জারিনা বলল, আপনারা একটু বসুন। আমি কতদিন ধরে আপনাদের কথা ভাবছি। এই বলে সে টেবিলের দেরাজ থেকে একটা চাবি বার করে ঘরের এক পাশের সাবেকি দিনের বড় কাঠের আলমারিটা খুলল।
অনাদি ফিসফিস করে অনন্তকে বলল, পিস্তল-টিস্তল বার করছে বোধহয়। অন্য দু’জনও মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগল।
কিন্তু পিস্তল-টিস্তল নয়। জারিনার হাতে একটা বোতল দুনম্বর বাংলা মদ। মৃত্যুর দিন বাজার করার পথে কিনে এনেছিল ডেভিড। যখন ঠেকে যেতো না, বাজার থেকে আসার সময় একেক দিন এইরকম কিনে আনতো।
বোতলটা অটুট রয়ে গেছে। জারিনা এসে বোতলটা টেবিলের ওপর রাখল। তারপরে পাশের রান্নাঘরে গিয়ে গোটা দুয়েক গেলাস আর তিনটে কাপ নিয়ে এল।
চারজনের জন্যে পাঁচটা পাত্র। অনাদি ধরে নিল জারিনাও খাবে। বোতলের ছিপিটা খুলতে খুলতে অনাদি মনে মনে বলল, সাবাস জারিনা।
বোতলটা ভোলা হয়ে যেতেই জারিনা সেটা নিজের হাতে নিয়ে চারটে পাত্রে সমান করে ভাগ করে দিল। আর পঞ্চম পাত্রে খুব কম ঢালল।
ভদ্রতা করে অনন্ত বলল, আপনি নিজে এত কম নিলেন?
জারিনা বলল, এটা আমার নয় ডেভিডের।
চারপাত্র নিঃশেষ করে চার বন্ধু উঠে পড়ল। দরজা দিয়ে বেরোনোর সময় পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল ডেভিডের পাত্রের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে জারিনা তাকিয়ে রয়েছে। তার চোখে জল।