- সূরার নাম: সূরা আলাক
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আলাক
আয়াতঃ 096.001
পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
Read! In the Name of your Lord, Who has created (all that exists),
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
Iqra/ bi-ismi rabbika allathee khalaqa
YUSUFALI: Proclaim! (or read!) in the name of thy Lord and Cherisher, Who created-
PICKTHAL: Read: In the name of thy Lord Who createth,
SHAKIR: Read in the name of your Lord Who created.
KHALIFA: Read, in the name of your Lord, who created.
===============
সূরা ইক্রা বা পড় অথবা ঘোষণা কর – ৯৬
অথবা আলাক্ বা জমাট রক্ত পিন্ড -৯৬
১৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : ৪০ বৎসর বয়সে হেরা পর্বতের গুহায় সর্বপ্রথম তাঁর এই সূরার [ ১ – ৫ ] পাঁচটি আয়াত রাসুলের নিকট সরাসরি অবতীর্ণ হয় এটাই ছিলো প্রথম ওহী। এর পরে কয়েক মাস বা সম্ভবতঃ এক বছরের বিরতি [Fatra] ছিলো। সূরা নং ৬৮ কে বলা হয় এই পাঁচটি আয়াতের পরে অবতীর্ণ দ্বিতীয় ওহী। কিন্তু এই সূরার পরবর্তী অংশ [ ৯৬ : ৬ – ১৯] দীর্ঘ বিরতির পরে অবতীর্ণ হয়,এবং এই অংশকে পূর্বের পাঁচটি আয়াতের সাথে যুক্ত করা হয়, যেখানে আদেশ দান করা হয়েছে সত্য জ্ঞান প্রচারের জন্য। পরবর্তী অংশ সংযুক্ত করার মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে, এই সত্য ও জ্ঞানকে প্রচারের প্রধান বাঁধা হচ্ছে মানুষের একগুঁয়েমী,অহংকার এবং উদ্ধতপনা। দেখুন সূরা মুজাম্মিলের [ ৭৩ নং ] ভূমিকা।
সূরা ইক্রা বা পড় অথবা ঘোষণা কর – ৯৬
অথবা আলাক্ বা জমাট রক্ত পিন্ড -৯৬
১৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। পড় ! ৬২০৩। তোমার প্রভু এবং প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন, ৬২০৪
৬২০৩। ‘Iqraa’ অর্থ পড় বা আবৃত্তি করা, অথবা ঘোষণা কর। এখানে আল্লাহ্র বাণী। পৃথিবীর দৃষ্টিকোণ থেকে রাসুল (সা) ছিলেন অক্ষর জ্ঞানহীন। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানে তাঁর হৃদয় ছিলো পরিপূর্ণ। এখন সময় হয়েছে সেই জ্ঞানের বাণী পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য প্রচার করার।
৬২০৪। কোরাণের সর্বপ্রথম আয়াত হচ্ছে এই আয়াতটি যার মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় আল্লাহ্র নাম। এই ঘোষণা রাসুলের (সা) জন্য কোন ব্যক্তিগত লাভ ছিলো না বরং আল্লাহ্র বাণী প্রচারের জন্য তাঁকে অমানুষিক অত্যাচার,নির্যাতন, দুঃখ, কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। আল্লাহ্র বাণী পৃথিবীতে প্রেরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে ভুল পথ থেকে সঠিক পথের সন্ধান দান করা। কোরাণের এই প্রথম আয়াতটিতে আল্লাহ্র উল্লেখ করা হয়েছে মানুষের ‘প্রতিপালক’ রূপে। যার ফলে আল্লাহ্র সাথে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটে থাকে। মানুষের প্রতি আল্লাহ্র বাণী কোন বির্মূত ধ্যান ধারণা বা দার্শনিক তত্ব নয়। এ বাণী হচ্ছে বিশ্বস্রষ্টা ও প্রতিপালকের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ তাঁর সৃষ্টির সাথে, যে সৃষ্টিকে তিনি ভালোবাসেন এবং প্রতিপালন করেন। “তোমার ” শব্দটিকে দুভাবে ব্যাখ্যা করা যায় :
১) শব্দটি রাসুলের (সা ) জন্য প্রযোজ্য হয়েছে। জিবরাইল ফেরেশতার সাথে তার সরাসরি যোগাযোগ ঘটে ; যাকে আল্লাহ্ রাসুলের (সা) নিকট প্রেরণ করেন। অথবা
২) তোমার শব্দটি দ্বারা সম্পূর্ণ মানব জাতিকে বুঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 096.002
সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
Has created man from a clot (a piece of thick coagulated blood).
خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ
Khalaqa al-insana min AAalaqin
YUSUFALI: Created man, out of a (mere) clot of congealed blood:
PICKTHAL: Createth man from a clot.
SHAKIR: He created man from a clot.
KHALIFA: He created man from an embryo.
২। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড হতে ৬২০৫
৬২০৫। দেখুন [ ২৩ : ১৪ ] আয়াত। মানুষের জন্ম ইতিহাস অন্যান্য প্রাণীর জন্ম ইতিহাসের সমতুল্য যা অতি তুচ্ছ। কিন্তু অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার বুদ্ধিমত্তা, নৈতিক মূল্যবোধ, ও আত্মিক বিকাশের মাধ্যমে উচ্চতর ও মহত্তর পরিণতি। মানুষকে আল্লাহ্ জ্ঞান দান করেছেন যার সাহায্যে সে উত্তোরতর উন্নতির পথে আরোহণ করে।
আয়াতঃ 096.003
পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
Read! And your Lord is the Most Generous,
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
Iqra/ warabbuka al-akramu
YUSUFALI: Proclaim! And thy Lord is Most Bountiful,-
PICKTHAL: Read: And thy Lord is the Most Bounteous,
SHAKIR: Read and your Lord is Most Honorable,
KHALIFA: Read, and your Lord, Most Exalted.
৩। পড় ! এবং তোমার প্রভু সুন্দরতম, –
৪। যিনি কলমের [ব্যবহার ] শিক্ষা দিয়েছেন, ৬২০৬
৬২০৬। দেখুন [ ৬৮ : ১ ] আয়াতের টিকা নং ৫৫৯৩। এই সূরাতে তিনটি বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। ‘পড়া ‘ ‘কলম’ ও ‘জ্ঞান’। ‘জ্ঞান’ শব্দটিকে এ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে ”শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যাহা সে জানিত না।” কারণ “শিক্ষা দান করা ” ও “জ্ঞান” এই শব্দ দুটির মূল শব্দ একটাই। ‘কলম’ শব্দটি বই, লেখা, অধ্যয়ন,গবেষণা ইত্যাদির প্রতীক। ‘জ্ঞান ‘ শব্দটি ‘বিজ্ঞান’, প্রজ্ঞা, সাধারণ জ্ঞান, আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রতীক এবং পড় বা ‘ঘোষণা কর’ শব্দটির অপর অর্থ নিজে পড়া ও অন্যকে জানানো। প্রকৃত পক্ষে শব্দগুলি এতটাই গভীর অর্থবোধক এবং পরস্পর সম্পর্কযুক্ত যে এগুলির সঠিক অনুবাদ এক কথায় করা প্রায় অসম্ভব। পড়া, শিক্ষা দান করা, কলম জ্ঞান ঘোষণা করা এই শব্দগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত শব্দ যা অর্কেষ্ট্রার ঐক্যতানের মত; আলাদা করে দেখার অবসর নাই।