ইসলাম ধর্মে, পুরুষ মাত্রই একই সাথে চার চারজন স্ত্রীকে নিয়ে ঘর করতে পারে। প্রয়োজনে তালাকের বিষয়টি শুধু তিনবার উচ্চারণের এখতিয়ারে পুরুষের জন্য সহজ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া তিন তালাকের খড়গ ব্যবহার করে প্রতিবারই শুধু একজনকে হেঁটে দিয়ে সেই জায়গায় অন্য একজনকে দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করার পর একাধিক নারী সম্ভোগও আইনসিদ্ধ। অনেক মুসলিম দেশ বিশেষ করে তেল সমৃদ্ধ পুণ্যভূমি আরব দেশে তো একেকজন পুরুষ এমনি করে করে প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশটা নারীদেহ আজও ভোগ করে থাকে হেরেম প্রতি পালনের সুবাদে। এবং দুর্ভিক্ষকবলিত আফ্রিকাতেও দুর্ভিক্ষের সুযোগ নিয়ে একেক সংসারে নারীর বাজার। এবং আফ্রিকাতে ইসলাম ধর্মের দ্রুত প্রসারের মূল কারণই ছিল চারটে বিয়ে। ধর্মের জনপ্রিয়তার কারণও তাই। চারটে বিয়ে। আজও, এখনও, আফ্রিকা-আরব। বিত্তে উল্টো কিন্তু নারীদেহ ভোগের প্রশ্নে, এক। ধর্মের জনপ্রিয়তা, যা ভৌগোলিক কারণে ও সংস্কৃতির প্রভাবে সব কন্টিনেন্টে ঠিক এক জনপ্রিয়তা পায়নি। পূর্বে, আমাদের তালুকে ও মুলুকে। পায়নি। তবুও প্রশ্ন থাকে। অনেক প্রশ্নই থাকে। থেকে যায়। নারী তার জৈবিক প্রয়োজনে অন্য পুরুষের সাথে সঙ্গম তো দূরের কথা সামান্যতম আসক্তি প্রকাশ করলেও, অনেক দেশেই ধর্মীয় মতে তাকে জ্বেনার অপরাধে দোররা মেরে হত্যা করা হয় এবং হচ্ছে। এবং রায়ের পর অপরাধিনীকে দু’এক মাসের বেশি সময়ও দেয়া হয় না। ফলে কোনওরকম আপিল বা অন্য কোন ধরনের হস্তক্ষেপের আগেই তাকে চলে যেতে হয় এই প্রিয় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। এ ব্যাপারে সরকারি কোর্ট বা ইসলামিক কোর্ট, কারো কথা শোনে না। প্রশ্ন, কেন, নারীর বিরুদ্ধে এই বৈষম্য? পুরুষের লিঙ্গের অবাধ স্বাধীনতামতো কেন নারীর যোনির অনুভূতি ও স্বাধীনতাকে স্বীকার করা হবে না বা হয় না। এধরনের সঙ্কট বা ক্রাইসিস কি শুধু পুরুষের বেলাতেই সিদ্ধ আর নারীর বেলাতে হলেই যাবতীয় অশুদ্ধ। এ কেমন ধর্মাচার প্রশ্ন তোলা এবং জানার অধিকার মানুষ মাত্রেরই আছে।
পুরুষের মতো নারীকেও কেন দেয়া হয়নি একসাথে চারজন স্বামী রাখার অধিকার। এবং এই না দেয়ার পেছনে কোনও যুক্তিই যথেষ্ট নয়, যেখানে শরীর একাকি কথা বলার অধিকারী। শরীর যেখানে নির্দেশ করে। শরীর যখন বিদ্রোহ করে। তখন তার সমুচিত জবাব–শুধু শরীর ছাড়া না ধর্ম, না সমাজ, কেউ দিতে পারে কী? যাকে সহজ করে বলা যায় লিঙ্গের উত্তর দিতে পারে একমাত্র লিঙ্গই। পুরুষ যদি নারী চায়, তবে নারীও চাইতে পারে, পুরুষ। তাদের লোভ-লালসা, চাহিদা-ক্ষুধা এক। এবং এই নারী পুরুষই হলো, লিঙ্গ আর যোনি। ব্যক্তি নয় তাদের লিঙ্গ।
নারী কখন অন্য পুরুষের কাছে যায়!
