স্টিফেন ভ্যালি কী বলেছেন। এইভাবে কথা বললে আমরা হয়ত একদিন পাগল হয়ে যাবো।
আমরা অন্য কাজে লেগে পড়ি, মনে হয় দশ মিনিটের মধ্যে সব এখানে আসবেন, সব ঠিকঠাক করে পাঠাতে হবে।
তুমি কি আমাকে একটু সাহায্য করবে?
মিসেস কক্স, মিসেস মার্গারেট, কী হয়েছে বল। সাইবিল বলতে চায়।
সাইবিল, যখন টেবিলের উপর ঝুঁকে পড়ে একটা কাজ করছে। কাপড়গুলোকে গুছিয়ে টুকরো টুকরো করছে। মিসেস কক্স, আবার সেই পুতুলটার খবর কি পেয়েছে। আমি তাকে গতকাল পোশাক পরিয়েছিলাম। ডেস্কের উপর পুতুলটা বসেছে এরকম ঘটনা কেন ঘটল বুঝতে পারছি না।
এই কথা শুনে সাইবিলের কাছে একটু সরে গেল। সে বেশ ভয় পেয়েছে। সে রাগতস্বরে বলে ওঠে। আমাকে এ নিয়ে বিরক্ত করো না। তুমি কি পুতুলটা সম্পর্কে আবার কোন গালগল্প শোনাতে চাও নাকি?
পুতুলটা কিন্তু ডেস্কের উপর উঠে বসেছে। সাইবিল এগিয়ে গেল। সিটিংরুমে পৌঁছে গেল, দেখতে পেল সত্যি সত্যি ডেস্কে পুতুলটা বসে আছে যেখানে গতকাল সাইবিল তাকে বসিয়ে দিয়েছিল।
সাইবিল উচ্চস্বরে কথা বলে, এখানে তুমি বসবে তাই না?
কী আশ্চর্য।
পুতুলটা কোন প্রত্যুত্তর দিল না। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
সে পুতুলটাকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। তাকে ডেস্কের ওপর বসিয়ে দেয়।
সাইবিল বলে এটা তোমার জায়গা। তুমি এখানেই থাকবে।
–সে পায়ে হেঁটে অন্য ঘরে চলে যায়।
মিস কোম্বে বলে ওঠেন, হ্যাঁ সাইবিল, বোধ হয় আমাদের সঙ্গে কেউ মজা করছে। দেখ পুতুলটা আবার ডেস্কে উঠে বসেছে।
কি আমাদের সঙ্গে এই খেলা খেলবে?
আমার মনে হয় যে তিনটে মেয়ে ওপরে কাজ করছে। তাদের কেউ আমাদের বোকা বানাতে চায়।
সাইবিল অনেক ভেবেচিন্তে মন্তব্য করে। এরা ভাবছে বোধ হয় এরা আমাদের মনে ভয় ধরাবে, কিন্তু তারা কখন যে এখানে এল। সেটাই বুঝতে পারছি না।
কাকে তুমি অপরাধী বলে মনে কর?
মার্গারেটের দিকে না। না, আমার মনে হয় মার্গারেট এই কাজটা করবে না। সে একটি হাসিখুশি মেয়ে তার মধ্যে এত শয়তানি বুদ্ধি নেই।
যখন সে আমার কাছে সবকিছু স্বীকার করেছে। তার কথা বলার মধ্যে একটা আশ্চর্য অঙ্গীকার লুকিয়েছিল। আমার মনে হয় সবসময় হিহি করে হাসতে থাকা মেয়েটা এই কাজটা করেছে।
সাইবিল বলে ওঠে, ব্যাপারটা বোকা বোকা বুদ্ধি এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা শেষ সংকেত উঁচিয়ে দেওয়া উচিত।
তাহলে তুমি কী করতে চাও?
দেখই না, আমি কী করি সাইবিল অর্থপূর্ণভাবে বলে।
ওই রাতে যাবার সময় সাইবিল একটা নতুন কাজ করল। সে সিটিং রুমটাকে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে দিল।
সে বলল, আমি দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে গেলাম। চাবিটা আমার কাছে থাকল। অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠে। ঠিক আছে দেখা যাক। এইভাবে তুমি ওদের মজা করা আটকাতে পার কিনা। তুমি কি ভাবছ আমি ভুললামনা। তুমি নিজেই নিজের কাজগুলো কর? আমি ডেস্কে পুতুলটাকে বসাব সে আমাকে কাজগুলো করে দেবে।
এটা একটা সুন্দর ব্যাপার।
তারপর সবকিছু ভুলে যাব?
