আহারঃ তু অপি সর্বস্য ত্রিবিধ ভবতী প্রিয়ঃ ।
যজ্ঞ তপঃ তথা দানম্ তেষাম্ ভেদম্ ইমম্ শৃনু ।।৭
অর্থ-প্রকৃতির তিনটি গুন অনুসারে সেই তিন প্রকার মানুষের আহর ও ত্রিবিধ।তেমনই তাদের যজ্ঞ তপস্যা এবং দান ও ত্রিবিধ বলে জানবে।
অয়ু সত্ত্ব বল আরগ্য সুখ প্রীতি বিবর্ধনা ।
রস্যাঃ স্নিগ্ধাঃ স্থিরা হৃদ্যাঃ আহারাঃ সাত্ত্বিক প্রিয়াঃ ।।৮
কটু অম্ল লবন অত্যুষ্ণ তীক্ষ্ণ রুক্ষ্য বিদাহীনঃ ।
আহারাঃ রাজসস্য ইষ্টাঃ দুঃখ শোক আময়প্রদাঃ ।।৯
যাতষামম গতরসম পুতি পর্যুষিতম্ চ যত্ ।
উচ্ছিষ্টম্ অপি চ অমেধ্যম্ ভোজনম্ তামস প্রিয়ম্ ।।১০
অর্থ-যে সমস্ত আহার আয়ু উদ্যম বল আরগ্য সুখ ও প্রিতি বৃদ্ধি করে এবং সরল স্নিগ্ধ পুষ্টিকর ও মনোরম সেগুলি সাত্ত্বিক ব্যক্তিদের প্রিয় হয়। যে সমস্ত আহার দুঃখ্য শোক ও রোগ সৃষ্টি করে এবং অতি তিক্ত অতি অম্ল অতি লবন যুক্ত অতি উষ্ণ অতি তিক্ষ্ণ অতি শুস্ক অতি প্রদাহকর সে গুলি রাজসিকদের প্রিয় হয়। এক প্রহরের অধিক পুর্বে রান্না হওয়ার ফলে যে সমস্ত খাদ্য বাসী হয়ে গেছে যা নিরস অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত পুর্বদিনে রান্না হয়ে পর্যুষিত এবং অপরের উচ্ছিষ্ট দ্রব্য ও অমেধা দ্রব্যসকল তামসিক লোকের প্রিয়।
অফলাকাঙ্ক্ষিভিঃ যজ্ঞঃ বিধি দিষ্টঃ যত্ ইজ্যতে ।
যষ্টব্যম্ এবম্ ইতি মনঃ সমাধায় সঃ সাত্ত্বিকঃ ।।১১
অর্থ-কোন রকম ফলের আশা না করে , শাস্ত্রের বিধি অনুসারে কর্তব্য বোধে যে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত তা সাত্ত্বিক যজ্ঞ।
অভিসন্ধায় তু ফলম্ দম্ভ অর্থম্ অপি চ এব যত্ ।
ইজ্যতে ভরতশ্রেষ্ঠ তম্ যজ্ঞম্ বিদ্ধি রাজসম্ ।।১২
অর্থ-হে ভরতশ্রেষ্ঠ জাগতিক লাভের আশায় ফল কামনা করে দম্ভ প্রকাশের জন্য যে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয় তাকে রাজসিক বলে জানবে।
বিধিহীনম্ অসৃষ্টন্নম্ মন্ত্রহীনম্ অদক্ষিনম্ ।
শ্রদ্ধাবিরহিতম্ যজ্ঞম্ তামসম্ পরিচক্ষতে ।।১৩
অর্থ-শাস্ত্রবিধি বর্জিত প্রসাদান্ন বিতরণহীন শন্ত্রহীন শ্রদ্ধারহিত যজ্ঞকে তামসিক যজ্ঞ বলা হয়।
দেব দ্বিজ গুরু প্রাজ্ঞ পূজনম্ শৌচম্ আর্জবম ।
ম্ব্র্রহ্মচর্যম্ অহিংসা চ শরিরম তপঃ উচ্চতে ।।১৪
অর্থ-পরমেশ্বর ভগবান ব্রাহ্মন গুরুজন ও প্রাজ্ঞগনের পূজা এবং শৌচ সরলতা ব্রহ্ম চর্য্যা ও অহিংসা এইগুলিকে কায়িক তপস্যা বলে।
অনুদ্বেগ করম্ বাক্যম্ সত্যম্ প্রিয় হিতম্ চ যত্ ।
স্বাধ্যায় অভ্যসনম্ চ এব বাঙ্ময়ম্ তপঃ উচ্যতে ।।১৫
অর্থ-অনুদ্বেগকর সত্য প্রিয় অথচ হিতকর বাক্য এবং বেদাদি শাস্ত্র পাঠ করাকে বাচিক তপস্যা বলে।
মনঃপ্রসাদঃ সৌম্যত্বম্ মৌনম্ আত্মবিনিগ্রহঃ ।
ভাবসংশুদ্ধিঃ ইতিএতত্ তপঃ মানসম্ উচ্যতে ।।১৬
