• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
সোমবার, জুন 2, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

জমির মালিক – অতুলচন্দ্র গুপ্ত

Jamir Malik By Atulchandra Gupta

  • বইয়ের নামঃ জমির মালিক
  • লেখকের নামঃ অতুলচন্দ্র গুপ্ত
  • বিভাগসমূহঃ গল্পের বই
১. চাষি ও চাষের জমি

চাষি ও চাষের জমি নিয়ে বাংলাদেশে বর্তমান আন্দোলনের উৎপত্তি হয়েছে মন্টেগু চেমস্ফোর্ড রিফর্মে, অর্থাৎ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ১৯১৯ সালের ভারত-শাসন আইনে। গত এক নম্বর মহাযুদ্ধের অবসানের পূর্বেই বেশ বোঝা গেল, মর্লি-মিন্টো নামাঙ্কিত যে শাসনপদ্ধতি ভারতবর্ষে চলছিল ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষেরা তার বদল ঘটাবেন। ফলে কোনও কোনও বিষয়ে আইন করার সামান্য কিছু ক্ষমতা ভারতবাসীর হাতে আসবে। কিন্তু এই সামান্য উদ্দেশ্যের উপায়স্বরূপে আইনসভাগুলির সভ্যসংখ্যা বাড়বে একটু অসামান্য রকমে। এবং অনুপাকৃত তার চেয়েও অনেক বেশি বাড়ানো হবে ভোটদাতাদের সংখ্যা, যাদের ভোট কুড়িয়ে শাসনপরিষদে আসন পাওয়া যাবে। এদেশের বেশির ভাগ লোক চাষি। যে গুণে ভোটের অধিকার আসবে তাতে ভোটদাতাদের তালিকায় চাষির সংখ্যা হবে বেশ মোটা রকমের। তাঁরা যদি দল বাঁধতে পারে তবে তাদের ভোট উপেক্ষা করা বেশির ভাগ সভ্যপদপ্রার্থীর পক্ষেই সম্ভব হবে না। দেশময় সাড়া পড়ে গেল। বিশেষ করে বাংলাদেশের কথাই বলছি। জমিদারেরা বহু সভা করে প্রমাণ করলেন, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সওয়াশো বছরের পুরাতন স্বীকৃতিতে তাঁরা যে শুধু চাষের জমির মালিক তা নন, তারাই হচ্ছেন চাষিদের স্বভাবসংগত নেতা, natural leaders of the people। কারণ, ও-কথাটা আইনে না। হোক তখনকার দলিল-দস্তাবেজে কোনও কোনও ইংরেজ রাজপুরুষ ব্যবহার করেছিলেন। জমিদারের স্বার্থ ও চাষির স্বাৰ্থ এক; অর্থাৎ জমিদারের স্বার্থই চাষির স্বাৰ্থ, চাষির হিতই জমিদারের হিত। যদস্তু হৃদয়ং মম তদন্তু হৃদয়ং তব। চাষিদের প্রকৃত স্বাৰ্থসিদ্ধি হবে তাঁরা যদি ভোট দিয়ে জমিদারদের বেশি সংখ্যায় আইনসভায় পাঠায়। ঘরভেদী দুষ্ট লোকের কথায় চাষিরা যেন কান না দেয়। দুষ্ট লোকের অভাব ছিল না। দেশময় রায়তদের সভায় তাঁরা প্রমাণ করতে লাগল যে, বাংলার চাষির যত দুঃখ তার মূলে বাংলার জমিদার। জমির সঙ্গে এরা কোনও সম্পর্ক রাখে না, সম্পর্ক শুধু জমির খাজনার সঙ্গে, অথচ এরাই জমির মালিক। সেই মালিকত্বের