যঃ তু আত্মরতিঃ এব স্যাত্ আত্মতৃপ্তঃ চ মানবঃ ।
আত্মনি এব চ সনতুষ্টঃ তস্য কার্য্যম্ ন বিদ্যতে ।।১৭
অর্থ-যে ব্যক্তি আত্মাতে প্রীত আত্মাতেই তৃপ্ত আত্মতেই সন্তুষ্ট তার কোন কর্তব্য নেই।
ন এব তস্য কৃতেন অর্থ ন অকৃতেন ইহ কশ্চন ।
ন চ তস্য সর্ব ভূতেষু কশ্চিত্ অর্থ ব্যপাশ্রয়ঃ ।।১৮
অর্থ-আত্মনন্দ অনুভবকারি ব্যক্তির ইহজগতে ধর্ম অনুষ্ঠানের কোন প্রয়োজন নেই, এবং কর্ম না করারও কোন কারন নেই।তাকে অন্য কোন প্রাণীর উপর নির্ভর করতেও হয় না।
তস্মাত্ অসক্তঃ সততম্ কার্যম্ কর্ম সমাচর ।
অসক্তঃ হি আচরন কর্ম পরম্ আপ্নোতি পুরুষঃ ।।১৯
অর্থ-অতএব কর্মফলের প্রতি আসক্তি রহিত হয়ে কর্তব্য কর্ম সম্পাদন কর, অনাসক্ত হয়ে কর্ম করার ফলেই পরা ভক্তি লাভ করা যায়।
কর্মনা হি সংসিদ্ধিম্ আস্থিতাঃ জনকাদয়ঃ ।
লোক সংগ্রহম্ এব অপি সংপশ্যন কর্তুম্ অর্হসি ।।২০
অর্থ-জনক প্রভৃতি মহারাজরাও কর্ম দ্বারা ভক্তিরুপ সংসিদ্ধি প্রাপ্তি হয়েছিল,অতএব জনসাধারনকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তোমার কর্ম করা উচিত্।
যত্ যত্ আচরতি শ্রেষ্ঠ তত্ তত্ এব ইতর জনঃ ।
সঃ যত্ প্রমানম্ কুরুতে লোকঃ তত্ অনুবর্ততে ।।২১
অর্থ-শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা যে ভাবে আচরন করেন সাধারন মানুষেরাও তার অনুকরন করেন। তিনি যা প্রমান বলে স্বীকার করেন অন্য লোকে তারই অনুকরন করে।
ন মে পার্থ অস্তি কর্তব্যম্ ত্রিষু লোকেষু কিঞ্চন ।
ন অনবাপ্তম্ অবাপ্তব্যম্ বর্ত এব চ কর্মণি ।।২২
অর্থ-হে পার্থ এই ত্রিজগতে আমার কিছুই কর্তব্য নেই। আমার অপ্রাপ্ত কিছু নেই এবং প্রাপ্তব্যও কিছু নেই তবুও আমি কর্মে ব্যপৃত আছি।
যদি হি অহম্ ন বর্তেয়ম্ জাতু কর্মনি অতন্দ্রিতঃ ।
মম্ বর্ত্ম অনুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ ।।২৩
অর্থ-হে পার্থ আমি যদি অলস হয়ে শুভকর্মে প্রবৃত্ত না হই তবে আমার অনুবর্তি হয়ে সমস্ত মানুষই কর্ম ত্যাগ করবে।
উত্সীদেয়ু ইমে লোকাঃ ন কুর্যাম্ কম চেত্ অহম্ ।
সঙ্করস্য চ কর্তা স্যাম উপহন্যাম্ ইমে প্রজাঃ ।।২৪
অর্থ-আমি যদি কর্ম না করি সমস্ত লোক উত্সন্ন হবে। আমি বর্নসঙ্কর আদি সামাজিক বিশৃঙ্খলার কারন হব এবং তার ফলে সমস্ত প্রজা বিনষ্ট হবে।
সক্তা কর্মনি অবিদ্ধাংসঃ যথা কুর্বন্তি ভারত ।
কুর্যাত্ বিদ্ধান তথা অসক্তঃ চিকীর্ষুঃ লোক সংগ্রহম্ ।২৫।
অর্থ-হে ভারত অজ্ঞানিরা যেমন কর্ম ফলের প্রতি আসক্ত হয়ে তাদের কর্তব্য কর্ম করে তেমনী জ্ঞানিরা অনাসক্ত হয়ে প্রকৃত পথে মানুষকে পরিচালিত করার জন্য কর্ম করেন।
ন বুদ্ধি ভেদম্ জনয়েত্ অজ্ঞানাম্ কর্মসংঙ্গিনাম্ ।
জোযয়েত্ সর্ব কর্মানি বিদ্বান যুক্তঃ সমাচরম্ ।।২৬
