যয়া স্বপ্নম ভয়ম্ শোকম্ বিষাদম্ মদম্ এব চ ।
ন বিমুঞ্চতি দুর্মেধা ধৃতিঃ সা পার্থ তামসী ।।৩৫
অর্থ-হে পার্থ যে ধৃতি স্বপ্ন ভয় শোক বিষাদ মদ ইত্যাদিকে ত্যাগ করে না সেই বুদ্ধিহীনা ধৃতিই তামসী।
সুখম্ তু ইদানীম ত্রিবিধম্ শৃনু মে ভরতর্ষভ ।
অভ্যাসাত্ রমতে যত্র দুঃখ অন্তম্ চ নিগচ্ছতি ।।৩৬
অর্থ-হে ভরতর্ষভ, এখন তুমি ত্রিবিধ সুখের বিষয় শ্রবন কর বদ্ধজীব পুনঃ পুনঃ অনুশিলন দ্বারা সেই সুখে রমন করে, এবং কোন কোন স্থলে সমস্ত দুঃখ থেকে সম্যক রুপে মুক্ত হয়।
যত্ তত্ অগ্রে বিষমিব পরিণামে অমৃত উপমম্ ।
তত্ সুখম্ সাত্ত্বিকম্ প্রোক্তম্ আত্মা বুদ্ধি প্রসাদজম্ ।।৩৭
অর্থ-যে সুখ প্রথম বিষের মত কিন্তু পরি নামে অমৃততুল্য, আত্মনিষ্ট বুদ্ধির নির্মলতা থেকে উত্পন্ন, সেই সুখ সাত্ত্বিক সুখ বলে কথিত হয়।
বিষয় ইন্দ্রিয় সংযোগাত্ যত্ তত্ অগ্রে অমৃতপমম্ ।
পরিনামে বিষমিব তত্ সুখম্ রাজসম্ স্মৃতম্ ।।৩৮
অর্থ-বিষয় ইন্দ্রিয়ের সংযোগের ফলে যে সুখ প্রথমে অমৃতের মত এবং পরিনামে বিষের মত অনুভব হয় তাকে রাজস সুখ বলা হয়।
যত্ অগ্রে চ অনুবন্ধে চ সুখম্ মোহনম্ আত্মনঃ ।
নিদ্রা আলস্য প্রমাদ উত্থম্ তত্ তমসম্ উদাহৃতম্ ।।৩৯
অর্থ-যে সুখ প্রথমে ও পরিনামে আত্মতত্ত্ব জ্ঞানরহিত, এবং যা নিদ্রা, আলস্য ও প্রমাদ থেকে উত্পন্ন হয়, তা তামসিক সুখ বলে কথিত হয়।
ন তত্ অস্তি পৃথিব্যাম্ বা দিবি দেবেষু বা পুনঃ ।
সত্ত্বম্ প্রকৃতিজৈঃ মুক্তম্ যত্ এভিঃ স্যাত্ এিভিঃ গুনৈঃ ।৪০
অর্থ-এই পৃথিবীতে মানুষদের মধ্যে অথবা স্বর্গের দেবতাদের মধ্যে এমন কোন জীব নেই যে প্রকৃতির গুন থেকে মুক্ত।
বাহ্মন ক্ষত্রিয় বিষাম্ শুদ্রানাম্ চ পরন্তপ ।
কর্মানি প্রবিভক্তানি স্বভাব প্রভাব প্রভবেঃ গুনৈঃ ।।৪১
অর্থ-হে পরন-প স্বভাবজাত গুন অনুসারে ব্রাহ্মন ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য এবং শুদ্রেরও কর্ম সমুহ পৃথক ভাবে বিভক্ত আছে।
শমঃ,দমঃ,তপঃ শৌচম্ ক্ষান্তি আর্জবম্ এব চ ।
জ্ঞানম্ বিজ্ঞানম্ অস্তিকম্ ব্রহ্ম কর্ম সভাবজম্ ।।৪২
অর্থ-শম, দম, তপ, শৌচ, ক্ষান্তি সরলতা, জ্ঞান,বিজ্ঞান ও আস্তিক্য এই কয়টি ব্রাহ্মনদের স্বভাবজ কর্ম।
শৌর্যম্ তেজঃ ধৃতিঃ দাক্ষ্যম্ যুদ্ধে চ অপি অপলায়নম্ ।
আনম্ ঈশ্বরম্ ভাবঃ চ ক্ষাত্রম্ কর্ম স্বভবজম্ ।।৪৩
অর্থ-শৌর্য,তেজ,ধৃতি, দক্ষ্যতা,যুদ্ধে অপরাম্মুখতা দানশীলতা ও শাসন ক্ষমতা এইগুলি ক্ষত্রিয়ের স্বভাব জাত কর্ম ।
কৃষি গোরক্ষা বানিজ্যম্ বৈশ্য কর্ম স্বভাবজম ।
পরিচর্যা আত্মকম্ কর্মঃ শুদ্রস্য অপি স্বভাবজম্ ।।৪৪
