ডরোথির মনে ধরা ছিল একটা উড়োজাহাজ, আর সুকের মাথায় ভর করেছিল একটা অন্যরকম ওড়া। ট্যাক্সি থেকে শীতের সকালে অ্যারোড্রামে নেমে প্রথম যে কথাটা সুক ডরোথিকে বলেছিল তা হল—আজ তুমি উড়বে।
ডরোথি জিজ্ঞেস করেছিল, কী রকম? বিনা টিকিটে? বিনা প্লেনে?
সুক শুধু দুষ্টু হাসি হেসেছিল, চুপচাপ।
সুক মেন্টেন্যান্স মেকানিক ছিল দারভাঙা এয়ারলাইনের। প্রথমে সেই হ্যাঙ্গারে নিয়ে তুলল ডরোথিকে। দুটো ড্যাকোটা বিমানের মেরামতি, অয়লিং, ঝাড়পোঁছ হচ্ছে সেখানে। একটা ছোট্ট বাও করে সুক বলল, ডার্লিং, এই হল আমার অফিস। আর এরা আমার কলিগ।
বলতে বলতে দুটি যুবা প্লেনের ডানা থেকে নেমে ডরোথিকে বলল, হ্যালো ডরোথি!
ডরোথি, বলা বাহুল্য, বেশ হকচকিয়ে গিয়েছিল। আমার নাম পর্যন্ত জেনে গেছে এরা। গড নোজ আরও কত কী শুনেছে বন্ধুর কাছে।
বেশ চমকেছিল দুই সঙ্গী ড্যানিয়েল এবং আসরানিও। বাপরে, কী চিড়িয়া পাকড়াও করল টোনি! এ তো বিলকুল রুপোলি পর্দা থেকে নেমে আসা এভা গার্ডনার! শুধু গায়ের রংটা চাপা। তাতে চেহারার নখরা আরও বেড়েছে। আর… আর কী চাউনি, মাই গড! ওরা হাঁ করে গিলছিল ডরোথিকে।
শেষে সুক বলল, শালা, কী গিলছিস ওভাবে? একটু আমার দিকেও চা। আফটার অল শি ইজ মাই বার্ড!
এই বার্ড কথাটার প্রতিবাদ করল ডরোথি। বলল, আমি পাখি নই, আই অ্যাম আ…
ওকে কথা শেষ করতে দিল না সুক। ওকে, ওকে, তুমি পাখি নও, তুমি এরোপ্লেন। আমরা এখানে প্লেনকেও বার্ড বলি। নাউ লেটস গো, আমাদের নিজস্ব প্লেনে।
কিন্তু কোথায় সে প্লেন? একটার পর একটা হ্যাঙ্গার পেরিয়ে কোথায় কোন দুনিয়ার প্রান্তে একটা প্লেন দেখিয়ে সুক বলল, ওই আমাদের পাখি।
ডরোথি দেখল চাকায় ঘাস গজিয়ে যাওয়া এক কোন জমানার অ্যাবানডাণ্ড ড্যাকোটা সবুজ খেতের মধ্যে বসে আপনমনে শীতের রোদ পোহাচ্ছে। বলল, এর আর দেখার কী আছে টোনি?
মুচকি হেসে সুক বলল, শুধু খোলটা দেখলেই হবে? কেন, ভেতরটা? ডরোথি বলল, দেখতে চাই, কিন্তু ওর তো সিঁড়িও নেই। উঠব কী করে?