অর্থ-চিত্তের প্রসন্নতা সরলতা মৌন আত্মনিগ্রহ ব্যবহারে ছলনা রাহিত্য এইগুলিকে মানুষিক তপস্যা বলে।
শ্রদ্ধায় পরয়া তপ্তম্ তপঃ তত্ ত্রিবিধম্ নরৈঃ ।
অফলা কাঙ্খিভিঃ যুক্তৈঃ সাত্ত্বিকম্ পরিচক্ষতে ।১৭
অর্থ-নিস্কাম ব্যক্তির দ্বারা পরমেশ্বর ভগবানের প্রীতি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে যখন এই ত্রিবিধ তপস্যা অনুষ্ঠিত হয়, তাকে সাত্ত্বিক তপস্যা বলা হয়।
সত্কার মান পূজার্থম তপঃ দম্ভেন চ এব যত্ ।
ক্রিয়তে তত্ ইহ প্রোক্তম্ রাজসম্ চলম্ অধ্রুবম্ ।।১৮
অর্থ-প্রসাংসা সন্মান পুজা পাওয়ার আশায় দম্ভ সহকারে যে তপস্যা করা হয় তা অনিত্য ও অনিশ্চিত রাজসিক তপস্যা।
মুঢ় গ্রাহেন আত্মনঃ যত্ পীড়য়া ক্রিয়তে তপঃ ।
পরস্য উত্সাদনার্থম্ বা তত্ তামসম্ উদাহৃতম্ ।।১৯
অর্থ-মুঢ় ব্যক্তির প্রভাবে নিজেকে কষ্টদিয়ে বা অপরের বিনাশের জন্য যে তপস্যা করা হয় তাকে তামসিক তপস্যা বলে।
দাতব্যম্ ইতি যত্ দানম্ দীয়তে অনুপকারিণে ।
দেশে কালে চ পাত্রে চ তত্ দানম্ সাত্ত্বিকম্ স্মৃতম্ ।।২০
অর্থ-দানকরা কর্তব্য বলে মনে করে প্রত্যুপকারের আশা না করে উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত সময় উপযুক্ত পাত্রে যে দান করা হয় তাকে সাত্ত্বিক দান বলে।
যত্ তু প্রত্যুপকারার্থ ফলম্ উদ্দিশ্য বা পুন ।
দীয়তে চ পরিক্লিষ্টম্ তত্ দানম্ রাজসম্ স্মৃতম্ ।।২১
অদেশ কালে যত্ দানম্ অপাত্রেভ্যঃ চ দীয়তে ।
অসত্কৃতম্ অবজ্ঞাতম্ তত্ তামসম্ উদাহৃতম্ ।।২২
অর্থ-যে দান প্রত্যুপকারের আশা করে বা সর্গাদির লাভের উদ্দেশে এবং অনিচ্ছা সত্ত্বে করা হয়,তাকে রাজসিক দান বলে। অশুচি স্থানে অশুভ সময় অযোগ্য পাত্রে অবজ্ঞা সহকারে,এবং অনাদরে যে দান করা হয় তাকে তামসিক দান বলে।
ওঁং তত্ সত্ ইতি নির্দশঃ ব্রাহ্মণঃ ত্রিবিধঃ স্মৃতঃ ।
ব্রাহ্মণাঃ তেন বেদাঃ চ যজ্ঞাঃ চ বিহিতাঃ পুরা ।।২৩
অর্থ-সৃষ্টির আদিতে ওঁ তত্ সত্ এই শব্দ দ্বারা পরমেশ্বর ভগবানের ত্রিবিধ নাম নিদৃষ্ট হয়েছে। যজ্ঞকর্তা ব্রাহ্মনেরা যজ্ঞ অনুষ্ঠান সময় ভগবানের সন’ষ্টির জন্য তা উচ্চারন করতেন।
তস্মাত্ ওঁ ইতি উদাহৃত্য যজ্ঞ্য দান তপঃ ক্রিয়াঃ ।
প্রবর্তন্তে বিধানোক্তাঃ সততম্ ব্রহ্মবাদিনাম্ ।।২৪
অর্থ-সেই হেতু পরমার্থিবাদিরা পরমেশ্বর ভগবানকে লাভ করার জন্য ওঁ শব্দ ব্যবহার পুর্বক যজ্ঞ দান তপস্যা এবং ক্রিয়া অনুষ্ঠান করেন।
অদিতি অনভিসন্ধায় ফলম্ যজ্ঞ তপঃ ক্রিয়াঃ ।
দান ক্রিয়া চ বিবিধাঃ ক্রিয়ন্তে মোক্ষকাঙ্ক্ষিভিঃ ।।২৫
অর্থ-তত্ এই শব্দ উচ্চারন করে মূমূক্ষু ব্যক্তিরা ফলের আকাঙ্ক্ষা না করে নানা প্রকার যজ্ঞ, তপস্যা, দান আদি কর্মের অনুষ্ঠান করেন।