- সূরার নাম: সূরা বালাদ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা বালাদ
আয়াতঃ 090.001
আমি এই নগরীর শপথ করি
I swear by this city (Makkah);
لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ
La oqsimu bihatha albaladi
YUSUFALI: I do call to witness this City;-
PICKTHAL: Nay, I swear by this city –
SHAKIR: Nay! I swear by this city.
KHALIFA: I solemnly swear by this town.
==============
সূরা বালাদ বা নগর – ৯০
২০ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপঃ একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। এই সূরাতে মক্কা নগরীর সাথে রাসুলের (সা) সর্ম্পকের উল্লেখ করা হয়েছে। মক্কা নগরী রাসুলের (সা) জন্মের বহু পূর্ব থেকে পবিত্র নগরী হিসেবে পরিচিত। এই পবিত্র নগরীতে বিশ্বনবীর জন্ম হয়। তিনি এই নগরীর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যে পরিবারের হাতে পবিত্র কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়োজিত ছিলো। বিশ্ব নবী খুব অল্প বয়েসেই পিতা ও মাতা হারা এতিম শিশুতে পরিণত হন। শিশু বয়েস থেকেই তাঁর হৃদয় মন এক স্রষ্টার এবাদতে নিমগ্ন থাকতো। পরিণত বয়েসে তিনি পৌত্তলিক এবাদতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। ফলে তাঁর জন্মস্থানের অধিবাসীরা তাঁর প্রতি নির্যাতনের খড়গ চালনা করে। যার ফলে জন্মভূমি থেকে বিতারিত হয়ে ইয়াথরিব শহরে গমন করেন এবং সেখান থেকে ধর্ম প্রচার করেন। পরবর্তীতে এই শহরের নাম হয় ‘মদিনাত্ -উন-নবী ‘ বা নবীর শহর। সেই থেকে বর্তমানেও এই শহরকে বলা হয় মদিনা। মদিনাকে রাসুলের শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। কিন্তু রাসুলের (সা ) হৃদয় সর্বদা তাঁর মাতৃভূমির জন্য আকুতি করতো এবং তাঁর দায়িত্ব কর্তব্য সমাপন অন্তে তিনি পূণরায় তার মাতৃভূমিতে প্রত্যার্পন করেন বিজয়ী রূপে। তিনি কাবা শরীফকে পৌত্তলিক মুক্ত করেন এবং এক আল্লাহ্র উপাসনা চালু করেন। তিনি স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে মুসলিম বিশ্বে ন্যায়বান ও যোগ্য ব্যক্তির শাসন চালু করেন, সেই সাথে দাস মুক্তি, গরীবের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেন। অনুধাবন করার বিষয় হচ্ছে পবিত্র মক্কাকে কেন্দ্র করে কি অপূর্ব ন্যায়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। পৃথিবীর আধ্যাত্মিক ইতিহাসে কাবা হচ্ছে আধ্যাত্মিক মুক্তির প্রতীক স্বরূপ।
সূরা বালাদ বা নগর – ৯০
২০ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। শপথ করছি এই নগরের ৬১৩০।
৬১৩০। এখানে শপথ করা হয়েছে রাসুলের (সা) মাতৃভূমি মক্কা নগরী ও রাসুলের (সা) সম্পর্কের মধ্যে। মক্কা নগরীর পটভূমি এই সূরার ভূমিকাতে বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের মুক্তির প্রতীক হচ্ছে এই শহর। মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে সংগ্রাম করার জন্য। এটাই হচ্ছে শপথের বিষয়বস্তু [ আয়াত ৯০ : ৪ ]।
আয়াতঃ 090.002
এবং এই নগরীতে আপনার উপর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।
And you are free (from sin, to punish the enemies of Islâm on the Day of the conquest) in this city (Makkah) ,
وَأَنتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ
Waanta hillun bihatha albaladi
YUSUFALI: And thou art a freeman of this City;-
PICKTHAL: And thou art an indweller of this city –
SHAKIR: And you shall be made free from obligation in this city–
KHALIFA: The town where you live.
২। এবং [ শপথ ] তুমি এই নগরীর স্বাধীন অধিবাসী ৬১৩১।
৬১৩১। ‘Hillum’ অর্থ : অধিবাসী, যার আইনগত অধিকার আছে, ইত্যাদি। জন্মসূত্রে রাসুল মক্কা নগরীর অধিবাসী, সুতারাং অধিবাসীদের উচিত ছিলো তাঁকে সম্মান করা। তার পরিবর্তে মক্কাবাসীরা তাঁকে নির্যাতিত করে, তাঁকে এবং তাঁর অনুসারীদের হত্যার পরিকল্পনা করে। তিনি মদিনাতে নির্বাসিত হন। তবে সময়ের পরিক্রমায় তিনি বিজয়ী বেশে মক্কাতে প্রত্যার্পন করেন, কিন্তু মদিনা শহর পৃথিবীর বুকে রাসুলের (সা) কর্মস্থল এবং জীবন যাপনের পবিত্র স্থান হিসেবে চিরদিনের জন্য পৃথিবীতে অম্লান হয়ে রইল।
আয়াতঃ 090.003
শপথ জনকের ও যা জন্ম দেয়।
And by the begetter (i.e. Adam ) and that which he begot (i.e. his progeny);
وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ
Wawalidin wama walada
YUSUFALI: And (the mystic ties of) parent and child;-
PICKTHAL: And the begetter and that which he begat,
SHAKIR: And the begetter and whom he begot.
KHALIFA: The begetting and the begotten.
৩। এবং [ শপথ ] পিতা-মাতা ও সন্তানের [ রহস্যময় বন্ধনের ] ৬১৩২
৬১৩২। পিতা মাতা সন্তানকে প্রাণাধিক ভালোবাসে। পিতা সন্তানের সাফল্যে গর্বিত হয়। মাতা প্রচন্ড শারীরিক কষ্টের মধ্য দিয়ে সন্তান লাভ করে সত্য, তবে সন্তানকে বক্ষে ধারণ করার যে আনন্দ তার নিকট শারীরিক যন্ত্রণা তুচ্ছ। পিতা -মাতা ও সন্তানের মধ্যে যে বন্ধন সে বন্ধন পবিত্র ও স্নেহ ভালোবাসায় ধন্য। তবে অস্বাভাবিক ক্ষেত্রে অনেক সময়ে বিপরীত অবস্থাও বিরাজ করতে পারে,যখন পিতা মাতা ও সন্তানের মাঝে ভালোবাসার বন্ধনের পরির্বতে ঘৃণার সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। রাসুলের বেলাতে এরূপ অস্বাভাবিক ব্যাপারই ঘটেছিলো। মক্কার সবচেয়ে গৌরবান্বিত সন্তানকে মক্কা নগরী থেকে বের করে দেয় অত্যাচার, নির্যাতন করে। তবে তা ছিলো স্বল্প কালের জন্য। অন্যায়কারী, স্বৈরাচার, যারা অন্যায় ভাবে ক্ষমতা দখল করে ছিলো তাদের অপসারণের পরে মক্কা আবার তার গৌরবান্বিত সন্তানকে ফিরে পায়, তাঁকে স্বাগত জানায়। এর পর থেকে,মক্কা নগরী ইসলামের কেন্দ্র ভূমিরূপে তার বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে।