আস্তে মাথা দোলালেন পরিচালক। হ্যাঁ, গোয়েন্দার জন্যে ভুলটা সাংঘাতিক। আচ্ছা, কুক্যাবুরা পাখির কথাটা মনে এল কি করে তোমার?
হাসল কিশোর। পাখির কথা ভাবিনি প্রথমে। মিস্টার ফ্লেচার এডগার অ্যালান পোর গল্পটার কথা তুলতেই মনে এল দুটো প্রাণীর কথা। তার একটা হায়েনা, কিন্তু। হায়েনার হাসি ওরকম নয়, ভূতুড়ে ছায়াটা যে-রকম করে হাসে। বাকি আরেকটা প্রাণীর নাম মনে করতে পারলাম না, তবে আবছা ভাবে মনে পড়ল ওগুলোর বাস অস্ট্রেলিয়ায়। সেজন্যেই অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে ডাংম্যান আর টনির ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেছিলাম।
পোষা পাখিটাই শেষে কাল হলো ডাংম্যানের, হাসলেন পরিক। এক মুহূর্ত চুপ থেকে বললেন, চাম্যাশ হোর্ড কেমন দেখলে?
দারুণ, স্যার, বলল রবিন। আপনার জন্যে একটা স্যুভনির নিয়ে এসেছি। পকেট থেকে ছোট একটা সোনার নুড়ি বের করে টেবিলেন ওপর দিয়ে গড়িয়ে দি সে। যেহেতু পেদ্রোজ এস্টেটে পাওয়া গেছে, মিস পেদ্রোই মালিক হয়েছে গুপধনের। সরকারী টোরির হিসসা দিয়ে যা বাকি থাকবে সব তার তিনিই এটা আপনাকে প্রেজেন্ট করেছেন। আপনার কথা বলেছিলাম।
আমার অসংখ্য ধন্যবাদ জানিও মহিলাকে। দেখি, চাম্যাশ হোর্ড দেখতে যাব একদিন। ইনডিয়ানদের খবর কি?
গায়ে ফিরে গেছে। অনেক সাহায্য করেছে ইয়াকুয়ালিরা, ধরতে গেলে ওদের জন্যেই পাওয়া গেছে গুপ্তধনগুলো, অনেক টাকা দিয়েছেন তাদেরকে মিস পেদ্রো।
মাথা ঝাকালেন পরিচালক। দারুণ একটা কেস, ছবি করা যাবে। মুখ তুললেন, চোখদুটো হাসছে। শেষ কিন্তু হলো না। একটা কাজ বাকি রয়েছে, সিনেমার ফিনিশিং।
বাকি? ভুরু কোঁচকাল মুসা।
বুঝলাম না, স্যার! কিশোর অবাক।
মুসা আর রবিনের দিকে চেয়ে চোখ নাচালেন পরিচালক। টেরিয়ার ডয়েল যে তোমাদের আটকে রেখে বিপদে ফেলল, তার কি করেছ?
তড়াক করে লাফিয়ে উঠল মুসা। ইয়াল্লা! ভুলেই গিয়েছিলাম, শার্টের হাত৷ গোটাতে শুরু করল সে। যেন এখানেই রয়েছে শুঁটকি টেরি।
ধীরে, বন্ধু, ধীরে, হাত ধরে টেনে মুসাকে চেয়ারে বসিয়ে দিল কিশোর আমি ভুলিনি। ওর জন্যে প্ল্যান একটা ঠিকই করে রেখেছি।
সামনে ঝুঁকলেন পরিচালক। ছোট্ট একটা কাশি দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আমাকে বলতে অসুবিধে আছে?
না না, হাসল কিশোর। খুলে বলল।
দারুণ হবে, সৌজন্যবোধ ভুলে গিয়ে টেবিলে চাপড় মেরে বসল মুসা, হাসিতে বিকশিত ঝকঝকে সাদা দাঁত।
রবিন হাসছে হা-হা করে।
মিস্টার ক্রিস্টোফারের মুখেও হাসি।