–তিনি কী করে পুতুলটার মনের ভাষা পড়বেন বলুন তো?
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে উঠলেন সইদুল বলতে থাকে, এই পুতুলটা ভদ্র মহিলার মনে খারাপ ছাপ ফেলে গেছে।
ওরা ওই পুতুলের মর্ম কী করে বুঝবেন? ওরা জীবনে সুখে সংযমে ব্যস্ত থাকেন।
সইকুল এসে বলল ঠিক আছে। এই পুতুলটার আচরণ পাল্টে গেছে একথা তোমাকে মানতেই হবে।
কিন্তু এখানের চেয়েও থাকবে না।
কোন আকর্ষণীয় শক্তি ছিল না। সত্যি সত্যি হয়ত জানলার কথা ভাবতে ছিল।
তারপর এখানে?
অ্যালিসিয়া কোম্বে বললেন–না, এই পুতুলটা বেশ লাগছে কেন?
তবে তার অস্তিত্ব আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
সাইবিল বলেন, একথা আপনি বললে আমি ভালোভাবে বুঝতে পারছি আপনার মনে সন্দেহ জেগেছে। গতকাল সে এখানে এসেছিল। একথা আমি আবার হলফ করে বলছি।
এবার অ্যালিসিয়া কোম্বে চিৎকার করে বললেন–তুমি কী বলছ? তুমি একটা সামান্য ব্যাপারকে এত কঠিন করে ফেলছ কেন?
মনে হচ্ছে তুমি এই ঘটনাটাকে ভালো মনে নিতে পারছ না? তোমার মধ্যে এমন একটা আতঙ্ক জেগে উঠছে কেন?
অ্যালিসিয়া কোম্বে পুতুলটার হাতে করে তুলে নেয়। তারপর তার পোশাক ঠিকঠাক করে দেয় অন্যের চেয়ারটাতে বলিয়ে দেয়। কিন্তু পুতুলটা নিজে নড়েচড়ে বসে ওঠেন আরামপ্রদ অবস্থানে থেকে যায়।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠেন না। এর মধ্যে জীবন্ত সত্তা জেগেছে। ভালো করে চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ। সাইবিল তোমার কি মনে হচ্ছে না।
চোখ দুটো কিছু বলতে চাইছে। হয়তো একটু বাদে পুতুলটা কথা বলতে শুরু করবে?
শ্ৰীমতী গোমস বলল–এবার বোধ হয় আমার পালা। এখন সে একমনে ঝাড়পোচের কাজ করে চলেছে। বিড়বিড় করতেই থাকে আমি কিন্তু আর মিটিং রুমে কখনোই যাবো না।
মিস কোম্বে জানতে চাইল–
কী বলছ ভালো করে বল তো গোমস, তখন সে বসেছিল ঘরের এক কোণে। লেখার টেবিলের সামনে, বিভিন্ন হিসেবপত্র নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
সে আবার গলা চড়িয়ে বলতে থাকে তোমাকে নিয়ে আর পারছি না, তুমি সব ব্যাপার নিয়ে এত ঝগড়া কর কেন?
মনে রেখো বিকেলের মধ্যেই কিন্তু হাতের কাজটা শেষ করতে হবে। দুটো সান্ধ্য পোশাকে তৈরী করতে হবে। তিনটে ককটেল ড্রেস তৈরি করতে বাকি আছে। এছাড়া এমন একটা স্যুট তৈরি করতে হবে যা আমাদের যথেষ্ট পয়সা দেবে।
তুমি তা করতে পারবে তো?
শ্ৰীমতী গোমস বিড়বিড় করে বলে ওঠেন–পুতুলটা আমার মাথা খারাপ করে দেবে।
–আবার এই পুতুলটা নিয়ে বাজে বকবক করছ?
-হ্যাঁ, ওটা ডেক্সের ওপর বসে আছে একটা জীবন্ত মানুষ হয়ে। আমার দিকে মাঝে। মাঝে পিটপিট করে তাকাচ্ছে?
–তুমি কি বলছ?
–এসব কথার কোনো মাথা মুণ্ডু আছে কি?