অর্থ-কৃষি, গোরক্ষা ও বানিজ্য এই কয়টি বৈশ্যের স্বাভাবিক কর্ম। পরিচার্যা শুদ্রের স্বভাবজাত কর্ম।
স্বে স্বে কর্মানি অভিরত সংসিদ্ধিম্ লভতে নরঃ ।
স্বকর্ম নিরতঃ সিদ্ধিম্ যথা বিন্দতি তত্ শৃনু ।।৪৫
অর্থ-স্বকর্মে নিয়ত ব্যক্তি স্বকর্মে অভিরত হয়ে যেভাবে সংসিদ্ধি লাভ করে, তা শ্রবন কর।
যতঃ প্রবৃত্তিঃ ভূতানাম্ যেন সর্বম্ ইদম্ ততম্ ।
স্বকর্মনা তম্ অভ্যর্চ্য সিদ্ধিম্ বিন্দতি মানবঃ ।।৪৬
অর্থ-যে পরমেশ্বর ভগবান থেকে সমস্ত জীবের উত্পত্তি, যিনি এই সমগ্র বিশ্ব ব্যপ্ত আছেন, তাকে মানুষ তার কর্মের দ্বারা অর্চনা করে সিদ্ধি লাভ করে।
শ্রেয়ান স্বধর্ম বিগুনঃ পরধর্মাত্ স্বনুষ্ঠিতাত্ ।
স্বভাব নিয়তম্ কর্ম কুর্বন ন আপ্নোতি কিল্বিষম্ ।।৪৭
অর্থ-উত্তম্ রুপে অনষ্ঠিত পরধর্ম থেকে অসম্যক রুপে অননিষ্ঠিত স্বধর্ম শ্রেয়। কারন স্বভাব অনুসারে কর্ম করলে মানুষ পাপের ভাগী হয়না।
সহজম্ কর্ম কৌন্তেয় স্বদোষম্ অপি ন ত্যজ্যম ।
সর্বরম্ভা হি দোষেন ধুমেন অগ্নি ইব আবৃতাঃ ।।৪৮
অর্থ-প্রতিটি কর্ম প্রচেষ্টাতেই-কিছুনা কিছু দোষ থাকে, ঠিক যেমন অগ্নি ধুমের দ্বারা আবৃত থাকে। তাই হে কৌন্তেয় দোষযুক্ত হলেও স্বধর্ম কখন ত্যাগ করা উচিত্ না।
অসক্তবুদ্ধিঃ সর্বত্র জিতাত্মা বিগতস্পৃহঃ ।
নৈস্কর্ম্য সিদ্ধিম্ পরমাম্ সন্নাসেন অধিগচ্ছতি ।।৪৯
অর্থ-জড় বিষয় অনাসক্ত সংযতচিত্ত এবং ভোগস্পৃহাশুন্য আত্মজ্ঞ ব্যক্তি
স্বরুপত কর্ম ত্যগপুর্বক নৈস্কর্ম রুপ পরম সিদ্ধি লাভ করবে।
সিদ্ধিম্ প্রাপ্ত যথা ব্রহ্ম তথা আপ্নোতি নিবোধ মে ।
সমাসেন এব কৌন্তেয় নিষ্ঠা জ্ঞানস্য যা পরা ।।৫০
অর্থ-হে কৌন্তে নৈস্কর্ম সিদ্ধি লাভ করে জীব যেমন জ্ঞানের পরানিষ্ঠারুপ ব্রহ্মকে লাভ করেন তা আমি সংক্ষেপে বলছি, শ্রবন কর।
বুদ্ধ্যা বিশুদ্ধয়া যুক্তঃ ধৃত্যা আত্মা নিয়ম্য চ ।
শব্দাদীন বিষয়ান ত্যাক্তা রাগ দ্বেষৌ ব্যুদস্য চ ।।৫১
বিবিক্তসেবী লঘ্যাশী যতবাক কায় মানসঃ ।
ধ্যানযোগপরঃ নিত্যম্ বৈরাগ্যম্ সমুপাশ্রিতঃ ।।৫২
অহংকারম্ বলম্ দর্পম্ কাম ক্রোধম্ পরিগ্রহম্ ।
বিমুচ্য নির্মমঃ শান্ত ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে ।।৫৩
অর্থ-বিশুদ্ধ বুদ্ধিযুক্ত হয়ে মনকে ধৃতির দ্বারা নিয়ত্রিত করে শব্দ আদি ইন্দ্রিয় বিষয় পরি ত্যাগ করে, রাগ, দ্বেষ বর্জন করে, নির্জন স্থানে বাস করে, অল্প আহার করে, দেহ, মন এবং বাক সংযত করে, ধ্যান যোগে যুক্ত হয়ে বৈরাগ্য আশ্রয় কওে, অহংঙ্কার, বল, দর্প, কাম, ক্রোধ, পরিগ্রহ থেকে সম্পুর্নরুপে মুক্ত, মমত্ব বোধশুন্য শান্ত পুরুষ আত্মজ্ঞান লাভে সমর্থ হন।