কিন্তু চাষের জমিতে এই বৈজ্ঞানিক কৃষির প্রবর্তন দেশের সমগ্ৰ ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে স্বতন্ত্রভাবে ঘটানো সম্ভব নয়। এই আংশিক পরিবর্তন নির্ভর করে সমগ্রের গতি ও পরিণতির উপর। যেদিন আমাদের দেশের ধনতান্ত্রিক জীবনকে নতুন পৃথিবীর উপযোগী করে ভেঙে গড়ার কাজ আরম্ভ হবে, কৃষির উন্নতির প্রকৃত চেষ্টাও সেই দিন আরম্ভ হবে, তার পূর্বে নয়। সোভিয়েট রুশিয়ার দৃষ্টান্তই প্রত্যক্ষ প্ৰমাণ। সেই ভাঙা-গড়ার মধ্যে চাষের জমির দখল-ভোগের ব্যবস্থা কেমন রূপ নেবে বা নেওয়া উচিত হবে, তার আগাম নকশা বা blue print তৈরি করতে বসা আজ পণ্ডশ্রম। যতদিন আমাদের দেশের হিতচিন্তার গুরুভার বিদেশিকেই কষ্ট করে বহন করতে হবে, ততদিন কমিশন বসবে, সমুদ্রপার থেকে মোট ভাতায় অজ্ঞাতনামা বিশেষজ্ঞেরা আসবেন, রিপোর্ট তৈরি হবে, চাকুরির সৃষ্টি হবে, আর দেশের অবস্থা ও দুরবস্থা যেমন আছে তেমনি থাকবে। তাই স্বাভাবিক। বিদেশির শ্রম লাঘব করে দেশেব ধনসৃষ্টি ও বণ্টনের ভার যেদিন দেশের লোককেই নিতে হবে তখন শুভবুদ্ধির যদি নিতান্ত অভাব না হয়, তবে চাষের জমির মালিকি স্বত্ব–ব্যবহার, অব্যবহার ও অপব্যবহারের অধিকার–কেউ পাবে না। সে নুতন ব্যবস্থার প্রধান প্র৩িবন্ধক হবে বর্তমান চাষি সম্প্রদায়; কারণ, চাষের জমির মালিকি স্বত্বের বড় অংশ তাঁরা পেয়েছে, তার চেয়ে বড় আর কিছু তাঁরা পায়নি এবং কল্পনা করতেও শেখেনি। সোভিয়েট রুশিয়ার ইতিহাস তারও দৃষ্টান্ত।