আমেরিকায় কোন কাগজে প্রকাশিত ডাক্তার ব্যারোজের একটি প্রবন্ধ ‘ইণ্ডিয়ান মিরর’-এ উদ্ধৃত হয়েছে; কে একজন নিজের নাম না দিয়ে ‘ইণ্ডিয়ান মিরর’-এর ঐ অংশ আমায় পাঠিয়েছে এবং এর কি উত্তর হবে জানতে চেয়েছে। আমি অংশটুকু ব্রহ্মানন্দকে পাঠাচ্ছি এবং যে অংশগুলি নিছক মিথ্যা, তার উত্তরও লিখে দিচ্ছি।
তুমি ওখানে ভাল আছ এবং তোমার দৈনন্দিন কার্য চালিয়ে যাচ্ছ জেনে সুখী হলাম। আমি শিবানন্দের কাছ থেকেও একখানি পত্র পেয়েছি; তাতে ওখানকার কাজের সবিশেষ খবর আছে।
একমাস পরে পাঞ্জাব যাচ্ছি; তোমাদের তিনজনকে আমি আম্বালাতে পাব আশা করি। যদি কোন কেন্দ্র স্থাপিত হয় তো তোমাদের একজনকে কার্যভার দিয়ে যাব। নিরঞ্জন, কৃষ্ণলাল ও লাটুকে ফেরত পাঠিয়ে দেব।
আমার ইচ্ছা আছে, একবার চট করে পাঞ্জাব ও সিন্ধু হয়ে কাথিয়াওয়াড় ও বরোদার ভেতর দিয়ে রাজপুতানায় ফিরব, সেখান থেকে নেপাল যাব, সর্বশেষ কলিকাতায়।
আমাকে শ্র্রীনগরে ঋষিবরবাবুর বাড়ীর ঠিকানায় পত্র দিও। আমি ফিরিবার পথে পত্র পাব। সকলকে আমার ভালবাসা ও আশীর্বাদ জানিও। ইতি
তোমাদের
বিবেকানন্দ
৩৬৯
[শ্রীযুক্ত হরিপদ মিত্রকে লিখিত]
শ্রীনগর
কাশ্মীর, ১৮৯৭
কল্যাণবরেষু,
আজ ৯ মাস যাবৎ শরীর অত্যন্ত অসুস্থ থাকায় এবং গ্রীষ্মাধিক্য অত্যন্ত বৃদ্ধি হওয়ায় পর্বতে পর্বতে ভ্রমণ করিতেছি। এক্ষণে কাশ্মীরে। আমি অনেক পর্যটন করিয়াছি; কিন্তু এমন দেশ তো কখনও দেখি নাই। এক্ষণে শীঘ্রই পাঞ্জাবে যাইব এবং পুনরায় কার্য আরম্ভ করিব। সদানন্দের মুখে তোমাদের সমস্ত সমাচার পাইলাম এবং [মধ্যে মধ্যে] পাইয়া থাকি। আমি নিশ্চিত পাঞ্জাব হইয়া করাচিতে আসিতেছি, সেথায় সাক্ষাৎ হইবে। ইতি
সাশীর্বাদং
বিবেকানন্দস্য
৩৭০
[শ্রীমতী ইন্দুমতী মিত্রকে লিখিত]
কল্যাণবরেষু,
মা, আমি (পত্র) লিখিতে পারি নাই এবং বেলগাঁও আসিতে পারি নাই বলিয়া উদ্বিগ্ন হইও না। আমি রোগে অত্যন্ত ভুগিতেছিলাম, এবং তখন আমার যাওয়া অসম্ভব ছিল। এখন হিমালয়ে ভ্রমণ করিয়া সমধিক স্বাস্থ্য লাভ করিয়াছি। কার্য শীঘ্রই পুনরায় আরম্ভ করিব। দুই সপ্তাহের মধ্যেই পাঞ্জাবে যাইব এবং লাহোর অমৃতসরে দুই-একটি লেকচার দিয়াই করাচি, গুজরাট, কচ্ছ ইত্যাদি। করাচিতে নিশ্চিত তোমাদের সহিত সাক্ষাৎ করিব।
এ কাশ্মীর বাস্তবিকই ভূস্বর্গ—এমন দেশ পৃথিবীতে আর নাই। যেমন পাহাড়, তেমনি জল, তেমনি গাছপালা, তেমনি স্ত্রীপুরুষ, তেমনি পশুপক্ষী। এতদিন দেখি নাই বলিয়া মনে দুঃখ হয়। তুমি কেমন আছ—শারীরিক ও মানসিক, বিশেষ খবর লিখিও। আমার বিশেষ আশীর্বাদ জানিবে, এবং সর্বদাই তোমাদের কল্যাণ কামনা করিতেছি, নিশ্চিত জানিও। ইতি
বিবেকানন্দ
