তাদের বাবা, কিংবদন্তীতুল্য স্যার লরেন্সের জন্ম চীনের সেই বিখ্যাত এক সন্তান, এক পরিবার নীতির সময়ে। প্রজন্মটা ছিল মনোবিদ আর সমাজবিদদের হাজারো কাজের জন্য একেবারে উপযুক্ত। সেকালে ব্যাপারটা অন্যরকম ছিল। কোনো ভাইবোন নেই, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে কোনো চাচা-ফুপুও নেই… মানব ইতিহাসে এ এক অনন্য ঘটনা। মনস্তত্ত্ব আর সমাজবিদ্যার প্রয়োগকাল বলা যায় তাই সে সময়টাকে।
২২ সালে তার দ্বিতীয় সন্তান জন্মের সময় লাইসেন্সিং সিস্টেমটি আইনে পরিণত হয়েছে। আপনি যত খুশি সন্তান নিতে পারেন, শুধু পর্যাপ্ত ফি টা পরিশোধ করতে হবে। (পুরনো কমিউনিস্টরাই যে এর পথে সমস্ত দৃঢ়তা একা একা দেখিয়েছিল এমনটা হয়নি। বরং তাদের সমর্থন জানিয়েছে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক।)
প্রথম দু সন্তানের কোনো ফি ছিল না। তৃতীয় সন্তানের জন্য দিতে হত এক মিলিয়ন সোল, চতুর্থজনের জন্য দুই, পঞ্চম চার এবং এভাবে দ্বিগুণ করে বাকী সবার হিসাব ধরা হবে। মজার ব্যাপার হল পুঁজিবাদী সমাজে এমিতেও তিন সন্তানের প্রতি কারো বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।
তরুণ মি. সুং (অনেক বছর আগের কথা অবশ্যই, কিং অ্যাওয়ার্ড তাকে তার কে বি ই দেয়ার আগে) মনে মনে কোনো ফন্দি এঁটেছে বলে মনে হতো না; তার পঞ্চম সন্তান জন্মের সময়ও সে এক নিতান্ত গোবেচারা কোটিপতি। কিন্তু তখন বয়স মাত্র চল্লিশ। তারপর হংকং হাতবদলে তার যতটা অৰ্থক্ষয় হওয়ার কথা ছিল ততোটা না হওয়ায় দেখতে পেল হাতে মোটামুটি কিছু টাকাকড়ি দেখা যাচ্ছে।
সুতরাং, এগিয়ে চলল ঐতিহ্য… কিন্তু স্যার লরেন্স সম্পর্কে আরো অনেক গল্পের মতো এটারও সত্যমিথ্যার কোনো মা-বাপ নেই। যেমন আগের গুজবটিও ছিল ভিত্তিহীন, তার হাতে নাকি লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের একটা চোরাই এডিশন ছিল, আকারে মাত্র জুতার বাক্সের সমান।
চান্দ্র চুক্তিতে আমেরিকার সই করতে না পারার ফলেই পুরো মলিকুলার মেমোরি মডিউল র্যাকেট প্রজেক্ট আলোর মুখ দেখে।
এমনকি স্যার লরেন্স একজন মাল্টি ট্রিলিয়নিয়ার না হলেও তার কর্পোরেশনের জটিল ধাঁধাগুলো তাকে বিশ্বের শক্তিমান আর্থিক শক্তিতে পরিণত করে। সে তার ষষ্ঠ সন্তানের জন্য আট মিলিয়ন বা অষ্টমের জন্য বত্রিশ মিলিয়নের ঘোড়াই পরোয়া করত। কিন্তু নবম সন্তানের জন্য চৌষট্টি দেয়ার পর বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমগুলোর টনক নড়ে। দশমজনের পর বাজিকররা তার একাদশ সন্তানের জন্য দুশো ছাপ্পান্ন খরচ করা না করা নিয়ে দর কষাকষি শুরু করে দিয়েছিল। বাধ সাধল লেডি জেসমিন। তার মনে হল হঠাৎ, দশ সন্তান নিয়ে সুং গোশিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা গেছে।
