যাবত্ সংজায়তে কিঞ্চিত্ সত্ত্বম্ স্থাবর জঙ্গঁমম্।
ক্ষেত্র ক্ষেত্রজ্ঞ সংযোগাত্ তত্ বিদ্ধি ভরতর্ষভ ।।২৭
অর্থ-হে ভরত শ্রেষ্ঠ স্থাবর জঙ্গঁম যা কিছু আছে তা সবই ক্ষেত্র ক্ষেত্রজ্ঞের সংযোগের ফলে উপন্ন হয়েছে বলে জানবে।
সমম সর্বেষু ভুতেষু তিষ্ঠস্তম পরমেশ্বরম্ ।
বিনশ্যত্সু অবিনশ্যন্তম্ যঃ পশ্যতি সঃ পশ্যতি ।।২৮
অর্থ-যিনি সর্বভুতে সমভাবে অবস্তিত পরম্ আত্মাকে দর্শন করেন তিনি জানেন যে জীব আত্মা এবং পরম্ আত্মা উভয়েই অবিনাশী, তিনিই প্রকৃতভাবে দর্শন করেন।
সমম্ পশ্যন হি সর্বত্র সমবস্থিতম্ ঈশ্বরম।
ন হিনস্তি আত্মনম্ ততঃ যাতি পরাম্ গতিম ।।২৯
অর্থ-যিনি সর্বত্র সমভাবে অবস্থিত পরম্ আত্মাকে দশৃন করেন, তিনি কখন মনের দ্বারা অধপতন সাধন করেন না। এই ভাবে তিনি পরম গতি লাভ করেন।
প্রকৃত্যা এব চ কর্মানি ক্রিয় মানানি সর্বস্যঃ ।
যঃ পশ্যতি তথা আত্মনম্ অকর্তারম্ সঃ পশ্যতি ।।৩০
অর্থ-দেহের দ্বারা কৃত সমস্ত কর্ম প্রকৃতিই সম্পাদন করেছে, শুদ্ধ আত্মাস্বরুপ আমি কিছুই করি না এই ভাবে যিনি দর্শন করেন,তিনিই যথাযথ ভাবে দর্শনকরেন।
যদা ভুত পৃথক-ভাবম্ একস্থম অনুপশ্যতি।
ততঃ এব চ বিস্থারম্ ব্রহ্ম সম্পাদতে তদা ।।৩১
অর্থ-বিবেকমান পুরুষ যখন জঢ়দেহের পার্থক্য অনুসারে বিভিন্ন জীবের পার্থক্য দশৃন করেন না; তিনিই ব্রহ্মভুত অবস্থা প্রাপ্ত হন। এই ভাবে তিনি সর্বত্র চিন্ময় প্রকৃতির বিস্তার দর্শন করেন।
অনাদিত্বাত্ নির্গুনত্বাত্ পরম্ আত্মা অয়ম অব্যয়ম।
শরিরস্থ অপি কৌন্তেয় ন করোতি ন লিপ্যতে ।।৩২
অর্থ-ব্রহ্মভুত অবস্থায় জীব দর্শন করে যে ,আত্মচিন্ময়,অনাদি,নির্গুন এবং জড়া প্রকৃতির অতিত। হে অর্জুন জড়দেহে অবস্থান করলেও আত্মা কোন কিছু করেন না এবং কোন কিছুতে লিপ্ত হন না।
যথা সর্ব গতম সৌক্ষ্যাত্ আকাশম্ ন উপলিপ্যতে ।
সর্বত্র অবস্থিতঃ দেহে তথা আত্মা ন উপলিপ্যতে ।।৩৩
অর্থ-আকাশ যেমন সর্ব গত হয়েও সুক্ষ্মতা হেতু অন্য বস্তুতে লিপ্ত হয়ে না, তেমনি ব্রহ্ম দর্শনসম্পন্ন ব্যক্তি দেহে অবস্থিত হয়েও দেহ ধর্মে লিপ্ত হন না।
যথা প্রকাশয়তি একঃ কৃত্স্নম্ লোকম্ ইমম্ রবি ।
ক্ষেত্রম্ ক্ষেত্রী তথা কৃতত্স্নম্ প্রকাশয়তি ভারত ।।৩৪
অর্থ-হে ভারত একসুর্য যেমন সমস্ত জগত্ কে প্রকাশ করে, ক্ষেত্রী আত্মাও সেই ভাবে সমগ্র ক্ষেত্রকে প্রকাশিত করে।
ক্ষত্র ক্ষেত্রজ্ঞয়ো এবম্ অন্তরম্ জ্ঞান চক্ষুষা ।
ভূত প্রকৃতি মোক্ষ্যম্ চ যে বিদুঃ যান্তিতে পরম ।।৩৫
অর্থ-যারা এই ভাবে ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের পার্থক্য জানেন এবং জড় জগতের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার পন্থা জানেন তারা পরম্ গতি লাভ করেন।
