অন্যদিকে শিক্ষিত ও চালাক মেয়ে সূচনা–নপুংসক স্বামীর অগোচরে দীর্ঘ বছর ধরে গোপনে যৌনজীবন চালিয়ে গ্যাছে মিজানের সঙ্গে। মিজানের সমস্যা তার স্ত্রী পক্ষাঘাতে পঙ্গু। মানবিক কারণেই সে মুনমুনকে ডিভোর্স দেয়নি। কিন্তু তার যৌনজীবনেও সে কোনও সমঝোতা করেনি।
সমস্যার কোনও সমাধান সমাজ করবে না। কিন্তু যদি কেউ বিকল্প খুঁজে নেয়, সমাজ তখন বৈরী হয়! দা-কুড়োলে। শ্বাস ও কণ্ঠনালিতে। তাহলে এই কথা বললে কি ভুল হবে যে, আমাদের সমাজ, সুস্থ সূচনার বদলে অসুস্থ সখিনা তৈরির প্রসূতিকাগার? আমাদের অসুস্থ সমাজ। ভাগাড়-সমাজ।
দীপের পাশে শুয়ে মল্লিকা বিয়ের পনেরো বছর পরেও ভাবে শমসেরের কথা। দীপকে জড়িয়ে ভাবে তার শমসের। দীপকে খেতে দিতে দিতে ভাবে শমসেরকে দিচ্ছে। কারণ তুচ্ছ। সে শমসেরকে ভালোবাসতো। শমসের মুসলিম তাই, অন্ধ সমাজের কারণে ওদের প্রেম, প্রাণ পায়নি। দীপকে সে কখনো পরিপূর্ণ করে আপন ভাবতে পারে না।
অতিরিক্ত কামুক স্বামীকে আটটি সন্তান দেয়ার পর মাসুদা ক্লান্ত। সে করিমের কাছে যেতেই চায় না। অনেক অনুনয়-নিষেধ সত্ত্বেও করিম ফের বিয়ে করে নিয়ে আসে জোবেদাকে। এতগুলো মাতৃত্বের এতদিনের বিবাহ, এত ত্যাগ স্বীকার! সবই কি বিফলে গেল, প্রশ্ন?
পাশাপাশি রাতের বেলায় সতীনের ঘরের বাতাসে কামের গন্ধ মাসুদার মানসিক অবস্থা কেমন হতে পারে! শুলেই যুগল দৃশ্য ভাসে চোখে। এই কষ্ট সইতে না পেরে মধ্য বয়সে পৌঁছে মাসুদা ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। একদিন ইঁদুর মারা ওষুধ খেয়ে তার সন্তানগুলোকে মাতৃহীন করে দিয়ে –মনে ক্লান্ত মাসুদা ইহজগৎ ত্যাগ করলো।
অকাল বিধবা হেমলতার সঙ্গে রাতের বেলায় ঘুমোত এগারো বছরের এক কিশোর। হেমলতা তাকে মহাভারত পুরাণের গল্প শোনাত। সজল–হেমলতা ছাড়া অন্য ঘরে ঘুমোবে না। বাবা-মায়ের নিষেধ সত্ত্বেও না। মায়ের তৃতীয় চোখ। বাবা। বললো স্রেফ অপত্য স্নেহ। সন্দেহ বাতিকগ্রস্ত মা বলে-না। একদিন গভীর রাতে উঁকি দিয়ে দেখলো সজল হেমলতার স্তনে মুখ দিয়ে। কারো শরীরেই কাপড় নেই। জানি, এর উত্তর নেই। তবে বিধবা হলেই যে রতি মরে যাবে, একথা ভুল। বিধবারা যাবে যাবেই। রতির তাড়না তাকে নিয়ে যায়। সন্তানের বয়সী থেকে গোয়াল ঘরে এমনকি ষাড়ও সই। রতির যন্ত্রণা এতই যন্ত্রণাদায়ক শতকরা পঁচানব্বই জন বিধবারই গোপন। যৌনজীবন থাকে এবং বিপত্নীকদের তো বটেই। এবং তা ভালো। তা মঙ্গলজনক। তা স্বাস্থ্যকর।
স্ত্রীর মৃত্যুর এক মাসের মধ্যে ৭০ বছর বয়সে মি. শহীদুল্লাহ আবার বিয়ে করলেন। ছেলেমেয়েরা তাকে ত্যাগ করলো একই দিনে। মি. উল্লাহর যুক্তি ছিল আমার একজন সঙ্গী চাই। কথা বলার, পাশে বসার। তার প্রয়োজন কি যুক্তির বাইরে ছিল? প্রয়োজন কি সবসময় যুক্তি মানে? যুক্তির তলায়–মর্মবেদনা কি যুক্তি শাস্ত্রের চেয়েও মানবিক শাস্ত্র হতে পারতো না? মি. শহীদুল্লাহ দুঃখ করে বলেছিলেন, ওরা তো যার যার সংসারে সুখে আছে। ওরা কী জানে, আমার দিন কি করে কাটে?