বাই চান্স (যদি এ নামে আসলেই কিছু থেকে থাকে) স্যার লরেন্স একেবারে ব্যক্তিগতভাবে স্পেস বিজনেসের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তার অবশ্যই অনেক আনন্দের যোগাড়যন্ত্র করা থাকতো, আর মহাকাশবিদ্যায়ও ছিল অপার আগ্রহ, কিন্তু এসব দেখাশোনার জন্য পাঁচ ছেলে আর তাদের সেক্রেটারিরাই যথেষ্ট। কিন্তু স্যার লরেন্সের আসল ভালবাসা পড়ে আছে সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যমে-অবলুপ্তি থেকে টিকে যাওয়া কয়েকটি সংবাদপত্র, বই, ইলেক্ট্রনিক আর কাগজের ম্যাগাজিন এবং সবচে বড় কথা, আন্তর্জাতিক টেলিভিশন নেটওয়ার্কগুলোতে।
এরপর এক কথায় সে কিনে ফেলল পুরনো পেনিনসুলার হোটেল ভবনটা। কারণ, কোনো এক কালে এক গরীব চীনা ছেলে হোটেলটা দেখে নিজের বাড়ি করার কথা ভেবেছিল। বিশাল শপিং মল আর রাজকীয় মার্কেটগুলোকে খুব ভদ্রভাবেই উঠিয়ে দিয়েছে, আজ ভবনটার চারধারে গড়ে উঠেছে মনোরম পার্ক। আর সেই ঐতিহ্যবাহী সুরম্য অট্টালিকা তার বাসভবন এবং মূল অফিস। আসলে নতুন লেসার অ্যাক্সক্যাভেশন কর্পোরেশনের ভাগ্য একটু প্রসন্ন হয়েছিল, আর তা থেকেই কিছু বাড়তি লাভ চলে আসে, এই যা।
একদিন, পোতাশ্রয়ের ওপাশ থেকে মহানগরীর অসম আকাশ দেখে সে সন্তুষ্টির সাথে সাথে আরো কিছু উন্নয়নের কথা ভাবে। পেনিনসুলারের নিচের কয়েকটা তলা সামনের একটা বিশাল, গলফ মাঠ টাইপ বিল্ডিংয়ের জন্য কেমন আড়াল হয়ে যাচ্ছে! এটার-সিদ্ধান্ত নিল স্যার লরেন্স-এখানে থাকা চলবে না।
হংকং প্ল্যানেটরিয়ামের ডিরেক্টরকে পৃথিবীর সেরা পাঁচের মধ্যে ধরা হয়। তার অন্য কিছু প্ল্যানও ছিল। আর স্যার লরেন্স জীবনে প্রথমবারের মতো পয়সায় কেনা যায় না এমন কিছু দেখে বেশ চমৎকৃত হয়। তাদের মধ্যে বেশ গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে। এবং অতঃপর স্যার লরেন্সের ষাটতম জন্মবার্ষিকীতে সে পার্টি দিয়েছিল; কিন্তু তার জানা ছিল না যে, পুরো সৌরজগতের ভাগ্যলিপি বদলে দেয়ার পথে সুং গোষ্ঠি সহায়তা করতে পারে।
৫. বরফের বাইরে
১৯২৪ সালে জেসিয়া সর্বপ্রথম জিনাতে প্রোটোটাইপ বানান। তার শত বছর পরেও কয়েকটা অপটিক্যাল প্ল্যানেটরিয়াম প্রজেক্টর কাজে লাগছে। আজো সেগুলো দর্শকের চোখের সামনে মিটমিটিয়ে জ্বলে। হংকং তৃতীয় প্রজন্মের যন্ত্রপাতির দিন ছাড়িয়ে এসেছে কয়েক দশক আগেই।
বিরাট ডোমের পুরোটাই এক দৈত্যাকার টেলিভিশন স্ক্রিন। এজন্য কাজে লাগানো হয়েছে হাজার হাজার ভিন্ন ভিন্ন প্যানেল। আসলেই, এ টিভিতে ধরা যায় না এমন কোনো দৃশ্য নেই।