সাইবিল বলে হ্যাঁ তার একটা সম্ভাবনা আছে বৈকি।
এখন দেখা যাক আজ রাতে যেন আর কোন অঘটন না ঘটে।
সকালবেলা সাইদুলের ঠোঁট একেবারে শুকিয়ে গেছে।
সে তখন ইচ্ছে করি ওই ওয়ার্কশপের মধ্যে তারপর মিটিং রুমের দরজাটা খুলে দিল। এগিয়ে গেল সামনের দিকে।
শ্রীমতি গোমসকে দেখা গেল একহাতে ছাতা। অন্যহাতে ডাস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে-বোধ হয় এখন এই দরজা খোলার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে।
সাইবিল বলল, আমরা কী দেখব বলতো?
সে নিঃশ্বাস চেপে ভেতরে চলে গেল। দেখতে পেল পুতুলটা ডেস্কের উপর বসে আছে। মিসেস গোমস বলে উঠল–এই তো, মিসেস, তোমাকে এত বিবর্ণ দেখাচ্ছে কেন?
মনে হচ্ছে তোমার কথায় অস্পষ্টতা রয়েছে। রাতে ঘুম হয়নি? আমি কি মিস কোম্বেকে ডেকে আনব? তোমাকে ঘুমের ওষুধ দেবে?
সাইবিল নিজেকে শুধরে নিয়ে বলল না। আমি ঠিক আছি। সে পায়ে পায়ে পুতুলটার দিকে যেতে লাগল, তাকে আলতো করে তুলে ধরে, তাকে হাতে নিয়ে ঘরের ওই প্রান্তে চলে যায়।
মিসেস গোমস বলেন, আমার সঙ্গে আবার কেউ শয়তানির খেলা খেলছে।
সাইবিল বলে ওঠে। আমি তো বুঝতে পারছি না এই ঘটনাটা ঘটল কী করে।
কিন্তু আমি তো দরজাটা বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে গেছিলাম। তাহলে কারা এই তালাটা ভেঙ্গেছে।
এই ব্যাপারটার মধ্যে কেমন একটা রহস্য আছে বলে আমার মনে হচ্ছে।
এবার মিসেস গোমস বলে ওঠেন, মনে হচ্ছে চাবি কারোর কাছে একটা আছে। সেই চাবিটা দিয়ে এই শয়তানের কাজটা করেছে।
-সাইবিল বলে না তা কখনই সম্ভব নয় যে আর নকল চাবি তৈরি করবে?
এটা হল একটা পুরনো তালা? এরকম তো এখন আর পাওয়াই যায় না।
তাহলে অন্য কোন চাবি এই তালার মধ্যে ঢুকে গেছে, দেখতে এই ব্যাপারে অনুষ্ঠান করা দরকার।
এবার সবগুলো চাবি চেষ্টা করা হল, কিন্তু কোন চাবি দিয়েই ওই তালাটা খোলা গেল না।
সাইবিল শেষ পর্যন্ত বলে ওঠে ব্যাপারটা সত্যি রহস্যজনক মিস কোম্বে।
তখন তারা আসরের পিছনে বসেছিল।
অ্যালিসিয়া কোম্বেকে দেখে মনে হচ্ছে সে বোধ হয় একটা সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে।
সে বলল আমরা ছোট্ট একটা বিষয়কে অকারণে বড় করে দেখছি। আমাদের উচিত এই ব্যাপারটা এখন ভুলে যাওয়া কেউ যদি আমাদের পেছনে রাখতে চায় তাকে রাখতে দাও। ধীরে ধীরে সে নিজেকে ক্লান্ত হয়ে এই কাজটা ছেড়ে দেবে, সাইবিল জানতে চায় এই বিষয়টা কপি প্রিন্ট হয়ে চলবে বলে তোমার মনে হয়? বলতো?