৩৭১
[স্বামী রামকৃষ্ণানন্দকে লিখিত]১২৮
ওঁ নমো ভগবতে রামকৃষ্ণায়
শ্রীনগর, কাশ্মীর
৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৭
কল্যাণবরেষু,
এক্ষণে কাশ্মীর দেখিয়া ফিরিতেছি। দু-এক দিনের মধ্যে পাঞ্জাব যাত্রা করিব। এবার শরীর অনেক সুস্থ হওয়ায় পূর্বের (পূর্বের) ভাবে পুনরায় ভ্রমণ করিব, মনস্থ করিয়াছি। Lecture (লেকচার)-ফেকচার বড় বেশী নয়—যদি একটা-আদটা পাঞ্জাবে হয় তো হইবে, নহিলে নয়। এদেশের লোক তো এখনও এক পয়সা গাড়ীভাড়া পর্যন্ত দিলে না—তাহাতে মণ্ডলী লইয়া চলা যে কি কষ্টকর বুঝিতেই পার। কেবল ঐ ইংরেজ শিষ্যদের নিকট হাত পাতাও লজ্জাকর কথা। অতএব পূর্বের (পূর্বের) ভাব ‘কম্বলবন্ত’ হইয়া চলিলাম। এ হালে Goodwin (গুডউইন) প্রভৃতি কাহারও প্রয়োজন নাই বুঝিতেই পারিতেছ।
Ceylone (সিলোন) হইতে একটি সাধু P. C. Jinavara Vamer (পি. সি. জিনবর বমার) নামক—আমাকে এক চিঠি লিখিয়াছেন; তিনি ভারতবর্ষে আসিতে চান ইত্যাদি। বোধ হয় ইনিই সেই Siamese (শ্যামদেশীয়) রাজকুমার সাধু। ইঁহার ঠিকানা Wallawatta, Ceylone. যদি সুবিধা হয় ইঁহাকে Madras-এ (মান্দ্রাজ) নিমন্ত্রণ কর। ইঁহার বেদান্তে বিশ্বাস আছে। মান্দ্রাজ থেকে ইঁহাকে অন্যান্য স্থানে পাঠান তত কঠিন কার্য নহে। আর অমন একটা লোক সম্প্রদায়ে থাকাও ভাল। আমার ভালবাসা ও আশীর্বাদ সকলকে জানাইবে ও জানিবে। ইতি
বিবেকানন্দ
পুঃ—খেতড়ির রাজা 10th Oct. (১০ অক্টোবর) বোম্বে পৌঁছিবে—Address (অভিনন্দন) দিতে ভুলিও না।
V.
৩৭২
[স্বামী ব্রহ্মানন্দকে লিখিত]
শ্রীনগর, কাশ্মীর
৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৭
অভিন্নহৃদয়েষু,
গোপাল-দাদার এক পত্রে অবগত হইলাম যে, তোমরা কোন্নগরে জমি দেখিয়া আসিয়াছ। জমি নাকি ষোল বিঘা নিষ্কর এবং দাম আট-দশ হাজারের কম। স্বাস্থ্য ইত্যাদি সকল বিবেচনা করিয়া যেমন ভাল হয় করিবে। আমি দু-এক দিনের মধ্যে পাঞ্জাব চলিলাম। অতএব এ স্থানে চিঠিপত্র আর লিখিও না। Next (পরবর্তী) ঠিকানা আমি ‘তার’ করিব। হরিপ্রসন্নকে পাঠাইবার কথা যেন ভুলো না। গোপাল-দাদাকে বলিবে যে, ‘তাঁহার শরীর শীঘ্রই ভাল হইয়া যাইবে—শীত আসছে, ভয় কি?—খুব খাও দাও, মৌজ উড়াও।’ যোগেনের শরীর কেমন থাকে তদ্বিষয়ে মিসেস সি. সেভিয়ার, স্প্রিং ডেল, মরী, ঠিকানায় এক চিঠি লিখিবে এবং তাহার উপর To wait arrival (না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করিবে) লিখিয়া দিও। সকলকে ভালবাসা আশীর্বাদ ইত্যাদি দিও। কিমধিকমিতি
বিবেকানন্দ
পুঃ—খেতড়ির রাজা ১০ অক্টোবর বোম্বাই আসিবে, Address (অভিনন্দন)-টা ভুলিও না।