সদ্ভাবে সাধুভাবে চ সত্ ইতি এতত্ প্রজুয্যতে ।
প্রশস্তে কর্মণি তথা সচ্ছব্দঃ পার্থ যুজ্যতে ।।২৬
যজ্ঞে তপসি দানে চ স্থিতিঃ সত্ ইতি চ উচ্যতে ।
কর্ম চ এব তত্ অর্থিয়ম্ সত্ ইতি এব অভিধিয়তে ।।২৭
অর্থ-হে পার্থ সত্ভাবে ও সাধুভাবে সম্পাদন করার জন্য সত্ এই তৃতীয় ব্রহ্ম বাচক শব্দটি প্রযুক্ত হয়। যজ্ঞ ,তপস্যা, ও দানেও পরমেশ্বর ভগবানের প্রীতি সম্পাদনের জন্য যে তা অনুষ্ঠিত হয়েছে তা নির্দেশ করার জন্য সত্ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
অশ্রদ্ধয়া হুতম্ দত্তম্ তপঃ তপ্তম্ চ উচ্যতে ।
অসত্ ইতি উচ্যতে পার্থ ন চ তত্ প্রেত্য ন ইহ ।।২৮
অর্থ-হে পার্থ পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি শ্রদ্ধাপরায়ন না হয়ে যেদান বা তপস্যা অনুষ্ঠিত হয় তা অসত্।সেইসস্ত ক্রিয়া ইহকাল ও পরকাল কোন কালেই উপকারে আসেনা বা উপকার করে না।
ওং তত্সদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসূপনিষত্সু ব্রহ্মবিদ্যাযাং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুনসংবাদে
শ্রদ্ধাত্রযবিভাগযোগো নাম সপ্তদশোঽধ্যাযঃ ॥১৭॥
১৮.মোক্ষযোগ
অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ মোক্ষযোগ
অর্জুন উবাচ
সন্নাসস্য মহাবাহো তত্তুম্ ইচ্ছামি বেদিতুম্ ।
ত্যাগস্য চ হৃষীকেশ পৃথক কেশিনিসুদন ।।১
অর্থ-অর্জুন বললেন- হে মহাবাহো, হৃষিকেশ হে কেশিনিসুদন আমি সন্নাস ও ত্যাগ শব্দের তত্ত্ব পৃথক পৃথক ভাবে জানতে ইচ্ছা করি।
ভগবান উবাচ
কাম্যানাম্ কর্মনাম্ ন্যাসম্ সন্নাসম্ কবয়ঃ বিদুঃ ।
সর্ব কর্ম ফল ত্যাগম্ প্রাহুঃ ত্যাগম বিচক্ষনাঃ ।।২
অর্থ-ভগবান বললেন সম কর্মের ফল ত্যাগকে বিচক্ষন ব্যক্তিগন ত্যাগবলেন এবং কাম্য কর্মের পরিত্যাগকেই পন্ডিতগন সন্নাস বলে।
ত্যাজ্যম্ দোশবত্ ইতি একে কর্ম প্রাহুঃ মনিষিণঃ ।
যজ্ঞ দান তপঃ কর্ম ন ত্যাজ্যম্ ইতি চ অপরে ।।৩
অর্থ-ত্যাগ সম্বন্ধে একশ্রেনীর পন্ডিতেরা এরুপ স্থির করেছেন যে,কর্মকে দোষ বলে একেবারে ত্যাগ করবে, অপর এক শ্রেণীর পন্ডিত যজ্ঞ,দান,তপস্যা প্রভৃতি কর্মকে অত্যাজ্য বলে সিদ্ধান্ত করেছে।
নিশ্চয়ম্ শৃনু মে অত্র ত্যাগে ভরতম্ ।
ত্যাগ হি পুরুষব্যাগ্র ত্রিবিধঃ সংপ্রকীর্তিতঃ ।।৪
অর্থ-হে ভরত সত্তম্ ত্যাগ সম্বন্ধে আমার সিদ্ধান্ত শ্রবন কর, হে পুরুষ ব্যাগ্র শাস্ত্রে ত্যাগও তিন প্রকার বলে কীর্তিত হয়েছে।
যজ্ঞ দান তপঃ কর্ম ন ত্যাজম্ কার্যম্ এব তত্ ।
যজ্ঞ দানম্ তপঃ চ এব পাবনানি মনীষিণাম্ ।।৫
অর্থ-যজ্ঞ, দান, তপস্যা কখনো ত্যাগ করা ইচিত নয় যজ্ঞ দান এবং তপস্যা মনীষীদের পর্য্যন্ত পবিত্র করে।
