সাইবিল বলে ওঠে, এখানে তাকাও, তার গলার স্বর ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে।
হ্যাঁ।
ঠাট্টাটা খুবই ভালো, কিন্তু আমি জানতে চাইছি আসল অপরাধী কে?
এবার তিনজন মহিলার গলা শুকিয়ে গেছে।
আমরা আগেই বলেছি, মিসেস কক্স, আমরা কেউ এই কাজটা করিনি। মার্লিন আমরা করেছি কি?
মার্লিন হেসে বলে না আমি তো করিনি, পিলিও করেনি। মার্গারেট যখন না বলছে তখন তাকে অবিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। তাহলে ম্যাডাম আমাদের কেউ তো এই কাজটা করেনি। আপনি শুধু শুধু আমাদের বকছেন।
ফেলোস ব্রাউন বলে ওঠেন।
-আমি কি এটা করতে পারি, মিসেস কক্স?
আমি কখনো এই ধরণের ছেলেমানুষি খেলা খেলি না।
এবার মার্লিন বলে ওঠে। এটা বোধ হয় মিসেস গোমস এর কাজ। এখন ভয় পেয়ে সত্যি কথাটা চেপে যাচ্ছে।
সাইবিল মাথা নেড়ে বলল, না মিসেস গোমস-এ কাজ কখনো করবে না।
তার সম্পর্কে আমি যা জানি, তিনি এইসব ছোট খাট্টো ব্যাপারে মাথা ঘামান না।
মিস এরোসপেক্ট বলে ওঠে। তার মানে পুতুলটা নিজেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে গিয়ে ওখানে বসে গেছে তাই তো?
সাইবিল বলে ওঠে। এভাবে ঠাট্টা করো না।
মিস উম্বে তাকে ডেস্ক থেকে নিয়ে গিয়েছিল এবং সোফাতে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল, অ্যালিসিয়া আবার বলতে থাকে। তার মানে আমি দুষ্টামি করে তাকে বসিয়েছি?
না এই ঘটনাটার মধ্যে আনন্দের কি আছে? বরং এতে মনের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরী হয়। তাই নয় কি?
–আমি তো আপনাকে আবার বলছি কক্স মার্গারেট বলে ওঠে। আপনি কেন আমাদের দিয়ে মিথ্যে কথা বলাতে চাইছেন। আমরা এই ব্যাপারটার বিন্দু বিসর্গ কিছুই জানি না।
সাইবিল বলে ওঠে। আমি দুঃখিত আমি তোমাদের মন নষ্ট করছি। অপরাধী তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে আছে। পুতুলটা তো নিজে নিজে হেঁটে এখানে–হ্যাঁ আমার তাই মানে হচ্ছে।
এটা বোধ হয়। পুতুলটার নিজের কাজ হি হি
মার্লিন হাসতে হাসতে জবাব দেয়। আমাদের মনে হয় এই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা বন্ধ করা উচিত।
সে বলে ওঠে–হ্যাঁ।
আমরা এসব আজে বাজে ব্যাপারে মাথা ঘামাই না।
তারপর সে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকে।
মিসেস কোম্বে দেখে মনে হল সে বোধ হয় আনন্দে আছে। সে গান গাইছে। চারপাশে তাকাচ্ছে।
সে বলল, আমার চশমাটা আবার হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু এটা আমার কাছে খুব একটা গুরুত্বপুর্ণ ব্যাপার নয়। এই মুহূর্তে আমি আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবছি। একটা ছোট সমস্যা দেখা দিয়েছে। দেখ, আমি কি কম নই। বারবার কেন চশমাটা হারায় বলত? আর একটা চশমা করে রাখতে হবে। তুমি কি সেটা দেখেছে? সাইবিল বলে আমি দেখেছি।
কোথায় আছে। একটু আগে তো এটা আমার হাতে ছিল?
