জোয়ান আপত্তি করে বলল। কেন শর বা তীর ব্যবহার করা হয়েছিল। এটা অনেক দূর থেকে আনতে হয়। মোটেই দূর থেকে আনা হয়নি। আলফ্রেড তিরন্দাজি ক্লাবে যুক্ত ছিল। আলফ্রেডকে দোষ দেওয়া হয়েছিল। আলফ্রেড যে ধারাতে ছিল ১২টা ২০ মিনিটে। এটাই তার পক্ষে দুর্ভাগ্যের বিষয়। সেজন্যই তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আলফ্রেড সবসময় সময়ের কিছু আগে বেরিয়ে যায় এবং এটাই তার পক্ষে সঠিক– জোয়ান মাথাটা নাড়ল, এটা মনে হচ্ছে সবকিছুই ভুল হয়েছে। আম মনে করি আলফ্রেড-এর অলসতা তার নিজের জীবনকে রক্ষা করেছিল।
ইন্সপেক্টার তার গলা থেকে তীর বার করল।
–ঠিক আছে ম্যাডাম, তোমার প্রস্তাবগুলো সত্যিই আগ্রহজনক আমাকে অনুসন্ধান করে দেখতে হবে।
.
০৪.
মিস মার্পেল এবং রেমন্ড ওয়েস্ট বাগানের কাছে শিলাস্তূপের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। এবং বাগানের ঝুড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন সেটা শুকনো ফলে ভর্তি ছিল। মিস মার্পল বিড়বিড় করতে লাগলেন–অ্যালিসান, স্যাক্লিফ্রেজ, সিটিসাস, থিম্বল ক্যামপেনুলা…।
-হ্যাঁ এই সমস্ত প্রমাণগুলো আমার দরকার। যে এই বাগানে আগাছাগুলো তুলছিল, সে কিন্তু মালী নয়–সে গাছ উপড়ে ফেলছিল আগাছা ভেবে, কিন্তু আমি জানি আমি সঠিক। ধন্যবাদ রেমন্ড আমাকে এখানে আনার জন্য, আমি এই জায়গাটা নিজের জন্য দেখতে চাই।
সে এবং রেমন্ড দুজনে রাগী গ্রিনস কলির দিকে তাকিয়ে থাকল।
কিন্তু একটা কাশি তাদেরকে ঘুরতে বাধ্য করাল, একজন সুন্দর যুবক লোকও এই ঘরটার দিকে তাকাচ্ছিল।
সে বলল–প্লেগি বড় জায়গা, এটা খুব বড় এখনকার দিনে। আমি এটা সম্বন্ধে জানি না। আমি যদি একটা ফুটবলের পথ ধরলাম তাহলে অনেক টাকা উপার্জন করতাম। এইরকম একটা বাড়ি আমাকে তৈরী করতে হবে।
সে আমার দিকে লজ্জিত এবং কুণ্ঠিত হয়ে তাকাল।
আলফ্রেড পোলক বলল, আমি বলতে পারি এই বাড়িটা আমার দাদুর দাদু তৈরী করেছিল। সত্যিই এটা খুব সুন্দর বাড়ি, এবং তারা এটাকে গ্রিনস কলি বলে।
৮. দ্যা ড্রেসমেকার’স ডল
দ্যা ড্রেসমেকার’স ডল
ভেলভেট চেয়ারের ওপর পুতুলটা বসানো ছিল।
ঘরে অনুজ্জ্বল আলোর প্রভা, লন্ডনের আকাশের মুখ ভার। মৃদু ধূসর-সবুজ বিষণ্ণতার বাতাবরণ।
চারদিকে, চারপাশে। এই ঘরের সর্বত্র হালকা সবুজের আচ্ছাদন। পর্দা এবং কম্বলে তারই টুকরো টুকরো জলচ্ছবি। সব মিলিয়ে রঙের এক সুন্দর সমাহার। সমস্ত দিকে একই রকমভাবে রঙীন করা হয়েছে।
পুতুলটা হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে। তার পরণে সবুজ ভেলভেটের জামাকাপড়, মাথার ওপর ভেলভেটের টুপি, মুখের উপরও রঙের ছোঁয়া।
সে হলো পুতুল নাচের পুতুল। যার জাদুর দেখাতে রঙের ছোঁয়া বিত্ত শালিনী মহিলাদের মতো। এই পুতুলকে কখনো কখনো টেলিফোনের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। কখনো তার শয়ন হয় ডিভানের কুশনের উপর।
সেখানে আরাম করে বসে মনে হয় সে বুঝি জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
বিংশ শতাব্দীতে ঘর সাজানোর অন্যতম উপকরণ এইসব পুতুল নাচের পুতুলরা।
সিবার্ন থক্স-এর কথা বলি, এখন সে ব্যস্ত আছে কয়েকটা ডিজাইন ও স্কেচ নিয়ে তাকিয়ে আছে সদ্য সমাপ্ত স্কেচটির দিকে।
পুতুলটির দিকে তাকিয়ে হঠাৎ তার মুখমণ্ডলে একটা অদ্ভুত কিছুটা অসহায়তা উঠল। কিছুটা আশ্চর্যের আভা, সে অকারণে অবাক হল, কিন্তু কে? নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার, খবর রাখার সে কি জানে? দোনোমনা ভাবল–কি হয়েছে এই নীল ভেলভেট নকশার শুটাকে আমি কোথায় রেখেছিলাম?