ওং তত্সদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসূপনিষত্সু ব্রহ্মবিদ্যাযাং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুনসংবাদে
ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞবিভাগযোগো নাম ত্রযোদশোঽধ্যাযঃ ॥১৩॥
১৪.গুণত্রয়বিভাগযোগ
ভগবান উবাচ
পরম ভূয় প্রবক্ষামি জ্ঞানানাম জ্ঞানম্ উত্তমম।
যত্ জ্ঞাত্বা মুনয়ঃ সর্বে পরাম সিদ্ধিম ইতঃ গতাঃ।।১
অর্থ-ভগবান বললেন-আমি পুনরায় তোমাকে সমস্ত জ্ঞানের মধ্যে সর্বতম জ্ঞান সম্বন্ধেই বলব, যা লাভ করে, মুনিগন পরা সিদ্ধিরূপা ভক্তি লাভ করে ছিলেন।
ইদম জ্ঞানম উপাশ্রিত্য মম সাধর্ম্যম আগতাঃ ।
সর্গে অপি ন উপজায়ন্তে প্রলয়ে ন ব্যথন্তি চ ।।২
অর্থ-সেই জ্ঞান আশ্রয় করলে আমার পরা প্রকৃতি, চিন্ময় জগত্ লাভকরে। তখন আর সৃষ্ঠির সময় জড় জগতে জন্মগ্রহন করে না এবং প্রলয়ে আত্মবিনাশ রুপ ব্রাথা পায় না।
মম যোনিঃ মহত্ ব্রহ্ম তস্মিন গর্ভম দধামি অহম্।
সম্ভবঃ সর্বভূতানাম্ ততঃ ভবতি ভারত ।।৩
অর্থ-হে ভরত প্রকৃতি সংজ্ঞক ব্রহ্ম এই জড় জগতের উত্পত্তির কারন, এবং সেই ব্রহ্মে আমি গর্ভদান করি ফলে সর্বভূতের সৃষ্ঠি হয়ে।
সর্বযোনিষু কৌন্তেয় মুর্তয় সম্ভবন্তি যাঃ ।
তাসাম্ ব্রহ্ম মহত্ যোনিঃ অহম জীবপ্রদ পিতা ।।৪
অর্থ-হে কৌন্তেয় সমস্ত যোনিতে যত মুর্তি প্রকাশিত হয় ব্রহ্মরুপ যোনিই তাদের জননী স্বরুপা এবং আমি তাদের বীজ প্রদানকারি পিতা।
সত্তম রজ তমঃ ইতি গুনা প্রকৃতি সম্ভবাঃ ।
নিবধ্নন্তি মহাবাহো দেহে দেহিনম অব্যয়ম ।।৫
অর্থ-হে মহাবাহো জড় প্রকৃতি থেকে সতঃ, রজঃ ,তমঃ এই তিনটি গুনের প্রকাশ হয়। জীব যখন জড়া প্রকৃতির সংর্স্পেশে আসে তখন সে তিনটি গুনের দ্বারা আবদ্ধ হয়।
তত্র সত্তম নির্ম্মলত্বাত্ প্রকাশকম অনাময়ম ।
সুখে সঙ্গেঁন বধ্নতি জ্ঞান সঙ্গেন চ অনঘ ।।৬
অর্থ-হে নিস্পাপ;এই তিনটি গুনের মধ্যে সত্ত্বগুন অপেক্ষাকৃত নির্ম্মল, প্রকাশক এবং পাপশুন্য। এই সত্ত্বগুন আমি সুখি এই প্রকার সুখাশক্তি এবং আমি জ্ঞানি এই প্রকার জ্ঞানা শক্তি দ্বারা আমাকে আবদ্ধ করে।
রজঃ রাগাত্মকম্ বিদ্ধি তৃষ্ণা সঙ্গ সমুদ্ভবম্ ।
তত্নিবধ্নাতি কৌন্তেয় কর্মসঙ্গেন দেহিনম ।।৭
অর্থ-হে কৌন্তেয়, অন্তহীন কামনা বাসনা থেকে রজগুণের উত্পত্তি হয় এবং রজগুনেই জীবকে সকাম কর্মের বন্ধনে আবদ্ধ করে।
তমঃ তু অজ্ঞানজম্ বিদ্ধি মোহনম্ সর্বদেহীনম ।
প্রমাদ আলস্য নিদ্্রাভিঃ তত্ নিবধ্নাতি ভারত ।।৮
অর্থ-হে ভারত তমগুন জীবের ভ্রান্তি উত্পাদন করে। প্রমাদ, আলস্য ও নিদ্রার দ্বারা তমঃগুন জীবকে আবদ্ধ করে।