থারমস ফ্লাস্কে যে গরম দুধ, চা ইত্যাদি রাখা হয়, তাতেও কিন্তু অনেকটা একই কৌশল। ফ্লাকের মধ্যে আছে একটা কাঁচের বোতল। বোতলের কিন্তু দেয়াল দুটো, আর দুই দেয়ালের মাঝখানটা একেবারে ফাঁকা অর্থাৎ সেখানে হাওয়া নেই। হাওয়ার মধ্যে দিয়ে তাপ পালায় যত কম, ফাঁকা জায়গার মধ্যে দিয়ে পালায় তার চেয়েও কম। ফ্লাকের গরম জিনিস তাই সহজে ঠাণ্ডা হতে পারে না।
হাওয়ার এই কৌশলটা পাখিদেরও অজানা নয়। পাখিদের তো শীতের লেপ নেই, তাই শরীরের পালকই হল তাদের লেপ। পালকগুলোকে ফুলিয়ে ধরলে তার মধ্যে হাওয়া আটকা পড়ে। আর এই হাওয়ার আবরণ তাদের শরীরের তাপকে ঠেকিয়ে রাখে; শীতের দেশের পাখি ছাড়া আরো অনেক জন্তু পুরু লোমের মধ্যে হাওয়া জমিয়ে রেখে শীতের হাত থেকে গা বাঁচায়।
তোমাদের বুঝি মনে হচ্ছে : আহা! আমাদেরও যদি অমনি পুরু লোম কি পালক থাকত, তাহলে আর মোটেই ঠাণ্ডায় কষ্ট পেতে হতো না। মানুষের গায়ের ওপর এ রকম শীত ঠেকানো আস্তরণের ব্যবস্থা নেই, তার কারণ মানুষ চারপাশের পরিবেশের উপযোগী জিনিসপত্র তৈরি করে আবহাওয়াকে অনেকখানি বাগ মানাতে পারে। আমাদের বড় বড় লোম নেই, কিন্তু লেপ আছে। অবশ্য অনেকের তো লেপও নেই। কিন্তু তার জন্যে গায়ে লোম গজাবার চাইতে বরং এমন সমাজ-ব্যবস্থা দরকার যেখানে সবারই উপযুক্ত শীতের পোশাক আর আশ্রয়ের ব্যবস্থা থাকবে।