এতানি অপি তু কর্মানি সঙ্গম্ ত্যক্তা ফলানি চ ।
কর্তব্যানি ইতি মে পার্থ নিশ্চিতম্ মতম্ উত্তমম্ ।।৬
অর্থ-আশক্তি ও ফেেলর আশা ত্যাগ করে কর্তব্য বোধে এই সমস্ত কর্ম অনুষ্ঠান করা উচিত্। ইহাই আমার সিদ্ধান্ত।
নিয়তস্য তু সন্নাসঃ কর্মনঃ ন উপপদ্যতে ।
মোহাত্ তস্য পরিত্যাগঃ তমসঃ পরিকীর্তিত ।।৭
অর্থ-নিত্ত কর্ম অবশ্য কর্তব্য, কখনোই ত্যাগ করা উচিত্ নয়, মোহ বশত কেউ যদি নিত্ত কর্ম ত্যাগ করে, তা হলে তাকে তামসিক ত্যাগ বলা হয়।
দঃখম্ ইতি এব যত্ কর্ম কায় ক্লেশ ভয়াত্ ত্যজেত্ ।
স কৃত্বা রাজসম্ ত্যাগম্ ন এব ত্যাগ ফলম্ লভেত্ ।।৮
অর্থ-যিনি নিত্ত কর্মকে ক্লেশকর বলে মনে করেন, সেই ত্যাগ রাজস ত্যাগ, তার ফল কখনো ত্যাগের ফল লাভ হয় না।
কার্যম্ ইতি এব চ যত্ কর্ম নিয়তম্ ক্রিয়তে অর্জুন ।
সঙ্গম্ ত্যাক্তা ফল চ এব সঃ ত্যাগৈঃ সাত্ত্বিক মতঃ ।।৯
অর্থ-হে অর্জুন যিনি কর্তব্য বোধে নিত্ত কর্ম অনুষ্ঠান করেন এবং সেই কর্মের আশক্তি ও ফল পরিত্যাগ করেন, তার ত্যাগ সাত্ত্বিক।
ন দ্বেষ্টি অকুশলম্ কর্ম কুশলেন অনুষজ্জতে ।
ত্যাগী সত্ত্ব সমাবিষ্টঃ মেধাবী ছিন্ন সংশয় ।।১০
অর্থ-যারা সত্ত্বগুনে অবস্থিত যারা অশুভ কর্মে বিদ্দেশ করেন না এবং শুভ কর্মে অনাশক্ত হয় না সেই প্রকার মেধাবী ব্যাক্তির কর্ম সম্বন্ধে কোন সংশয় নাই।
ন হি দেহভূতা শক্যম্ ত্যক্তুম্ কর্মানি অশেষতঃ ।
যঃ তু কর্ম ফল ত্যাগী সঃ ত্যাগী ইতি অভিধিয়তে ।।১১
অর্থ-দেহধারী জীবের সমস্ত কর্ম পরিত্যাগ করা সম্ভব নয়, তাই যিনি সমস্ত কর্মের ফল পরিত্যাগ করেন তিনিই বাস্তবিক ত্যাগী।
অনিষ্টম ইষ্টম মিশ্রম্ চ ত্রিবিধম্ কর্মনঃ ফলম্ ।
ভবতী অত্যাগীনাম্ প্রেত্য ন তু সন্নাসি নাম্ কচিত্ ।১২
অর্থ-যারা কর্মফল ত্যাগ করেনি তাদের অনিষ্ট ইষ্ট ও মিশ্র এই তিন প্রকার কর্ম ফল ভোগ হয়। কিন্তু সন্নাসিদের উক্ত ত্রিবিধ ফল ভোগ করতে হয় না।
পঞ্চ এতানি মহাবাহো কারণানি নিবোধ মে ।
সাংখ্যে কৃতান্তে প্রোক্তানি সিদ্ধয়ে সর্ব কর্মনম্ ।।১৩
অর্থ-হে মহাবাহো বেদান্ত শাস্ত্রের সিদ্ধান্তে কর্ম সমুহের সিদ্ধির উদ্দেশ্যে পাচটি কারন নির্দিষ্ট হয়েছে তা আমি বলছি শ্রবন কর।
অধিষ্ঠানম্ তথা কর্তা করনম্ চ পৃথগবিধম্ ।
বিবিধঃ চ পৃথক চেষ্টাঃ দৈবম্ চ এব অত্র পঞ্চমম্ ।।১৪
অর্থ-অধিষ্ঠান, কর্তা, ইন্দ্রিয়সমুহ,প্রচেষ্টা এবং চরমে পরমাত্মা এই পাচটি হল কর্মের হেতু।
শরির বাক্ মনোভিঃ যত্ কর্ম প্রারাভতে নরঃ ।
ন্যয্যম্ বা বিপরীতম্ বা পঞ্চ এতে তস্য হেতবঃ ।।১৫
অর্থ-শরির বাক্য মন দ্বারা মানুষ কার্য করে,তা ন্যায্যই হোক আর অন্যায্যই হোক উক্ত পঞ্চবিধ কারণ দ্বারাই সাধিত হয়।