জোরে রায়তের খাজনা এরা ক্ৰমাগত বাড়িয়ে চলেছে, জমি যেন ইন্ডিয়া রবার। রায়ত ইচ্ছামতো তার জমি বিক্রি করতে পারে না, জমিদারকে দিতে হবে উচু নজর; নইলে জমি থেকে উচ্ছেদ। নিজের জমির গাছ রায়ত নিজে কেটে নিতে পারবে না, ঝড়ে-পড়া গাছও নিতে পারবে না; কারণ তারও মালিক জমিদার। নিজের জমিতে রায়ত ইচ্ছামতো পাকাবাড়ি করতে পারবে না, পুকুর কাটতে পারবে না, এ রকম আইনি অত্যাচার তো আছেই, তার উপর বে-আইনি অত্যাচারের শেষ নেই–জমিদারবাবুদের ও তাদের আমলাবাবুদের। এ সব বন্ধ করো। জমির খাজনার উচিত হার ঠিক করে খাজনা চিরকালের জন্য বেঁধে দাও, তার যেন আর বৃদ্ধি না হয়। জমিদারদের রাজস্বের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আছে। রায়তের খাজনারও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হোক। জমির মালিকি স্বত্ব দেওয়া হোক রায়তকে, যাতে সে যদৃচ্ছা জমির ভোগ-ব্যবহার দান-বিক্রি করতে পারে। জমিদার থাকবে শুধু নির্দিষ্ট খাজনার মালিক, অর্থাৎ খাজনা আদায় করে রাজস্ব দেবার তহশীলদারির মুনাফার মালিক। তার অতিরিক্ত তাদের আর কিছু প্ৰাপ্য নয়। চাষের জমি তার সে-জমি যে চাষ করে শস্য ফলায়। ‘স্থাণুচ্ছেদস্য কেদারমাহুঃ শল্যবতো মৃগম’। বনের পশু বাণ দিয়ে যে মারে সে পশু তার, শস্যের খেত শস্যের জন্য যে তৈরি করে সে-খেতের জমিও তার। এইসব পরিবর্তন ঘটিয়ে বাংলার চাষিকে যদি চাষের জমির মালিক করা যায়, আর তার খাজনার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়, তবে তার কোনও দুঃখই থাকবে না। তার গোয়ালভরা গোরু আর গোলােভরা ধানে সোনার বাংলা প্রকৃতই সোনার বাংলা হয়ে উঠবে। এর উপায় হচ্ছে যে-সব রােয়ত-হিতৈষীরা সভা করে রায়তদের তাদের হিত বোঝাচ্ছেন ভোট দিয়ে বেশি সংখ্যায় তাদের আইনসভায় পাঠানো। যাতে রায়তদের সুবিধামতো আইন পরিবর্তন তাঁরা ঘটাতে পারে। যাদের আইনসভার সভ্য হবার, বা আত্মীয়বন্ধুদের সেখানে পাঠাবার কোনও অভিপ্ৰায় ছিল না, তাদেরও অনেকে এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এই ভরসায় যে, রায়তেরা দল বাঁধলে নতুন আইনসভায় আইন মারফত রায়তের কিছু উপকার হতে পারে। আর, বাংলার রায়তের উপকার গোটা বাংলাদেশের উপকার। এই সাময়িক আন্দোলন বাংলা ভাষায় একটি স্থায়ী সাহিত্যিক ছাপ রেখে গেছে–শ্ৰীযুক্ত প্রমথ চৌধুরীর ‘রায়তের কথা’ ও রবীন্দ্রনাথের লেখা তার ভূমিকা। এ আন্দোলন যে বাঙালির মনের অন্তস্তলে নাড়া দিয়েছিল এ তারই প্ৰমাণ।