অর্থ-জ্ঞানবান ব্যক্তিরা কর্মাসক্ত জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের বুদ্ধি বিভ্রান্ত করে ন। তারা ভক্তিযুক্ত চিত্তে সমস্ত কর্ম অনুষ্ঠান করে জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের কর্মে প্রবৃত্তি করে।
প্রকৃতেঃ ক্রিয়া মানানি গুনৈঃ কর্মানি সর্বশঃ ।
অহংঙ্কার বিমুঢ় আত্মা কর্তা অহম্ ইতি মন্যতে ।।২৭
অর্থ-মোহাচ্ছন্ন জীব প্রাকৃত অহংঙ্কার বশত জড়া প্রকৃতির ত্রিগুন দ্বারা ক্রিয়মান সমস্ত কার্য্যকে স্বীয় কার্যবলে মনে করে আমি কর্তা এই রকম অভিমান করে।
তত্তবিত্ তু মহাবাহো গুনকর্ম বিভাগয়োঃ ।
গুনাঃ গুনেষু বর্তন্তে ইতি মত্বা ন সজ্জতে ।।২৮
অর্থ-হে মহাবাহো তত্তজ্ঞ ব্যক্তি ভগবদ্ভক্তিমুখী কর্ম এবং সকাম কর্মের পার্তক্য ভালভবে অবগত হয়ে কখনো ইন্দ্রিয় সুখ ভোগাত্মক কার্য্যে প্রবৃত্ত হন না।
প্রকৃতৈঃ গুন সংমূঢ়া সজ্জন্তে গুনকর্মষু ।
তান অকৃত্স্নবিদঃ মন্দান্ কৃত্স্নবিত্ ন বিচাল্যতে ।।২৯
অর্থ-জড়া প্রকৃতির ত্রিগুনের দ্বারা মোহাচ্ছন্ন হয়ে অজ্ঞান ব্যক্তিরা জাগতিক কার্য্য কলাপে প্রবৃত্ত হয়। কিন্তু তাদের সেইকর্ম নিকৃষ্ট হলেও তত্তজ্ঞানি পুরুষেরা তাদের বিচলিত করে না।
ময়ি সর্বানি কর্মানি সংনস্য অধ্যাত্ম চেতসা ।
নিরাশীঃ নির্মমঃ ভূত্বা যুধ্যস্য বিগতজ্বরঃ ।।৩০
অর্থ-হে অর্জুন তোমার সমস্ত কর্ম আমাকে সমর্পন করে আধ্যত্ম চেতনা সম্পন্ন হয়ে মমতা শুন্য নিস্কাম ও শোক শুন্য হয়ে যুদ্ধ কর।
যে মে মতম্ ইদম্ নিত্যম অনুতিষ্ঠন্তি মানবাঃ ।
শ্রদ্ধাবন্ত অনুসুয়ন্ত মূচ্যন্তে তে অপি কর্মভিঃ ।।৩১
অর্থ-আমার নির্দ্দেশ অনুসারে শ্রদ্ধাবান এবং মাত্সর্য রহিত যিনি তার কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান করেন, তিনি কর্ম বন্ধন থেকে মুক্তহন।
যে তু অভ্যসুয়ন্ত ন অনুতিষ্ঠন্তি মে মতম্ ।
সর্বজ্ঞান বিমূঢ়ান তান বিদ্ধি নষ্টান অচেতসাঃ ।।৩২
অর্থ-কিন্ত যারা অসুয়া পুর্বক আমার এই উপদেশ পালন করে না তাদের সমস্ত জ্ঞান থেকে বঞ্চিত বিমূঢ় এবং পরমার্থ লাভের সকল প্রচেষ্টা থেকে ভ্রষ্ট বলে জানবে।
সদৃশম্ চেষ্টতে সস্ব্যাঃ প্রকৃতেঃ জ্ঞানবান অপি ।
প্রকৃতিম্ যান্তি ভূতানি নিগ্রহঃ কিম্ করিষ্যতি ।।৩৩
অর্থ-গুনবান ব্যক্তিও তার প্রকৃতি অনুসারে কার্যকরেন কারন সকলেই তাদের স্বীয় স্বভাবকে অনুগমন করেন। সুতরাং দমন করে কি লাভ হবে?
ইন্দ্রিয়স্য ইন্দ্রিয়স্যার্থে রাগ দেষৌ ব্যবস্থিতৌ ।
তয়োঃ ন বশম্ আগচ্ছেত্ তৌ হি অস্য পরিপন্থিনৌ ।।৩৪
অর্থ-সমস্ত জীবই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুতে আসক্তি অথবা বিরক্তি অনুভব করে, কিন্তু এইভাবে ইন্দ্রিয় এবংইন্দ্রিয়ের বিষয়ের বশীভুত হওয়া উচিত্ নয়, কারন তা পারমার্থিক প্রগতির পথে প্রতিবন্ধক।