অ্যালিসিয়া বলে ওঠে। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।
তার মতে বাসে পৌঁছে গেলে এসব ব্যাপার নিয়ে ভাববে।
আমার মনে হল যা, পুতুলটা সত্যি সত্যি নিজের উপর বিরক্ত হয়ে উঠেছে। পুতুলটার হাবভাব দেখে তাই মনে হয়েছে।
–সাইবিল এবং অ্যালিসিয়া কোম্বে আবার দরজাটা ভালোভাবে বন্ধ করে দিল।
আমার সব মনে আছে। সাইবিল বলল, তোমার মনে আছে? আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে আমাদের সাথে কেউ মজা করছে। কিন্তু কেন ধরনটা আমি বুঝতে পারছি না।
তোমার কি মনে হয় সকালবেলা পুতুলটাকে তুমি ডেক্সের উপর দেখবে?
হ্যারিস জানতে চাইলেন। হা সাইবিল বলে আমি বুঝতে পারছি।
তবে এই অশ্রুমান সত্যি হয় না। পুতুলটাকে আর ডেস্কের উপর বসিয়ো না। সেটা বসে পড়েছে।
জানলার ওপর। জানলার দিকে তাকিয়ে আছে। অদ্ভুত লাগছে তার এই গুণ। অবশ্য কেউ যদি তাকে ওখানে না বসিয়ে দেয়।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠে। এবার কিন্তু ব্যাপারটা আমাকে ভাবাচ্ছে। সেদিন মনে হয় চা খেতে খেতে, তারপর বলে আমি বুঝতে পারছি না কিভাবে পুতুলটা নিজেই সচল হয়ে উঠছে?
সত্যি ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে হবে। এই সমস্যার হাত থেকে আমরা কী করে মুক্তি পাব। একটা অনড় পুতুল তার অবস্থান পরিবর্তন করছে কী করে।
তখন থেকে আরো নতুন নতুন ঘটনা যাতে দেখা গেল, এতদিন পর্যন্ত রাতের অন্ধকারে পুতুলটা সজীব ও সচল হয়ে উঠেছিল।
এখন কিন্তু দিনের আলোতে সেটার জায়গা পরিবর্তন। হঠাৎ তাকে দেখা গেল সে। লিভিং রুমে বসে আছে। কয়েক মুহূর্তের পর তাকে দেখা গেল অন্য কোন জায়গায়। কখনও তার কোন জায়গায়। পড়ছে পা ছড়িয়ে কখনও চেয়ারে হাতলের উপর চুপটি করে বসে, কখনও বিভিন্ন চেয়ারে ঘুরিয়ে বসছে। কখনও আবার উঠে যাচ্ছে জানলার উপর উঠে যাচ্ছে জানলার উপর পিটপিট করে দেখছে চলমান জীবন। আবার কখনো ডেস্কে কিরে আসছে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে। মন্তব্য করে ইচ্ছেমত খুঁজে বেড়াচ্ছে আমার মনে হয় পুতুলটা বুঝি খুবই আনন্দ পেয়েছে।
তারা কী করে এই সমস্যার সমাধান করবে বুঝতে পারবে না। দৈনন্দিন কাজকর্ম মাথায় উঠে গেছে। ভেলভেটের টুকরোগুলো চারপাশে জড়ানো ছিটানো অবস্থায় পড়ে আছে।
সেগুলোকে একসাথে রঙিন করে তোলার দরকার। যা হলে ঠিক সময়ের প্রস্তুতিতে দেবে কী করে? এইরকম চলতে থাকলে ব্যবসা একেবারে লাটে উঠে যাবে।
শেষ পর্যন্ত অ্যালিসিয়া কোম্বে একটা স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। সে বলল এবার মনে হচ্ছে পুতুলটার কাছ থেকে আমাদের নিষ্কৃতি নিতে হবে। ব্যাপারটাকে শেষ করে দিতে হবে। তারই প্রস্তাবে সাইবিল অবাক হয়ে গেল। বলল সে সত্যি সত্যি তুমি কি।
কোথায় যেন একটুকরো বিষণ্ণতার সুর।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠেন–হ্যাঁ। ওকে আমরা আগুনে ফেলে ঘি দিয়ে মাখব।
এখানে আগুন কোথায় পাওয়া যাবে বলো তো?