সমমনা নয় বলে বাবুল আর শাহীনা বিয়ের তৃতীয় বছর থেকে ভিন্ন বিছানায়। তারপর ডিভোর্স। সেই থেকে শাহীনা ভ্রান্তিপাশের শিকার। এক ভুল থেকে অন্য ভুল। এক পুরুষ ছেড়ে অন্য পুরুষ। ধোকার পর ধোকা। চরম দুঃখশেষে মুক্তি পেতে আসক্তির আশ্রয়। তারপর একদিন অনিবার্য আত্মহত্যা।
রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজের তিন বছর আগে বিজয়া এমন জান্তব হয়ে উঠলো যে প্রতিরাতে ওর কামনা মেটাতে ওর স্বামীর হিমশিম অবস্থা। প্রতিরাতেই তার পুরুষ চাই। অপারক স্বামী তাকে ভুল বুঝলো। গোপনে শুরু হলো–বিজয়ার বিভিন্ন রকমের বিকার। সমকামী এবং উভকামিতার জীবন।
শফিকের পতিতালয়ে যেতেই হবে। কারণ ঘরের পুরোনো মেয়েমানুষের শরীর বড় একঘেয়ে। হায়দার তা না করে পরকীয়া করতো। আর মুনীর? বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটা গরুর গোয়াল ছিল, সেখানে চারটি দুধেল গাভী ছিল। সে লুকিয়ে যেতো গাভীর কাছে। গাভীর শরীরে মেটাতো ওর কাম।
মিশু, তরু, নদী ওদেরকে নষ্ট করার পর খেরু মামা তার দু’মাসের ভাগ্নীকেও ছাড় দিল না। একলা ঘরে এনে ওর প্যান্ট খুলে, না ফোঁটা ফুলে আঙুল প্রক্ষেপণ করে মেয়েটিকে সুযোগ পেলেই কাঁদাতো।
ঘটনাক্রমে প্রদীপের সঙ্গে বেবীর মাত্র দু’বার যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। প্রদীপ, বেবীকে যেভাবে নিয়েছিল, যে কারুকার্যে সে ফুটিয়ে তুলেছিল ওর নারীত্বের অলঙ্কারগুলো! বিছানায় বেবী নিজেকে মাত্র দু’বার যেভাবে আবিষ্কার করেছিল প্রদীপের সঙ্গে, সালমানের সঙ্গে তা দশ বছরে একবারও ঘটেনি। সালমান শুধু শরীর কিন্তু প্রদীপ বোঝে প্রেম। সেই থেকে বেবীর জীবন, সালমানের সঙ্গে কখনো আর এক হলো না।
দাম্পত্য, নির্ভর করে সমস্যার গভীরতার ওপর। একে কেন্দ্র করে বিয়ে ভাঙে। বিয়ে গড়ে।
৫. জীবনের গলিত লাভা
পরম-আয়ু। মানুষ কি পরমায়ুর হিসেব বোঝে? এই ‘পাটিগণিত’, মানুষ বোঝে কী? অফুরন্ত মনে হতে পারে, আয়ু। মনে হতেই পারে বেঁচে থাকবো সত্তর, আশি, নব্বই, একশ’ বছর। সেতো অনেক সময়।
হ্যাঁ, চব্বিশ ঘণ্টায় একদিন হলে, সত্তর, আশি, নব্বই, অনেক অনেক সময়। মাঠ মাঠ সময়। মানুষের গড়পড়তা আয়ু ভূগোল বিশেষে ৫৫-৭০।