-হ্যাঁ আমি চশমাটা নিয়েই ঘরের ও প্রান্তে গিয়েছিলাম, তখন তুমি ওপারে বলে গেলে আমি ওপারে বলে গেলে আমি সেখানে?
সে বেরিয়ে গেল অন্য ঘরের দিকে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে উঠলেন একি কথা আমি তো বুঝতে পারছি না।
তো কাজ করছিলাম। আমার চোখের যা অবস্থা চশমা ছাড়া একেবারেই পড়তে পারব না।
আমি দেখছি।
ওই কোণ থেকে তোমার দ্বিতীয় চশমাটা নিয়ে আসব?
সাইবিল জানতে চায়।
না আমার কাছে আর কোন চশমা নেই উদ্বিগ্নভাবে মাথা নাড়ে অ্যালিসিয়া কোম্বে!
ওটা আমি কোথাও ফেলে এসেছি। আমি গতকাল দুপুরে লাঞ্চ খেতে গিয়েছিলাম, সেখানে দুতিনটে দোকানে গিয়েছিলাম। মনে হয় ভুলে সেখানে হয়ত রেখে এসেছি।
ডিয়ার সাইবিল বলে ওঠে। তোমার উচিত তিনটে চশমা সঙ্গে রাখা। না। হলে এই অবস্থা হবে।
হ্যাঁ, তুমি একদম ঠিকই বলেছে। অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠেন, সারাজীবন ধরে আমাকে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমার মনে হয় একটি ছাত্রী ভালোভাবে রপ্ত। সে আর তার প্রতি কখনো অমনোযোগী হতে পারবে না।
সাইবিল বলে কোথায় সেটা রেখেছ? ভালো করে ভেবে দেখ। তুমি কি এই দুটো ঘর ছাড়া অন্য কোথাও গিয়েছিলে?
তাহলে?
আমার তো মনে হয় তুমি চশমাটা ভুল করে বোধ হয় সিটিং রুমে রেখে এসেছ। সাইবিল এগিয়ে যায়। চারপাশে ভালো করে খোঁজে। শেষ পর্যন্ত সে ভাবে দেখা যাক তো পুতুলটা কোন দুষ্টুমি করেছে কিনা।
সে পায়ে পায়ে পুতুলটার দিকে এগিয়ে যায়। পুতুলটা এক সোফা থেকে সরিয়ে দেয়।
আমি চশমাটা এখানে পেয়েছি। কোথায় পেলে সাইবিল?
এই অত্যন্ত দামী পুতুলটার তলায় আমার মনে যা তুমি বোধ হয় ভুল করে চশমাটা এখানে রেখে পুতুলটা তার ওপর বসিয়েছ।
না না আমি ঈশ্বরের শপথ করে বলছি। একাজ আমি কখনো করতে পারি না।
তাহলে?
এবার সাইবিলের আচরণে ঘটেছে এক অদ্ভুত আতঙ্ক মিশ্রিত বিশ্বাস। সে বলতে থাকে তুমি কি ভাবছ পুতুলটা তোমার সঙ্গে ঠাট্টা করবে বলে চশমাটা লুকিয়ে রেখেছিল?
অ্যালিসিয়া চিৎকার করে বলে আসলে—
আমি তা বলতে চাইছি না।
দেখো পুতুলটাকে দেখে মনে হচ্ছে সে খুব বুদ্ধিমতী।
–তোমার কী তাই মনে হয়?
সাইবিল বলে আমি তার মুখের গড়নটা একদম পছন্দ করছি না, মনে হয় সে বোধ হয় মনের সব খবর পড়ে উঠতে পারে।
হ্যাঁ, মিস কোম্বে–
ওকে দেখে মনে হয় ও বিষণ্ণতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠে।
তার কথা বলার মধ্যে একটা অস্পষ্ট ছাপ রয়েছে।
সাইবিল বলে ওঠে যাক পুতুলটাকে নিয়ে আর ভাবনা চিন্তা করতে হবে না। ওটাকে এক জায়গায় রেখে দাও।