ক. নপুংসক স্বামী : একজন সুস্থ শরীর এবং স্বাভাবিক অনুভূতিসম্পন্ন মেয়ের স্বামী যদি নপুংসক হয়, তখন যদি, তার শরীরে কামাবেগ সঞ্চারিত হলে স্বাভাবিক নিয়মে তা প্রশমিত না হলে নারীটির দৈহিক-মানসিক অবস্থা সহজেই অনুমেয়। বছরের পর বছর যদি এই একই অবস্থা চলতে থাকে তখন প্রশ্ন জাগে যৌবনবতী অতৃপ্ত সে মেয়েটির সামনে কোন পথটি থাকবে। সমাজপতিরা বলবেন আত্মসংযমের কথা। তখন ঐ ভণ্ড প্রতারকদের মুখে ঝটা মেরে বলতে ইচ্ছে করে কোন দোষে একটি সুস্থ সবল মেয়ের জীবন যৌবন এভাবে ব্যর্থ হবে? আর ব্যাপারটা যদি উল্টোটা হতো কথার কথা হিসেবে ধরা যাক মেয়েটি কামশীতল কিংবা গর্ভধারণের অনুপযুক্ত তখন সেক্ষেত্রে তারা কি বিধান দিতেন। পুং গর্দভটিকে নিশ্চয় আবার বিয়ে করানোর তোড়জোড়ে মেতে উঠতেন খোদ ছেলে পক্ষের মা-বোনেরা পর্যন্ত। অথচ এখন বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে অতি সহজেই সঠিক নির্ণয় করা সম্ভব সমস্যাটা কোথায় এবং কারণটাই-বা কি। -বোধহীন সমাজে সন্তানের আশায়, যা জেনেশুনে নপুংসক পুরুষকে একাধিক বিয়ে দিয়ে, একাধিক নারীর জীবন ব্যর্থ করার দৃষ্টান্ত কি কিছু কম? যেন সব দোষ নারীর।
নিরীহ মেয়েটাকেই পুরুষপ্রধান সমাজে বলি হতে হয়। এদিকে পূর্ণ সঙ্গম তো দূরের কথা স্বামী নটবরের পুরুষাঙ্গই উত্থান রহিত। দিনের পর দিন রাতের পর রাত অসুখী যুবতী স্ত্রীকে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতে হয় তোকলজ্জার ভয়ে। মুখ ফুটে কাউকে বলতেও পারে না। বলতেও যে পারে না তাও নয় আসলে সাহস পায় না। তাই বলে মেয়েটির শারীরিক চাহিদার কথা তো আর অস্বীকার করা যায় না। এই সঙ্গে দাম্পত্য জ্বালা, সন্তান বাসনা, মাতৃত্বের মাধুর্য সবই কি বিসর্জন দিতে হয় একটি মানুষের অক্ষমতার জন্য। সুতরাং সে অবস্থায় মেয়েটি যদি সবাক হয়, আর জাতি ধর্ম নামক যাবতীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে অস্বীকার করে কপট নিয়তি নির্ভর না হয়ে তার নিজের নারী জীবনের পূর্ণতা অর্জনে প্রয়াসী হয়; ভিন্ন পথ অবলম্বন করে তাহলে কে
বা কোন সমাজ তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে। দেশে দেশে, যুগে যুগে নারীকে নষ্ট করে দেয়ার এরকম কত ঘটনা যে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যায় তার ইয়ত্তা বোধ নেই।
খ. প্রথম দৃষ্টিতে তাকে ভালো লাগেনি হতেই পারে। ভিন্নরুচির লোক। বিয়ের আগে লোকটিকে হয়তো সে দেখেওনি। প্রথম রাতে দেখেই মনে হলো, কি কুৎসিত! তাহলে এই মেয়েটি কি করবে! যাকে দেখলেই বিশ্রী লাগে এমন একজন পুরুষ সঙ্গীকে তার এই অনুভূতি নিয়ে কি করে তার সঙ্গে সহবাস করবে?