- বইয়ের নামঃ নাট্যগীতি
- লেখকের নামঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- প্রকাশনাঃ মুঠোবই
- বিভাগসমূহঃ রবীন্দ্রসংগীত
অভয় দাও তো বলি আমার
অভয় দাও তো বলি আমার
wish কী–
একটি ছটাক সোডার জলে
পাকী তিন পোয়া হুইস্কি ।।
অসুন্দরের পরম বেদনায় সুন্দরের আহ্বান
অসুন্দরের পরম বেদনায় সুন্দরের আহ্বান।
সূর্যরশ্মি কালো মেঘের ললাটে পরায় ইন্দ্রধনু, তার লজ্জাকে সান্ত্বনা দেবার তরে।
মর্তের অভিশাপে স্বর্গের করুণা যখন নামে তখনি তো সুন্দরের আবির্ভাব।
প্রিয়তমে, সেই করুণাই কি তোমার হৃদয়কে কাল মধুর করে নি।
রাগ: ?
তাল: ?
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): অগ্রহায়ণ, ১৩২৮
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): নভেম্বর, ১৯২১
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
এই গানটি “শাপমোচন” গ্রন্থে আছে
আঁধার শাখা উজল করি হরিত-পাতা-ঘোমটা পরি
আঁধার শাখা উজল করি হরিত-পাতা-ঘোমটা পরি
বিজন বনে, মালতীবালা, আছিস কেন ফুটিয়া ।।
শোনাতে তোরে মনের ব্যথা শুনিতে তোর মনের কথা
পাগল হয়ে মধুপ কভু আসে না হেথা ছুটিয়া ।।
মলয় তব প্রণয়-আশে ভ্রমে না হেথা আকুল শ্বাসে,
পায় না চাঁদ দেখিতে তোর শরমে-মাখা মুখানি ।
শিয়রে তোর বসিয়া থাকি মধুর স্বরে বনের পাখি
লভিয়া তোর সুরভিশ্বাস যায় না তোরে বাখানি ।।
আজ আসবে শ্যাম গোকুলে ফিরে
আজ আসবে শ্যাম গোকুলে ফিরে।
আবার বাজবে বাঁশি যমুনাতীরে
আমরা কী করব। কী বেশ ধরব।
কী মালা পড়ব। বাঁচব কি মরব সুখে।
কী তারে বলব ! কথা কি রবে মুখে।
শুধু তার মুখপানে চেয়ে চেয়ে
দাঁড়ায়ে ভাসব নয়ননীরে।।
আজি উন্মাদ মধুনিশি ওগো চৈত্রনিশীথশশী
আজি উন্মাদ মধুনিশি ওগো চৈত্রনিশীথশশী।
তুমি এ বিপুল ধরণীর পানে কী দেখিছ একা বসি
চৈত্রনিশীথশশী।।
কত নদীতীরে কত মন্দিরে কত বাতায়নতলে
কত কানাকানি, মন-জানাজানি সাধাসাধি কত ছলে।
শাখা-প্রশাখার দ্বার-জানালার আড়ালে আড়ালে পশি
কত সুখদুখ কত কৌতুক দেখিতেছ একা বসি
চৈত্রনিশীথশশী।।
মোরে দেখো চাহি— কেহ কোথা নাহি, শূন্যভবনছাদে
নৈশ পবন কাঁদে।
তোমারি মতন একাকী আপনি চাহিয়া রয়েছি বসি
চৈত্রনিশীথশশী।।
আমরা বসব তোমার সনে
আমরা বসব তোমার সনে।–
তোমার শরিক হব রাজার রাজা,
তোমার আধেক সিংহাসনে।।
তোমার দ্বারী মোদের করেছে শির নত –
তারা জানে না যে মোদের গরব কত ।
তাই বাহির হতে তোমায় ডাকি,
তুমি ডেকে লও গো আপন জনে ।।
আমাদের সখীরে কে নিয়ে যাবে রে
আমাদের সখীরে কে নিয়ে যাবে রে—
তারে কেড়ে নেব, ছেড়ে দেব না—না—না।
কে জানে কোথা হতে কে এসেছে।
কেন সে মোদের সখী নিতে আসে—দেব’ না।।
