংয়ের জন্য পৃথিবীতে যেতে পারবেন।
অবাক হয়ে দেখল ফ্লয়েড, তার শুধু একটা নতুন দৌহিত্রের জন্ম হয়নি, বরং একজন ভাস্তেও জুটে গেছে। ফ্লয়েড, ভ্যান ডার বার্গ আর ক্রিস একে অন্যকে খুব ভালভাবেই বুঝতে পারে, শেয়ার করে অন্যজনের অনুভূতি। তার উপর তাদের এই একাত্মবোধের পিছনে বিরান নগরীতে, মনোলিথের সামনে যে বিপদে তারা তিনজন একত্র হয়েছিল সে ব্যাপারটা বিরাট অবদান রাখছে।
ক্রিসের আজো কোনো সন্দেহ নেই, আমি তোমাকে দেখেছিলাম। শুনেছিলাম তোমার কথা এখন যেমন শুনছি তেমি। কিন্তু ঠোঁট নড়েনি কখনো। আর কথা যে মাথায় বেজেছে তাতো শুনেছ। সবচে বড় কথা, ব্যাপারটা যেন একেবারে আটপৌরে। এমন যেন অহরহ ঘটে। একটু যেন দুঃখ মিশে ছিল। ঠিক বলে বোঝাতে পারব না। এর সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতা মিলবে না।
আমরা কিন্তু ডিসকভারির বুকে আপনার সেই দুনিয়া কাঁপানো ডেভ বোম্যান মোলাকাতটার সাথে এ ব্যাপারটাকে গুলিয়ে না ফেলে পারিনি। বলল ভ্যান ডার বার্গ।
ইউরোপার অনেক দূরে থাকতেই আমি তার সাথে রেডিও যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেছি। একেবারে ছেলেখেলার মতো মনে হলেও এ ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না আমার সামনে। আমি শিওর ছিলাম ও সেখানেই কোথাও ঘোরাফেরা করছে।