অ্যালিসিয়া কোম্বে মন্তব্য করে–সত্যি অত ভালো কাজ আমরা করতে পারতাম। মনে হচ্ছে এবার বোধ হয় পুতুলটাকে বিদায় দিতেই হবে।
-তুমি কি সত্যি তাই চাইছ।
অ্যালিসিয়া অধৈর্যস্বরে বলে ওঠে–আমি ঠিক জানি না, সত্যি সত্যি কী ঘটতে চলেছে।
পরের দিন সকাল বেলা সাইবিল ওয়ার্ক রুমে প্রবেশ করে দেখল সিটিং রুমটার বাইরে তালা মারা।
–মিস কোম্বে তোমার কাছে কী চাবিটা আছে?
–গতকাল তালা বন্ধ করেছিলে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠে-হা, আমি তো তালা বন্ধ করেছিলাম। দেখা যাক কী হয়।
-তুমি কী বলতে চাইছ?
–আমি ওই ঘরটার আশা ত্যাগ করেছি। ওই ঘরটা এখন থেকে পুতুলের ঘর। আমাদের দুটো ঘর নিয়ে কী হবে? এই একটা ঘরের মধ্যে আমরা সব কাজ করতে পারি।
–কিন্তু ওটাতো তোমার নিজস্ব সিটিং রুম। ওটার আর কোন প্রয়োজন নেই। আমার কাছে? আমার একটা ভারী সুন্দর বেডরুম আছে। আমি সেখানে বসার ব্যবস্থা করতে পারব।
–তার মানে তুমি কী আর কখনো সিটিং রুমে যাবে না।
সাইবিল অবাক হয়ে প্রশ্ন করে। কিন্তু এটাই আমার স্থির সিদ্ধান্ত।
কিন্তু ওটা পরিষ্কার করবে? না হলে সে একেবারে বিশ্রী নোংরা হয়ে আছে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলেন–দেখা যাক। যদি একটা পুতুল ওখানে থেকে আনন্দ পায় তাই যাক। ও না হয় ঘরটার ওপর দখলদারি কায়েম করল। দেখো ও নিজেই ঘরটা পরিষ্কার করবে। ও আমাদের ঘৃণা করে তুমি সেটা জানতো। সাইবিল এবার অবাক হয়ে জানতে চায়–কী বলছ তুমি? এটা কি কোন বিশ্বাসযোগ্য কথা।
হ্যাঁ, তুমি কখনো ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখেছ? সেখান থেকে ঘৃণার দৃষ্টি ঝরে পড়ছে।
সাইবিল অর্থপূর্ণভাবে জবাব দেয়–হ্যাঁ, আমি মাঝে মধ্যেই ওর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যাই। ও বোধ হয় সত্যি আমাদের ঘৃণা করে এবং ও একা থাকতেই ভালবাসে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে-ওটা একটা অদ্ভুত ছোট্ট পদার্থ। এখন জিজ্ঞাসা করি, ও আর অসুবিধে করবে না।
ঘটনাগুলো স্বাভাবিকভাবেই চালানো।
অ্যালিসিয়া কোম্বে তার সহকর্মীদের কাছে জানিয়ে দিয়েছে সে এখন থেকে আর সিটিং রুমটা ব্যবহার করবে না। এতগুলো ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুব একটা সহজ কাজ নয়।
কিন্তু মেয়েরা কি এভাবে কাজ করতে পারবে? একজন তো মন্তব্য করেই বসলেন –মিস কোম্বের মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে? উনি এরকম আচরণ করছেন কেন জানি না। সবকিছু ভুলে যাচ্ছেন। মনে হয় উনি বোধ হয় পুতুলটার হাত থেকে নিষ্কৃতি চাইছেন।
আর একজন বলে বসে–কিন্তু ওনার ওই স্বভাব কখনো সফল হবে, উনি বোধ হয়। আর সফল হবেন কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছে।
অ্যালিসিয়া তার চেয়ারে বসে আছে। চিন্তামগ্ন সে। তারপর নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে–আমি কি ঠিক কাজ করলাম। সইবিল কি আমাকে সাহায্য করবে? সাইবিল এবং মিস কোম্বে যদি আমাকে সাহায্য করে তাহলে আমার কোন সমস্যা থাকবে না। কিন্তু এই ব্যাপারটার শেষে কী আছে তাতে আমি জানি না।
দেখতে দেখতে তিনটি সপ্তাহ কেটে গেল–সাইবিল অ্যালিসিয়া কোম্বেকে বলল আমাদের তো একবার ঘরটা দেখে আসা দরকার। কেন?