সুক মুখে কিছু বলল না, বেশ কিছুক্ষণ ডরোথির বলা নানা কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বার করে দিল। শেষে প্লেনটার দরজার কাছে এসে হাঁটু গেড়ে বসে বলল, হ্যাঁ, এই তো সিঁড়ি। আমার দু-কাঁধে পা রাখো।
ডরোথি ওর পায়ের জুতো খুলে এক হাতে নিল, আর অন্য হাতে ভ্যানিটি ব্যাগ। ও সুকের কাঁধে পা রাখতে সুক উঠে দাঁড়িয়ে ওকে প্রায় ছুঁড়ে দিল প্লেনের মধ্যে। ডরোথি একটা বিড়ালছানার মতো হুমড়ি খেয়ে পড়ল প্লেনের ফ্লোরে। আর আড়চোখে দেখতে পেল ওর বন্ধুটি প্লেনের ডানার ওপর ভল্ট খেয়ে কীসব করে, এটা-ওটা ধরে ঠিক হুমড়ি খেয়ে পড়ল ওর ওপর।
কোনো নারীর ওপর আছড়ে পড়ার এরকম আনন্দ কখনো পাইনি। পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝলাম খোলা আগুনের ওপর এক পতঙ্গের মতো পড়েছি আমি। এর আগে একবারও যাকে চুম্বন করিনি তার ব্লাউজ, ব্রা ছত্রভঙ্গ করে তার বুক দুটো নিয়ে এরকম মেতে উঠলাম কেন? ওর বুকের বৃন্ত দুটো দেখামাত্র মনে হল যেন শৃঙ্গ জয় করেছি। জীবনে প্রথম কোনো মেয়ের ঠোঁটে চুমু দেওয়ার আগে তার বুক চুষতে শুরু করলাম। ব্যতিক্রম শুধু মা, যার বুকই চুষেছি, ঠোঁটে ঠোঁট মেলাইনি। তবে…তবে…তবে তাই বা কী করে বলি? আমি কি ভুলে গেলাম…যাক সে কথা, তা তো যথাস্থানে আছে। এখন আমি ডরোথি রবার্টের একটা বুকের বোঁটায় ঠোঁট রেখে অন্য বুকের বোঁটায় আঙুল দিয়ে খেলছি।
যে-ডরোথিকে অ্যাদ্দিন বড় সংরক্ষণশীল মনে হয়েছিল, যাকে বাগে আনতে এত প্যাঁচ পয়জার কষতে হল, তার দিক থেকে প্রথম মুহূর্তের কিছু ‘উঁহুউঁহু!’ শব্দ ছাড়া বিশেষ প্রতিরোধ না পেয়ে যেমন মজা পাচ্ছিলাম তেমনি একটু একটু অবাকও হচ্ছিলাম। অবাক হওয়া আর মজা পাওয়া মিলেমিশে একটা ক্লাইম্যাক্সে গিয়ে ঠেকল যখন ডরোথি ওর অপরূপ খোলা বুক দুটো নিয়ে ঠেলে উঠে ঠিক এক সদ্য ডেক-অফ করা টাইগার মথের মতো প্রায় উড়ে এল আমার ওপর। দু-হাত প্লেনের দুই ডানার মতো দু-ধারে ছড়ানো, মুখে একটা ইঞ্জিনের আওয়াজের মতো ‘গোঁ-ও-ও-ও’ ধ্বনি। আর আমার ওপর ল্যাণ্ড করার পর দিব্যি ঘোষণা—দিস ইজ আ প্লেন ক্র্যাশ!
ছাইচাপা আগুন বলতে যা বোঝায় ডরোথি দেখলাম ঠিক তাই। এভাবে তো বর্ণনা করা যায় কারও মনকে, স্বভাবকে, হয়তো প্রতিবাকে। এ ছাড়াও এই বাগধারাটা খুব লাগসই ভাবে বর্ণনা করে ডরোথির শরীরটাকে। পোশাক-আশাক যে নারীর সৌন্দর্যের এতখানি ঢেকে রাখতে পারে তা ডরোথিকে ক্রমাগত বিবস্ত্র না করলে জানতে পারতাম না। ওর গায়ের চাপা রংটার মধ্যেও একটা মাদকতা আছে, কিছুটা গাঢ় রেড ওয়াইনের মতো। রংটার নিজেরই একটা লাবণ্য আছে, প্লেনের জানালা দিয়ে রোদ্দুর এসে সেই রংটাকেই এখন সোনালি আভায় মুড়ে দিচ্ছে। ওর দুই বলিষ্ঠ বুকে মুখ ডুবিয়ে আমার ঘুমিয়ে পড়ার ইচ্ছে হল। কিন্তু আমার ধারালো যন্ত্রটির কোনো ঘুম নেই, সে বাঘের মতো জেগে উঠে ডরোথির গোপন রহস্যভেদে ব্যস্ত হয়ে উঠল। আমার বাঘ কিংবা টাইগার মথ প্লেন কখন যে হ্যাঙ্গার খুঁজে নিয়েছে জানি না, কিন্তু প্লেনের ‘গোঁ-ও-ও-ও’ ধ্বনিটা ছড়াতে শুরু করেছে ডরোথির সামান্য খোলা ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে। ওর সারাশরীরের মতো সুন্দর মুখটাও ঘামে ভেসে যাচ্ছে। ওর চোখ দুটো আধবোজা, চুলগুলো মাটিতে ছড়ানো। একটু পর পর গোঙানির মতো আওয়াজ করে ও কিছু বলছে, কিন্তু আমি তার কিছুই বুঝতে পারছি না, আমারও ক্ষমতায় কুলোচ্ছে না ওকে জিজ্ঞেস করি, কেমন প্লেন দেখছ ডর?