ন এনম ছিন্দন্তি শাস্ত্রানি ন এনম্ দহতী পাবকঃ ।
ন চ এনম ক্লেদয়ন্তি আপঃ ন শোষয়তি মারুতঃ ॥২৩
অর্থ-আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না আগুনে পোড়ান যায় না জলে ভেজান যায় না অথবা হাওয়ায় শুকানোও যায় না।
অচ্ছেদ্যঃ অয়ম অদাহ্যঃ অয়ম অক্লেদ্যঃ অশোষ্যঃ এব চ ।
নিত্য সর্বগত সর্ব-গতঃ স্থাণুঃ অচলঃ অয়ম্ সনাতনঃ ॥২৪
অর্থ-এই আত্মা অচ্ছেদ্য অদাহ্য অক্লেদ্য এবং অশোষ্য। তিনি চিরস্থায়ি সর্ব ব্যপ্ত অপরিবর্তনীয় অচল এবং সনাতন।
অব্যক্তঃ অয়ম অচিন্ত্যঃ অয়ম অবিকার্যঃ অয়ম উচ্যতে ।
তস্মাত্ এবম বিদিত্বা এনম ন অনুশোচিতুম্ অর্হসি ॥২৫
অর্থ-এই আত্মা অব্যক্ত অচিন্ত ও অবিকারী বলে শাস্ত্রে উক্ত হয়েছে। অতএব এই সনাতন স্বরুপ অবগত হয়ে তুমি দেহীদের প্রতি শোক পরিত্যাগ কর।
অথ চ এনম্ নিত্যজাতম্ নিত্যম্ বা মন্যসে মৃতম্ ।
তথাপি ত্বম মহাবাহো ন এনম শোচিতুম অর্হসি ॥২৬
অর্থ-হে মহাবাহো আর তুমি যদি মনে কর যে আত্মার বার বার জন্ম হয় বা মৃত্যু হয় তা হলেও তোমার শোক করার কোন কারন নেই।
জাতস্য হি ধ্রুবঃ মৃত্যু ধ্রুবম্ জন্ম মৃতস্য চ ।
তস্মাত্ অপরিহার্যে অর্থে ন ত্বম্ শোচিতুম অর্হসি ॥২৭
অর্থ-যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবি এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। অতএব তোমার কর্তব্য সম্পাদন করার সময় শোক করা উচিত্ নয়।
অব্যক্ত-আদীনি ভূতানি ব্যক্ত মধ্যানি ভারত ।
অব্যক্ত নিধনানি এব তত্র কা পরিবেদনা ॥২৮
অর্থ-হে ভারত সমস্ত জীব উত্পন্ন হওয়র আগে অপ্রকাশিত ছিল। তাদের স্থিতি কালে প্রকাশিত থাকে এবং বিনাশের পর আবার অপ্রকাশিত হয়ে যায়। সুতরাং সেজন্য শোক করার কি কারন।
আশ্চর্য্য বত্ পশ্যতি কশ্চিত্ এনম্
আশ্চর্য-বত্ বদতি তথা এব চ অন্যঃ ।
আশ্চর্য-বত্ চ এনম্ অন্য শৃনোতি
শ্রুত্বা অপি এনম্ বেদ ন চ এব কশ্চিত্ ॥২৯
অর্থ-কেউ আত্মাকে আশ্চার্যবত্ দর্শন করেন,কেউ আশ্চর্য ভাবে বর্ননা করেন আবার কেউ আশ্চর্য জ্ঞানে শ্রবন করেন আর কেউ জেনে শুনেও বুজতে পারে না।
দেহী নিত্যম অবধ্যঃ অয়ম্ দেহে সর্বস্য ভারত ॥
তস্মাত্ সর্বানি ভূতানি ন ত্বম শোচিতুম অর্হসি ॥৩০॥
অর্থ-হে ভারত প্রানিদের দেহে অবস্তিত আত্মা সর্বদাই অবধ্য।সেজন্য কোন প্রাণীর দেহ ত্যাগে তোমার শোক করা উচিৎ নয়।
স্বধর্মম অপি চ আবেক্ষ্য বিকম্পিতুম অর্হসি ।
ধর্মাত্ হি যুদ্ধাত্ শ্রেয়ঃ অন্যাত্ ক্ষত্রিয়স্য ন বিদ্যতে ॥৩১
অর্থ-ক্ষত্রিয় রুপে তোমার স্বধর্ম বিবেচনা করেও তোমার দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া উচিত্ নয়। কারন ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করা থেকে ক্ষত্রিয়ের পক্ষে মঙ্গলকর আর কিছুই নাই।
