আপনারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন, যদি যথার্থ বিশ্বাস করিতেই হয়, তবে প্রকৃত ঈশ্বরে বিশ্বাসী হউন। ‘তুমি পুরুষ, তুমি স্ত্রী, তুমি সবল যুবকের পদবিক্ষেপে চলিতেছ, আবার জারগ্রস্ত বৃদ্ধ দণ্ডসহায়ে চলিতেছ।’৪৩ তুমিই দুর্বলতা, তুমিই ভয়, তুমিই স্বর্গ এবং তুমিই নরক; তুমি সর্প হইয়া দংশন কর, রোজা হইয়া বিষমুক্ত কর—তুমিই ভয়-মৃত্যু ও দুঃখ-রূপে উপস্থিত হও।
সকল দুর্বলতা, সকল বন্ধনই আমাদের কল্পনা। সজোরে একটি কথা বল, ইহা শূন্যে মিলাইয়া যাইবে। দুর্বল হইও না, ওঠ, বাহির হইবার আর অন্য কোন পথ নাই। শক্ত হইয়া দাঁড়াও, শক্তিমান্ হও ভয় নাই। কুসংস্কার নাই। নগ্ন সত্যের সম্মুখীন হও। দুঃখ-কষ্টের চরম—মৃত্যু যদি আসে, আসুক। প্রাণপণ সংগ্রামের জন্য আমরা কৃতসঙ্কল্প। ধর্ম বলিতে আমি ইহাই জানি, আমি ইহা লাভ করি নাই, লাভ করিবার চেষ্টা করিতেছি। আমি সফল হইতে না পারি, তোমরা পারিবে। অগ্রসর হও।
‘যেখানে একজন অপরকে দেখে এবং একজন অপরকে শোনে, যতক্ষণ দ্বৈতবোধ আছে, ততক্ষণ ভয় থাকিবেই, এবং ভয়ই সমস্ত দুঃখের কারণ।’৪৪
যখন যেখানে একজন অপরকে দেখে না, যেখানে সবাই এক—সেখানে দুঃখী হইবার কেহ নাই, অসুখী হইবারও কেহ নাই। একই আছেন, দ্বিতীয় নাই—‘একমেবাদ্বিতীয়ম্’। কাজেই ভয় করিও না; ওঠ, জাগ, যে পর্যন্ত লক্ষ্যস্থলে না পঁহুছিতেছ, সে পর্যন্ত থামিও না।