অ্যালিসিয়া কোম্বে উঠে দাঁড়াল। ঘরের এককোণে চলে গেল। বাইরে উঁকি মেরে দেখলো। উল্টোদিকের ঘরটাই হল সিটিং রুম। সেখানে একটা ছোট সেরাটোন ডেস্ক আছে। এককোণে ডেস্ক আছে। সামনে চেয়ার আছে এবার অ্যালিসিয়া সেখানে গিয়ে বসল। শুধু পুতুলটাকে ও বসিয়ে দিল ডেস্কের ওপরে।
পুতুলটা ড্যাব ড্যাব করে তাকাল।
অ্যালিসিয়া কোম্বে মন্তব্য করে-মনে হয় কেউ বোধ হয় আমাদের নিয়ে মজা করছে। হ্যাঁ পুতুলটার হাবভাবের মধ্যে একটা কৌতুক লুকিয়ে আছে এখন তার দিকে তাকিয়ে দেখ, রহস্য চিহ্ন আছে কি?
ঠিক সেই সময় সাইবিল বলল–সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এল, হাতে একটা অসমা ড্রেস যা নিয়ে এখন সে খুব ব্যস্ত আছে। সকালবেলা থেকে চলছে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা।
এখানে এসো সাইবিল, দেখতো তার ব্যক্তিগত ডেস্কের উপর পুতুলটা কেমন বসে আছে। ওকে কি এখানে মানাচ্ছে না?
দুই মহিলা অর্থপূর্ণভাবে দৃষ্টি বিনিময় করে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে বলে ওঠেন–হ্যাঁ হ্যাঁ এখানে ওকে ভারী মজার দেখাচ্ছে।
–তুমি কি ওকে এখানে বসিয়েছ?
সাইবিল বলে–না। আমি তো এ কাজটা করিনি, বোধ হয় ওপর থেকে কোনো একটি কাজের মেয়ে এই দুষ্টুমিটা করেছে।
অ্যালিসিয়া কোম্বে মন্তব্য করেন–হ্যাঁ। এটা আমার একটা মারাত্মক আমোদ।
সে ডেস্ক থেকে পুতুলটা নিয়ে যায়, তারপর তাকে সোফাতে বসিয়ে দেয়।
-সাইবিল তখন পোশাকের দিকে তাকিয়ে আছে। পোশাকটা চেয়ারের ওপর রাখছে। বাইরে বেরিয়ে ওপরের দিকে চলে যায়। এখন তাকে ওয়াসরুমে ঢুকতে হবে। সে বলল-তোমরা জান যে পুতুলটাকে কোম্বের ঘরে নিয়ে গেছে। তুমি কী জান? বল বল তোমরা কে এই কাজটা করেছ।
দুটি কাজের মেয়ে হতভম্ব হয়ে গেছে। তারা মুখ চাওয়াচায়ি করতে করতে থাকে বোঝা যায় আসল উত্তরটা কারোর কাছেই নেই।
কিন্তু, মিস, আমরা কি উত্তরটা জানি?
-হ্যাঁ বল!
আজ সকালবেলা মজা করে কে পুতুলটাকে ডেক্সের উপর বসিয়ে দিয়ে গেছে?
তিনজন মেয়ে তাকায় আকাশের দিকে, আমতা আমতা করে কিছু বলার চেষ্টা করে এবার এরোসপেক্টের পালা। এরোসপেক্ট নামে ওই কোট ওম্যান বলে আমি এই কাজটা করিনি। ঠিক আছে কে ডেক্সের উপর বসিয়েছে?
আর একটি কাজের মেয়ে বলে ওঠে আমি তো করিনি, তুই করেছিস। মার্লিন?
মার্লিন সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রচালিতের মত মাথা নাড়ায়।
এরোসপেক্ট। এটা কিন্তু একটা ভয়ঙ্কর ঠাট্টা।
এরোসপেক্ট বলে ওঠে, আমাকে দোষ দেবেন না। এরোসপেক্টকে দেখলে মনে হয় সে বোধহয় এক মুখরা মহিলা, সব সময় তার গলার মধ্যে পিন ফুটে আছে। সে বলতে থাকে–আমার কি পুতুল নিয়ে খেলা করার মত সময় আছে? আর মাথায় কত কাজের বোঝা?