তবে প্রথম প্রতিশোধটা কবে জান? তুমি কল্পনাতেও পারবে না। এথেলরেড রুবিনা সুককে তোমার মনে পড়ে? তোমার কত নম্বর স্ত্রী কে জানে! তোমার মাতৃহারা সন্তানের ভার যার ওপর ন্যস্ত করেছিলে। ওর স্তন ও পাছার প্রশংসা করে শেষ করা যায় না।
ক্যাবারেতে গান গাওয়া গলা—অপূর্ব! যৌনকলায় ও-ই আমার প্রথম শিক্ষিকা। অত বড়ো শরীরে যৌনতার জাদুঘর বানিয়ে রেখেছিল আন্ট এথেল। ও চাইত আমি ওকে মা বলে ডাকি, আমি বলতাম—তা কেন? তাহলে তো সব মজা উবে যাবে।
আট থেকে চোদ্দ বছর অবধি আমার সেক্স টিচার ছিল তোমার তিন, চার কি পাঁচ নম্বর গিন্নি এথেলরেড রুবিনা সুক। তারও দাবি ছিল তুমি তাকে গির্জায় শপথ নিয়ে বিয়ে করেছ।
না, বাবা, আমার প্রতিশোধের ফর্দ এখনও শেষ হয়নি। আমার দ্বিতীয় মাকেও দেখেছি দিনে দিনে কীরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে তোমার থেকে। তোমার নাইটক্লাব যত ফুলে ফেঁপে উঠেছে খদ্দেরে আর টাকায় ততই তুমি সরে গেছ আমাদের জীবন থেকে। রাতই তোমার দিন ছিল, ভোর রাত ছিল তোমার ছুকরিদের নিয়ে ডেরায় ফেরার সময়। তুমি জানতেও পারতে না তোমার হিসাবরক্ষক ছেলেটি—মিখাইল ইগলেসিয়াস—কেমন টুকটুক করে বাড়ি এসে তোমার জায়গাটায় শুয়ে পড়ত। ঘণ্টা দুয়ক এথেলরেডের সঙ্গে খেলাধুলো করে বেশ ফিটফাট চেহারায় বেরিয়ে যেত। এসব কথা না বলার জন্য আমার ঘুষ কী ছিল জান? প্রথম প্রথম বাড়তি হাতখরচ। তারপর নতুন পোশাক-আশাক (ইগলেসিয়াসের মতোই স্টাইলিশ স্কার্ফ, কাফ লিঙ্ক, জুতো আমার পছন্দ ছিল), শেষে যৌনশিক্ষা। আমার সেই সব শিক্ষাদীক্ষার আমি সুনাম রেখেছিলাম—আমার যখন পনেরো বছর বয়স আর তুমি আঠেরো বছরের এক ছুকরিকে এনে ফেললে বাড়িতে আমার দ্বিতীয় মা এথেলরেড পরিষ্কার নির্দেশ দিল : টোনি, গো গেট হার। ধর শালিকে! আমি সময় নষ্ট করিনি, পনেরো বছর এক মাস বয়েসে স্টেফানি লুৰ্দেসকে দিব্যি বুজুকি মিউজিকের রেকর্ড চালিয়ে নাচে নামালাম, স্টেপিং মিলিয়ে কখনো হাত ধরছি, হাত ছাড়ছি, বুকে টেনে নিচ্ছি, জড়িয়ে ধরছি, ক্রমে গালে গাল রাখছি, চোখে চোখ, নাকে নাক, বুকে বুক, ঠোঁটে ঠোঁট…শেষে একসময় ওর সমস্ত কাপড় খুলে নিয়ে, নিজের সব পরিধান বিসর্জন দিয়ে ওর যোনিতে আমার লিঙ্গ। মিউজিক তখনও চলছে। আমরাও মিশে আছি এক অভিনব নাচে। শুনলাম স্টেফানি আমার কানে ফিসফিস করে বলছে, তুমি কি জানো তোমার বাবার সঙ্গে আমার আংটি বদল হয়েছে? এই দ্যাখো—বলে ওর এনগেজমেন্ট রিংটা দেখাল আমাকে। তাতে কী প্রমাণ হয় জান? ও জিজ্ঞেস করল। কী? আমি বললাম, দ্যাট আই অ্যাম আ মাদারফাঁকার।
বাবা, আমি বড়োই হয়েছি আমার চতুর্থ, পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ মা স্টেফানি লুৰ্দেস সুককে যৌনসঙ্গী করে। তুমি হয়তো এর কিছুই জাননি, জানলেও তোমার মনে হয় বড়ো একটা এসে যেত না। আমাকে পেয়েছিল বলে স্টেফানি আর তোমার অন্য বউ এথেলরেড আর ইগলেসিয়াসের কথা তোমার কানে তোলেনি। তবে এথেলরেড ভালোই চেষ্টা করেছে স্টেফানিকে বিষ খাইয়ে মারতে। পারেনি যে তা একান্তই আমার জন্য। আমার দ্বিতীয় মা টের পাচ্ছিল আমি স্টেফানির প্রেমে পড়েছি।
যাক, শেষপর্যন্ত কেউই মরেনি, কেউই তোমায় ছেড়েও যায়নি। বরং তুমিই সব্বাইবে ছেড়ে পালালে, সঙ্গে নিলে শুধু আমাকে। আমি বলেছিলাম এই সমুদ্র ছেড়ে যাব না। তাতে তুমি বললে, তাহলে সমুদ্রেই ডুবে মরতে হবে।
বললাম, কেন?