সখীরা পথে গিয়ে দাঁড়াব, হাতে তার ফুলের বাঁধন জড়াব,
বেঁধে তায় রেখে দেব’ কুসুমবনে— সখীরে নিয়ে যেতে দেব’ না।।
আমি কেবল ফুল জোগাব
আমি কেবল ফুল জোগাব
তোমার দুটি রাঙা হাতে ।
বুদ্ধি আমার খেলে নাকো
পাহারা বা মন্ত্রণাতে ।।
আর কি আমি ছাড়ব তোরে
আর কি আমি ছাড়ব তোরে ।
মন দিয়ে মন নাই বা পেলেম,
জোর ক’রে রাখিব ধ’রে ।
শূন্য করে হৃদয়পুরী মন যদি করিলে চুরি
তুমিই তবে থাকো সেথায় শূন্য হৃদয় পূর্ণ ক’রে ।।
রাগ: তোড়ি
তাল: অজ্ঞাত
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1289
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1882
এই গানটি “বউ-ঠাকুরানীর হাট” গ্রন্থে আছে
আয় রে আয় রে সাঁঝের বা, লতাটিরে দুলিয়ে যা
আয় রে আয় রে সাঁঝের বা, লতাটিরে দুলিয়ে যা—
ফুলের গন্ধ দেব তোরে আঁচলটি তোর ভ’রে ভ’রে ।।
আয় রে আয় রে মধুকর, ডানা দিয়ে বাতাস কর্—
ভোরের বেলা গুন্গুনিয়ে ফুলের মধু যাবি নিয়ে ।।
আয় রে চাঁদের আলো আয়, হাত বুলিয়ে দে রে গায়—
পাতার কোলে মাথা থুয়ে ঘুমিয়ে পড়বি শুয়ে শুয়ে ।
পাখি রে, তুই কোস্ নে কথা— ওই যে ঘুমিয়ে প’ল লতা ।।
———
রাগ: গৌড়সারং
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1290
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1884
ইচ্ছে ! –ইচ্ছে
ইচ্ছে ! –ইচ্ছে !
সেই তো ভাঙছে, সেই তো গড়ছে,
সেই তো দিচ্ছে নিচ্ছে।।
সেই তো আঘাত করছে তলায়, সেই তো বাঁধন ছিঁড়ে পালায়–
বাঁধন পরতে সেই তো আবার ফিরছে।।
রাগ: আড়ানা
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1340
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1933
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
এই গানটি “তাসের দেশ” গ্রন্থে আছে
এই তো ভরা হল ফুলে ফুলে ফুলের ডালা
এই তো ভরা হল ফুলে ফুলে ফুলের ডালা।
ভরা হল– কে নিবি কে নিবি গো, গাঁথিবি বরণমালা।
চম্পা চামেলি সেঁউতি বেলি
দেখে যা সাজি আজি রেখেছি মেলি–
নবমালতীগন্ধ-ঢালা।।
বনের মাধুরী হরণ করো তরুণ আপন দেহে।
নববধূ, মিলনশুভলগন-রাত্রে লও গো বাসরগেহে–
উপবনের সৌরভভাষা,
রসতৃষিত মধুপের আশা।
রাত্রিজাগর রজনীগন্ধা–
করবী রূপসীর অলকানন্দা–
গোলাপে গোলাপে মিলিয়া মিলিয়া রচিবে মিলনের পালা।।
একদা প্রাতে কুঞ্জতলে অন্ধ বালিকা
একদা প্রাতে কুঞ্জতলে অন্ধ বালিকা
পত্রপুটে আনিয়া দিল পুষ্পমালিকা।।
কণ্ঠে পরি অশ্রুজল ভরিল নয়নে,
বক্ষে লয়ে চুমিনু তার স্নিগ্ধ বয়নে।।
কহিনু তারে, ‘অন্ধকারে দাঁড়ায়ে রমণী,
কী ধন তুমি করিছ দান না জানো আপনি।
পুষ্পসম অন্ধ তুমি অন্ধ বালিকা,
দেখ নি নিজে মোহন কী যে তোমার মালিকা।’