মহাত্মার নন-কো-অপারেশন আন্দোলন আরম্ভ হয়েছিল। ১৯১৯ সালের আইনে প্রতিষ্ঠিত আইনসভাগুলির সঙ্গে অসহযোগ উপলক্ষ করে। সুতরাং, কংগ্রেস প্রারম্ভে এ সভাগুলি বর্জন করল। তার ফলে অন্তত বাংলাদেশে যে স্বাদগন্ধহীন আইনসভার সৃষ্টি হল ভালমন্দ কোনও কাজ তার সাধ্য ও বুদ্ধির অতীত। চাষি ও চাষের জমি নিয়ে বিশেষ কোনও আলোচনা সে সভায় উঠল না। এবং, অসহযোগ আন্দোলনের বিজ্ঞাপিত ফল–‘ছ’মাসে স্বরাজ–যখন হাতে হাতে ফলিল না, যেমন প্ৰায় আন্দোলনের-ই ফলে না, তখন দেশব্যাপী দেখা দিল নিরাশা ও অবসাদের ভাব। তার প্রতিক্রিয়ায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ও পণ্ডিত মতিলাল কংগ্রেসের মধ্যে স্বরাজ্যদল গড়ে তুললেন, তার মূল কর্মপদ্ধতি হল ১৯১৯ সালের আইনের আইনসভাগুলিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দখল করে তাদের আচল করা, অর্থাৎ ওই আইনের শাসনপ্ৰথাকে ব্যৰ্থ করা। অসহযোগ বাইরে থেকে ভিতরে নেওয়া, বর্জনের নীতিকে বিনাশের রীতিতে রূপান্তরিত করা। এই প্ৰস্তাবের স্বপক্ষে ও বিপক্ষে কংগ্রেসে দু-দল দেখা দিল। প্র-গতি ও অ-গতি, প্রে-চেঞ্জার ও নো-চেঞ্জার, দলের অনেক ঝগড়াঝাঁটি ও গালমন্দের পর কংগ্রেসের অনুমতি পেয়ে পরবতী নির্বাচনে স্বরাজ্যদল আইনসভাগুলিতে ঢুকলেন, বাংলাদেশে মোটের উপর মোটা সংখ্যায়। প্রথমে কিছুকাল গেল ও সভাকে আঁচল করার চেষ্টায়। কতক সাফল্য ও মোটের উপর অসফলতার মধ্য দিয়ে শেষটা স্বরাজ্যদল হল আইনপরিষদে গভর্নমেন্টের বিরুদ্ধ দলের প্রধান দল–যে পরিণতি পূর্ব থেকে অনুমান করা কঠিন ছিল না। এমনধারা অবস্থায়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর পর, ংলা পরিষদে বাংলার প্রজা ও জমিদার অর্থাৎ চাষি ও খাজনাগ্রাহীদের স্বত্বাব্স্বত্বের ১৮৮৫ সালের মূল আইনের কতকগুলি ব্যবস্থার পরিবর্তন করে ১৯২৮ সালে স্বরাজ্যদলের সহযোগিতা ও সহায়তায় এক আইন পাশ হল। নূতন আইনে চাষের জমির গাছে চাষি সম্পূর্ণ স্বত্ব পেল; সে জমির গাছ সে ইচ্ছামতো কেটে নিতে কি ঝড়ে বা অন্য রকমে পড়ে গেলে আত্মসাৎ করতে পারবে–জমিদারকে নজর না দিয়ে। চাষের জমিতে সে পাকা বাড়ি করতে পারবে নিজের ও পরিবারের লোকদের বসবাসের জন্য। পুকুর কাটতে পারবে নিজেদের পানীয় জলের জন্য। ইতিপূর্বে আইন ছিল চাষের বিঘ্ন ঘটালে চাষি প্রয়োজনমতো জমির গাছ কাটতে পারবে কিন্তু সে গাছ নিজে নিতে পারবে না, সে গাছ নেবে জমির জমিদার। পূর্বের আইনে চাষের জমিতে চাষি বাসের জন্য বাড়ি তৈরি করতে পারত, কিন্তু সে বাড়ি হওয়া চাই চাষির প্রয়োজনের উপযোগী, এবং সম্পূর্ণ পাকা বাড়ি চাষির প্রয়োজনের অতিরিক্ত। সে আইনে চাষের জমিতে চাষি পুকুর কাটতে পারত চাষের কাজে প্রয়োজন হলে এবং চাষে নিযুক্ত মানুষ ও পশুর প্রয়োজনে, নিজের ও পরিবারের লোকদের পান-মানের প্রয়োজনে নয়। কেউ যদি মনে করেন যে, চাষিকে যাদৃচ্ছিা গাছ কাটতে দিলে জঙ্গল লোপাট হওয়ার ফলে চাষের অবনতি ঘটে, কি ক্ৰমাগত পুকুর কাটার ফলে চাষের জমির লাঘব হয়, এবং সাধ্যের অতিরিক্ত খরচে বাড়ি করে চাষি ঋণগ্রস্ত হতে পারেএসব অমঙ্গল থেকে দেশ ও চাষিকে রক্ষা করাই ছিল ও-রকম আইনের উদ্দেশ্য, তবে তিনি মস্ত ভুল করবেন। দেশের হিত কি চাষির অনিষ্টের সঙ্গে ও-সব বিধিনিষেধের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, জমিদারকে নজরের টাকা গুণে দিতে পারলেই ও-সব কোনও কাজেই চাষির আর বাধা থাকত না। এ সকল বিধিব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ছিল