-ও একটা কাহিনী, ওকে পুড়িয়ে মারতেই হবে।
একটু চিন্তিত হয়ে সে আবার মন্তব্য করে–অযথা ওকে ছুঁড়ে ডাস্টবিনে দিয়ে এলে হয়।
সাইবিল বলে ওঠে
-না এটা করা বোধ হয় ঠিক হবে না। ডাস্টবিন থেকে কেউ ওকে নিয়ে যাবে আবার সেখানে বসিয়ে দিয়ে যাবে। তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না।
অ্যালিসিয়া কোম্বে অনেক ভাবনাচিন্তা করে বলে ওঠে–তাহলে আমরা কি ওকে উপহার হিসাবে কোথাও পাঠাতে পারি না?
সোসাইটি আমার কাছে পুতুলের জন্য বায়না করে, শুধু কি তাই? ওকে কুমস ডে তে পাঠিয়ে দিলে কেমন হয়? আমার মনে হচ্ছে এটাই বোধ হয় ওর হাত থেকে বাঁচবার ভালো উপায়।
সাইবিল বলে–আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। কাজটা করতে গেলে আমরা ঠিকমতা পারব তো?
-তুমি কেন এইকথা বলছ সাইবিল বলে ওঠে। আমার যেন জানি না, মনে হচ্ছে। পুতুলটা আবার এখানে চলে আসবে।
–কেন একথা মনে হচ্ছে তোমার?
ঠিক বলতে পার–ঘরে ফেরা পায়রার মত। হ্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ? তাহলে? তাহলে ওর হাত থেকে আমরা কী কোনদিন মুক্তি পাব না।
অ্যালিসিয়া কোম্বে জানতে চায়–পেতেই হবে। ও হচ্ছে একটা জীবন্ত শয়তানি। বারোমাস ও আমাদের এভাবে জ্বালাবে। তাই আবার হয় নাকি।
সাইবিল বলে ওঠে। আমার সমস্ত শরীরের ভিতর একটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পুতুলটা আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী এটা বলতে পারি–তুমি আমি দুজনে মিলে ওকে সরাতে পারব না।
–আমি কি করব?
এসো ঐসব উল্টোপাল্টা কথা কেন বলছ? তুমি একবার পুতুলটার মধ্যে থেকে সবকিছু বের করো। পুতুলটাও চাইছে আমাদের শেষ করতে। কিন্তু আমরা তো ওর কোনো ক্ষতি করিনি। এটা বোধ হয় এর প্রতিহিংসার একটা বড় উদাহরণ।
-তুমি কী বলছ?
অ্যালিসিয়া কোম্বে সন্তর্পণে চারিদিকে তাকায়। কী বলছ তুমি? দেখছ রংগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। পুতুলটা কি এখানে ছিল? আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। তার মধ্যে জেগে উঠেছে একটা অসহনীয়তা। ও কেন এখানে এল?
তার আমি করব?
দেখ মিসেসের ব্যাপারটা কেমন যেন হয়ে গেছে।
সেকি ভয় পেয়েছে? সে বোধ হয় পুতুলটার সংস্পর্শে আসতে চাইছে না।
ওর মধ্যে কেমন একটা ঘৃণার মনোভাব রয়েছে।
অ্যালিসিয়ার কণ্ঠস্বর আরো তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে—
সাইবিল বলতো এখন আমরা কী করব? তুমি তো সব ব্যাপারে আমাকে সৎ পরামর্শ দিয়েছ। এখন এই পুতুলটার হাত থেকে কীভাবে নিষ্কৃতি পাব বলতো? সাইবিল স্বীকার করে–সত্য কথা বলতে কী আমি মন রাখতে পারছি না। পুতুলটা কী এভাবে আমাদের মেরে ফেলতে চাইছে।