তবে এখন হিলিয়ামের পরিমাণ কম এবং দেখতে দেখতে 100 মিলিয়ন বছরের মাঝে সেটা ফুরিয়ে যাবে। সূর্যের কেন্দ্রে শক্তি তৈরি বন্ধ হয়ে যাবে তাই কার্বন নিউক্লিয়াসগুলো মহাকর্ষবলে কেন্দ্রীভূত হতে থাকবে এবং তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে এত বেড়ে যাবে যে দ্বিতীয়বারের মতো কেন্দ্রের বাইরে থাকা হাইড্রোজেন হিলিয়ামে রূপান্তরিত হতে শুরু করবে–দ্বিতীয়বারের মতো সূর্যটা রেড জায়ান্টে পরিণত হয়ে যবে। এবারে সেটি হবে আগের থেকেও বড়, তার আকার বৃহস্পতির কক্ষপথ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে যাবে। এভাবে 100 মিলিয়ন বছর কেটে যাবার পর সূর্য তার গ্যাসটুকু হারাতে শুরু করবে। মাত্র এক লক্ষ বৎসরের ভেতর সূর্যের বাইরের অংশটুকু গ্যাস হয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করবে।
ভেতরের কেন্দ্রটুকু তখন আবার সংকুচিত হতে শুরু করেছে। তার তাপমাত্রাও বাড়তে বাড়তে 100,00 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাবে। কিন্তু এখন আর নূতন করে কোনো বিক্রিয়া শুরু হবে না। সূর্যের এই সংকুচিত কেন্দ্রের আকার এখন মাত্র কয়েক হাজার মাইল, পৃথিবীর কাছাকাছি। এটি এখন মৃত একটি উত্তপ্ত নক্ষত্র–এর নাম হোয়াইট ডোয়ার্ফ বা শ্বেত বামন। (যদি সূর্যের ভর বেশি হতো তাহলে আরো চমকপ্রদ কিছু বিষয় ঘটত কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার।)
সূর্যের বাকি জীবনটুকু অত্যন্ত সাদামাটা। উত্তপ্ত ক্ষুদ্র নক্ষত্রটি শীতল হতে শুরু করবে। কয়েক বিলিয়ন বৎসর নিয়ে সেটা ধীরে ধীরে শীতল হবে–তার থেকে তখন আলো বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে, এই নক্ষত্রটিকে তখন বলা হবে ব্ল্যাক ডোয়ার্ফ বা কালো বামন!
কালো বামন আসলে অত্যন্ত ছোট জায়গার মাঝে মহাকর্ষবলের প্রচণ্ড তাপের মাঝে আটকে রাখা কার্বন নিউক্লিয়াস। কার্বন নিউক্লিয়াসকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হলে সেটা কেলাসিত হয়ে স্ফটিক বা ক্রিস্টাল হয়ে যায়। সেই ক্রিস্টালকে আমরা বলি হীরক বা ডায়মন্ড।
কাজেই আমরা এখন যেটাকে সূর্য হিসেবে দেখছি–আজ থেকে আট-দশ বিলিয়ন বছর পরে সেটা হয়ে যাবে পৃথিবীর আকারের একটি অতিকায় হীরক খণ্ড। কেন জানি মনে হয় আমাদের পরিচিত সূর্যের মৃত্যুর পর হীরক খণ্ড হিসেবে কাটিয়ে দেয়াই বুঝি তার জন্যে মানানসই একটি জীবন!