মনে পড়ছে, এখানে মাথায় কিছুই ঢুকছে না। এইসব কথা বিড়বিড় করে বলতে বলেত সে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলে এখন তাকে কাজের ঘরে ঢুকতে হবে।
–এলসপেথ এলসপেথ-এলসপেথ। তুমি কি নক্সাটা ওখানে রেখেছ? যে কোন সময় শ্রীমতী ফেলোস ব্রাউন এসে পড়বেন, ওনাকে ওটা দিতে না পারলে ভারী মুশকিলে পড়ব আমি।
পুতুলটার দিকে আবার তাকাল। একি! এই তো এটা! এখানেই আছে, শেষপর্যন্ত সে ওই নক্সাটা খুঁজে পেল। হাত থেকে কখন হয়ত পড়ে গিয়েছিল। ক্যান্টিন-এর পাশে শব্দ শোনা গেল। এলিভেটার এসে গেছে। দু-এক মিনিটের মধ্যে পিকিনিস কুকুরটাকে সঙ্গে নিয়ে ঢুকে পড়বেন মিসেস ফেলোস ব্রাউন।
শ্রীমতী ফেলোস ব্রাউন, মনে হচ্ছে তিনি বোধ হয় কোন এক লোকাল ট্রেনে চড়ে শহরতলীর স্টেশনে পৌঁছে গেছেন। তাঁর আচরণের মধ্যে এমনই একটা উদ্বিগ্নতার ছাপ ছিল।
উনি রাগতস্বরে বললেন–ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আর পারছি না।
তিনি gloves এবং fur ছুঁড়ে ফেললেন ভয়ে। কুকুর হ্যারিশিয়া কোম্বে এসে গেছে। এখন সবসময় ব্যস্ত থাকে সে। অবশ্য তাকে আমরা এ ঘরে খুব একটা দেখি না। বিশেষ কোনো অতিথি এলে তবেই এঘরে আসার অনুভূতি বা সুযোগ পায় সে, আমরা বুঝতে পারছি শ্ৰীমতী ব্রাউন হলেন একটা উঁচু দরের খদ্দের।
এই ওয়ার্করুমের আসল কাজের মেয়েটি হল ওই এলপেথ। সে তাড়াতাড়ি সামনে চলে এসেছে। ফেলোস ব্রাউনের দিকে তাকিয়ে বললেন–হয়ে গেছে। আশাকরি ব্যাপারটা আপনার পছন্দ হবে। এটা দারুণ হয়েছে।
মিসেস ফেলোস ব্রাউন এদিক ওদিক তাকালেন আয়নার দিকে চোখ করে।
উনি বললেন–হ্যাঁ, এই পোশাকটা ভালই হয়েছে বলতে হবে। পেছনদিক থেকে আমাকে যথেষ্ট আকর্ষণীয় লাগছে।
সাইবিল আশ্বস্ত স্বরে বলল–তিনমাস আগে আপনি যতটা ছিলেন। এখন আর একটু রোগা হয়ে গেছেন। কিন্তু এই পোশাকে সেটা মনে হচ্ছে না।