তুমি বললে, বিকজ আই হ্যাভ বার্নট অল মাই বোটস। আমার সব নৌকোই পুড়িয়ে ফেলেছি।
-কীরকম?
—আমার অ্যাকাউন্টে ইগলেসিয়াস আমার ব্যাবসার সব টাকা তছনছ করে, আমাকে লুঠ করে গ্রিসে পালিয়েছে, আমার চারদিকে এখন পাওনাদার, কারও কোনো পয়সা মেটায়নি লোকটা। আমার দেশ ছেড়ে পালানো ছাড়া গতি নেই।
তখন মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছিল ‘এথেলরেডকে বলছ না কেন?’ চট করে কথাটা সামলে নিলাম। ঠিক করলাম নিজেই গিয়ে জিজ্ঞেস করব। মা তো আকাশ থেকে পড়ল—এই সেদিনও আমার দুটো হিরের নেকলেস বন্ধক রাখবে বলে নিল! হায় রে, আমার মন্দ কপাল! মা হাত-পা ছুড়ে কাঁদতে বসল। হিসাবরক্ষকের হিসেবি কাজ দেখে ওই বয়সেই আমার শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে।
তোমাকে বললাম, মা-দের কে দেখবে? তুমি একবার ওপরে আঙুল দেখিয়ে বোঝালে ঈশ্বর, তারপর প্যান্টের সাইডপকেটে থাবড়ে বোঝালে টাকা। আমি বললাম, ঈশ্বর যা করার তো করবেন, কিন্তু টাকাটা জোগাবে কে? তখন তুমি ক্লাবের ক্যাশবাক্স আমার সামনে ফেলে বললে, এর অর্ধেক টাকা তোমার আর আমার, বাকিটা দিয়ে গর্ত বোজাব।
মেয়েদের তাচ্ছিল্য করলে তুমি তাদের গর্ত বলতে। আমার ভালো লাগত না, তবু চুপ করে যেতাম। কিন্তু সেদিন পারিনি; বললাম, এই সব টাকা তোমার গর্তগুলোয় ফ্যালো। আমরা খালি হাতে দেশ ছাড়ব।
গর্তে যা ঢালার পরেও তুমি শেষ হাসি হেসেছিলে। বম্বেতে প্লেন থেকে নামার পরেও তোমার সুটকেস ভরতি মার্কিন ডলার। আমার আর জিজ্ঞেস করার রুচি ছিল না, তবে আন্দাজ করছিলাম ইগলেসিয়াসের সঙ্গে সাঁট করেই কান্ডটা তুমি ঘটিয়েছিলে। তোমাদের টার্গেট ছিল জর্জ এফেন্দি। নাইটক্লাবের মালিক। শরীরে তুর্কি এবং গ্রিক রক্ত। সারাজীবন গড়াগড়ি দিয়েছে হিরে জহরতের ওপর। তুমি আক্ষেপ করতে, শালা আমার শরীরের শেষ রক্তও নিঙড়ে নিচ্ছে, কিন্তু ভুলেও একটা বোনাস কখনো দিল না।