বর্ণনা শেষ হতেই শংকর ধীর পায়ে দরজার চৌকাঠে গিয়ে দাঁড়াল। ঘরের ভেতর থেকে দরজার চৌকোনো ফ্রেমের মধ্যে ওকে একটা বীভৎস তৈলচিত্রের মতন দেখাল। দুই কনস্টেবল ও আশিকী বাই একই সঙ্গে একটা আর্তনাদ গোছের ধ্বনি করল, যেন ভূত দেখছে। শংকর কোনো মতে দু-টি শব্দ উচ্চারণ করতে পারল, আমাকে ধরুন। তারপর শিকড়ছেড়া বটের মতন মুখ থুবড়ে পড়ল ঘরের মেঝেতে।
শংকর পড়লে আমিও পড়ি এমনভাবে বাঁধা আছি এই ব্যক্তিটির সঙ্গে। ও আমার সব, ও আমার সত্তা। ওর মুখের দিকে চেয়ে তিন তিনটে মানুষ যখন বিস্ময়ে, অনুকম্পায় স্তব্ধ আমি আস্তে আস্তে গিয়ে শুয়ে পড়ি ওর মধ্যে, বিন্দুমাত্র পিছুটান অনুভব না করে। আমার চোখ বন্ধ, আমার মস্তিষ্কে নিদ্রা, আমার হৃদয়ে একই সঙ্গে দুঃখ এবং আনন্দ, আমার রক্তভেজা চুলে এসে পড়েছে বসন্তের উজ্জ্বল রোদ। যে আলো সব দৃশ্যকে এক মায়াময় অবাস্তবতা দেয়, যে আলোকে শংকর বলত, সত্যের অবগুণ্ঠন।