যদৃচ্ছয়া চ উপপন্নম স্বর্গদ্বারম্ ন করিষ্যসি ।
সুখিনঃ ক্ষত্রিয়াঃ পার্থ লভন্তে যুদ্ধম্ ঈদৃশম্ ॥৩২
অর্থ-হে পার্থ স্বর্গদ্বার উন্মোচনকারী এই প্রকার ধর্মযুদ্ধে অংশ গ্রহন করার সুযোগ না চাইতেই যে সব ক্ষত্রিয়ের কাছে আসে, তারা সুখী হন।
অথ চেত্ ত্বম ইমম ধর্মম সংগ্রামম ন করিষসি ।
ততঃ স্বধর্মম কীর্তিম্ চ হিত্বা পাপম্ অবাস্প্যসি ॥৩৩
অর্থ-কিন্তু তুমি যদি এই ধর্মযুদ্ধ না কর তা হলে তোমার স্বীয়কীর্তি থেকে ভ্রষ্ট হয়ে পাপ ভোগ করবে।
অকীর্তিম্ চ অপি ভূতানি কথয়িষ্যন্তি তে অব্যয়ম্ ।
সম্ভাবিতস্য চ অকীর্তিঃ মরণাত্ অতিরিচ্যতে ॥৩৪
অর্থ-সমস্ত লোক তোমার কীর্তিহীনতার কথা বলবে এবং যে কোন মর্যাদাবান লোকের পক্ষে মৃত্যু অপেক্ষাও অত্যন্ত ক্ষতিকর এই অমর্যাদা।
ভয়াত্ রনাত্ উপতরম্ মত্স্যন্তে ত্বাম্ মহাঃরথাঃ ।
যেষাম চ ত্বম বহুমতঃ ভূত্বা যাস্যসি লাঘবম্ ॥৩৫
অর্থ-সমস্ত মহারথীরা মনে করেন যে তুমি ভয়পেয়ে যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করেছ এবং তুমি যাদের কাছে সম্মানিত ছিলে তারা তোমাকে তুচ্ছ তাছিল্য জ্ঞান করবে।
অবাচ্য বাদান বহুন বদিষ্যন্তি তব অহিত্যাঃ ।
নিন্দন্তঃ তব সামর্থন ততঃ দুঃখতরম্ নু কিম্ ॥৩৬
অর্থ-তোমার শত্রুরা তোমার সামর্থ্যের নিন্দা করে বহু অকথ্য কথা বলবে। তার চেয়ে অধিকতর দুঃখকর তোমার পক্ষে কি হতে পারে।
হতঃ বা প্রাপ্সসি স্বর্গম্ জিত্বা বা ভোক্ষ্যসে মহীম ।
তস্মাত্ উত্তিষ্ঠ কৌন্তেয় যুদ্ধায় কৃত নিশ্চয়ঃ ॥৩৭
অর্থ-হে কুন্তীপুত্র এই যুদ্ধে নিহত হলে তুমি স্র্গ লাভ করবে আর জয়ী হলে রাজ্য সুখ ভোগ করবে অতএব যুদ্ধের জন্য দৃঢ় সংকল্প হয়ে উত্থিত হও।
সুখ দুঃখে সমে কৃত্বা লাভালাভৌ জয়াজয়ৌ ।
ততঃ যুদ্ধায় যুজ্যস্ব ন এবম্ পাপম্ অবাপ্সসি ॥৩৮
অর্থ-সুখ-দুঃখ লাভ ক্ষতি জয় পরাজয়কে সমান জ্ঞান করে যুদ্ধ করলে তোমাকে পাপ ভোগী হতে হবে না।
এষা তে অবিহিতা সাংখ্যে বুদ্ধিঃ যোগে তু ইমাম্ শৃনু ।
বুদ্ধাঃ যুক্তঃ যয়া পার্থ কর্মবন্ধম্ প্রহাসসি ॥৩৯
অর্থ-হে পার্থ আমি তোমাকে সাংখ্য যোগের কথা বললাম এখন ভক্তি যোগ সম্বন্ধিনী বুদ্ধির কথা শ্রবন কর যার প্রভাবে তুমি কর্ম-বন্ধন থেকে মুক্ত হবে।
ন ইহ অভিক্রম্ নাশ অস্তি প্রত্যবায়ঃ ন বিদ্যতে ।
স্বল্পম্ অপি অস্য ধর্মস্য ত্রায়তে মহতঃ ভয়াত্ ॥৪০
অর্থ-ভক্তি য়োগের অনুশিলন কখনো ব্যর্থ হয় না এবং তার কোন ক্ষয় নাই। তার সল্প অনুষ্ঠান ও অনুষ্ঠাতাকে সংসাররুপ মহাভয় থেকে পরিত্রাণ করে।