আমি বলতে চাইছি কি ওর অবস্থা কেমন সেটা দেখতে হবে। আমার মনে হয় ওই ঘরটা এখন খুব নোংরা হয়ে গেছে। একবার ধুলো পরিষ্কার করা দরকার। ঝাট দিয়ে ধুলো বাইরে ফেলে তারপর না হয় আবার তালা বন্ধ করে দেব।
-ওটা এখন বন্ধই থাক। কি দরকার পুতুলটাকে রাগিয়ে দিয়ে? অ্যালিসিয়া কোষে মন্তব্য করে। এর পর সাইবিল বলে ওঠে–ঠিক আছে। তুমি দেখছি আমার থেকে বেশী কুসংস্কারচ্ছন্ন হয়ে গেছ।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে-হা, নিজের মনের উপর এখন আমার কোন অস্তিত্ব নেই। আমি এসব ব্যাপারগুলো বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছি। আমি কীভাবে যে দিন কাটাব তোমাকে বোঝাতে পারব না। আমি আর কখনো ঘরটাতে ঢুকতে চাইছি না।
সাইবিল এবার জোরের সঙ্গে বলল, আমি ওখানে যাবই? তুমি কি আমাকে চাবিটা দেবে?
তুমি কেন জেনেশুনে এত বড় একটা ভুল করতে চলেছ? তোমার আচরণটা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। মন্তব্য করে বসে অ্যালিসিয়া কোম্বে।
-ঠিক আছে, কাজটা আমার উপরই ছেড়ে দাও। দেখব পুতুলটা ওখানে কী করছে? ওখানে ওকে একা থাকতে দাও না। অ্যালিসিয়ার অনুরোধ, আমরা না হয় ওই ঘরটার উপর থেকে আমাদের সমস্ত সত্ত্ব ত্যাগ করলাম। আপনি বোধ হয়–পুতুলটার উপর রসিকতা করছেন।
ও খুশী বলেই তো ভালো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে অ্যালিসিয়া বলে ওঠে কী বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করছি তাই জানি না।
হ্যাঁ, আমি এই ব্যাপারে মাথা ঘামিয়ে ফেলেছি–না। তুমি কথা বলছ। আমি উত্তর দিচ্ছি। সময় চলে যাচ্ছে। এখন আমাকে চাবিটা দাও।
ঠিক আছে ঠিক আছে।
আমার মনে হয় তুমি বোধ হয় ভয় পাচ্ছ। আমি এখন দেখতে চাইছি পরেরটা কেমন আছে।
শেষ অবধি সাইবিল দরজার তালা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ল। সে বলে উঠল-কী আশ্চর্য, ঘরটা কি পরিচ্ছন্ন বলে মনে হচ্ছে না তোমার?
অ্যালিসিয়া উঁকি মেরে বলে–সত্যি তাই? কিন্তু পরিষ্কার করল কে?
-তুমি ঠিক বলছো তো?
আমি হলফ করে বলতে পারি—
–সাইবিল বলে–ওই তো মহারানী ওখানে বসে আছেন, পুতুলটা সোফার উপর বসে। সে কিন্তু তার গতানুগতিকায় বসে নেই। মনে হচ্ছে, সে বোধ হয় হাত-পা ছড়িয়ে আরাম করে বসেছে।
তার পিঠে একটা বালিশ রয়েছে। বালিশের উপর সে মাথাটা এলিয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে কারোর জন্য অপেক্ষা করছে।