বিশুদ্ধ ন্যায়শাস্ত্রের উপর; ওগুলি laws of pure reason। জমিদার জমির মালিক। মালিকি স্বত্বের অর্থই হচ্ছে বস্তুকে যতরকমে সম্ভব ব্যবহার ও তা থেকে যত কিছু লাভের অধিকার। এ অধিকারের যতটুকু মালিক অন্যকে দেবে কেবল ততটুকু মাত্র তার অধিকার হবে, বাকি অধিকার মালিকের থেকে যাবে। জমিদার তার মালিকি স্বত্বের জমি চাষিকে দিয়েছে চাষের জন্য, খাজনার বিনিময়ে। সুতরাং চাষের জন্য যে ব্যবহার প্রয়োজন এবং চাষ করে যা লাভ সম্ভব, তাতেই মাত্ৰ চাষির অধিকার। এর বেশি অধিকার কি লাভ যদি সে চায়–যেমন গাছ কেটে নেবার, কি পাকা বাড়ি করবার, কি ইচ্ছামতো পুকুর কাটবার, তবে সে অধিকার জমির মালিকের কাছ থেকে খাজনার অতিরিক্ত আরও দাম দিয়ে কিনে নিতে হবে। এই দামের ভদ্রতা-সংগত নাম নজর বা সেলামি। ন্যায়ের নির্ভুল যুক্তি, এতে দেশের হিতাহিতের কোনও প্রশ্ন নেই। ১৯২৮ সালের নূতন আইনে জমিদারের খাজনা বাড়ীৰার ক্ষমতার কোনও লাঘব হল না, পূর্বের ক্ষমতাই বহাল থাকল। আন্দোলনটা খুব বেশি হয়েছিল চাষের জমি চাষির ইচ্ছামতো দান-বিক্রির দাবি নিয়ে। সুতরাং নুতন আইনে চাষিকে সে ক্ষমতা দেওয়া হল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা হল যে, সে-জন্য জমিদারকে জমির দামের শতকরা কুড়ি টাকা নজর দিতে হবে। পূর্বের আমলে যখন জমিদারের বিনা সম্মতিতে জমি বিক্রি করলে জমিদারের ইচ্ছা হলে ক্রেতাকে প্ৰজা স্বীকার না করে তাকে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে পারতেন তখনও শতকরা নিরানব্বইটি জায়গায় মোটের উপর ওই পরিমাণ নজর নিয়েই জমিদার ক্রেতাকে প্ৰজা স্বীকার করে নিতেন, যদি না কোনও কারণে জমিদার কি আমলাবাবুদের ক্রেতাকে কিঞ্চিৎ ‘শিক্ষা’ দেবার মতলব থাকত। কারণ, জমিদার জমি চায় না, চায় টাকা–আর চাষি চায় জমি। কিন্তু তখন এ টাকাটা আদায় হত কিছু দেরিতে, অল্পবিস্তর দর-কষাকষির পর। নুতন আইনে এই নজরের টাকা হাতে হাতে আদায়ে গভর্নমেন্ট হলেন জমিদারের তহশীলদার। নজরের টাকা রেজেষ্টি আপিসে জমা না দিলে বিক্রির দলিল রেজেষ্টি হবে না, এবং বিনা রেজেক্টিতে বিক্রি অসিদ্ধ। টাকাটা জমিদারের কাছে পৌঁছে দেবার ভার গভর্নমেন্ট নিজে নিলেন, অবশ্য চাষির কাছ থেকে খরচাটা নিয়ে। মোটের উপর নূতন আইনে জমিদারের আর্থিক ক্ষতি না হয়ে বরং লাভই হল। কিন্তু তবুও এটা তার মালিকি স্বত্বের উপর হস্তক্ষেপ, খেয়ালমাফিক ক্রেতাকে বহাল কি উচ্ছেদের অধিকারের সংকোচ। এর ক্ষতিপূরণ দরকার। সুতরাং বিধান হল জমিদার ইচ্ছা করলে নজরের টাকাটা না নিয়ে ক্রেতাকে জমির দাম ও তার উপর শতকরা দশ টাকা বেশি দিয়ে আদালতযোগে জমি খাস করে নিতে পারবেন। অর্থাৎ, কিছু টাকা খরচের বদলে প্রয়োজনমতো ক্রেতাকে ‘শিক্ষা’ দেবার পূর্ব ক্ষমতা জমিদারের বহাল থাকল, এবং অবস্থাবিশেষে খাস করার ভয় দেখিয়ে, মোচড় দিয়ে কিছু বেশি নজর আদায়ের পথটাও খোলা রইল। কারণ, পূর্বেই বলেছি, জমির প্রয়োজন জমিদারের কিছুমাত্র নেই, প্রয়োজন টাকার; আর চাষি জমি বেচে কিনে লাভ করতে চায় না, তার নিতান্ত প্রয়োজন জমির। ইংরেজি প্ৰবচনের কথায়, বাংলার চাষি চেয়েছিল রুটি, পেল পাথরের ঢেলা।

Page 1 of 6
12...6Next
Previous Post

নদীপথে – অতুলচন্দ্র গুপ্ত

Next Post

কাব্যজিজ্ঞাসা – অতুলচন্দ্র গুপ্ত

Next Post

কাব্যজিজ্ঞাসা - অতুলচন্দ্র গুপ্ত

ইতিহাসের মুক্তি - অতুলচন্দ্র গুপ্ত

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In