যান্তি দেবব্রতা দেবান পিতৃন যান্তি পিতৃব্রতা ।
ভূতানি যান্তি ভূতেজাঃ যান্তি মত্ যাজিনঃ অপি মাম্ ।।২৫
অর্থ-দেবতাদের উপাসকেরা দেবলোক প্রাপ্ত হবেন; যারা ভূত প্রেতাদির উপাসক তারা ভূত লোকই লাভ করে; যারা পিত্রী পুরুষদের উপাসক, তারাঅনিত্য পিত্রি লোক লাভ কওে;এবং যারা আমার উপাসনা কওে, তারা আমাকেই লাভ করে।
পত্রম্ পুস্পম্ ফলম্ তোয়ম্ যঃ মে ভক্তাঃ প্রযচ্ছতি ।
তত্ অহম্ ভক্ত্যুপহৃতম্ অশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ।।২৬
অর্থ-যে বিশুদ্ধ চিত্ত নিস্কাম ভক্ত আমাকে ভক্তি পুর্বক পত্র, পুস্প, ফল ও জল অর্পন করেন,আমি তার সেই ভক্তি প্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহন করি।
যত্ করোষি যত্ অশ্নাসি যত্ জুহোসি দদাসি যত্ ।
যত্ তপস্যসি কৌন্তেয় তত্ কুরুম্ব মত্ অর্পনম্ ।।২৭
অর্খ-হে কৌন্তেয় তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকেই অর্পন কর।
শুভ অশুভ ফলৈঃ এবম্ মোক্ষ কর্ম বন্ধনৈঃ ।
সন্ন্যাস যোগ যুক্তাত্মা বিমুক্ত মাম্ উপৈষসি ।।২৮
অর্থ – এই ভাবে আমাকে সমস’ কর্ম অর্পন দ্বারা শুভ এবং অশুভ ফল বিশিষ্ট কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হবো। এই ভাবে সন্নাস যোগে যুক্ত হয়ে তুমি মুক্ত হবে এবং আমাকেই প্রাপ্ত হবে।
সমঃ অহম্ সর্বভূতেষু ন মে দ্বেষ্য অস্তি ন প্রিয়ঃ ।
যে ভজন্তি তু মাম্ ভক্তা ময়ি তে তেষু চ অপি অহম্ ।।২৯
অর্থ-আমি সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। কেউ আমার প্রিয় নয় ও অপ্রিয়ও নয়। কিন্তু যারা ভক্তি পুর্বক আমাকে ভজনা করেন তারা সভাবতই আমাতে অবস্থান করেন, অমিও তাদের হৃদয় বাস করি।
অপি চেত্ সুদুরাচারঃ ভজতে মাম্ অনন্যভাক্ ।
সাধু এব সঃ মন্তব্যঃ সম্যক ব্যবসিতঃ হি সঃ ।।৩০
অর্থ-অতি দুরাচারি ব্যাক্তিও যদি অনন্য ভক্তি সহকারে আমাকে ভজনা করেন, তাকে সাধুবলে মনে করবে, কারন তিনি যথার্থ মার্গে অবস্থিত।
ক্ষিপ্রম্ ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বত্ শান্তিম্ নিগচ্ছতি ।
কৌন্তেয় প্রতিজানিহী ন মে ভক্তঃ পনশ্যতি ।।৩১
অর্থ-তিনি শিগ্রই ধর্ম আত্মায় পরিনত হয় এবং শান্তি লাভ করেন। হে কৌন্তেয় আমার ভক্ত কখনও বিনষ্ট হয় না, সে কথা দৃঢ় কন্ঠে ঘোষনা করে দাও।
মাম্ হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যে অপি স্যু পাপযোনয় ।
স্ত্রিয়ঃ বৈশ্যাঃ তথা শুদ্রাঃ তে অপি যানি- পরাম্ গতিম্ ।।৩২
অর্থ-হে পার্থ অন-জ ম্লেচ্ছগনও বেশ্যাদি পতিতা স্ত্রীলোকেরা তথা বৈশ্যা শুদ্র প্রভৃতি নিচবর্নস- মানুষেরা আমার অনন্যা ভক্তিকে বিষেশ ভাবে আশ্রয় করলে অবিলম্বে পরাগতী লাভ করে।
কিম পুনঃ ব্রাহ্মণাঃ পুন্যাঃ ভক্তাঃ রজর্ষয় তথা ।
অনিত্যম্ অসুখম্ লোকম্ ইমম্ ভজস্ব মাম্ ।৩৩।
অর্থ-পুন্যজন্ম ব্রহ্মভক্ত এবংক্ষত্রিয়দের আর কি কথ? তারা আমাকে আশ্রয় করলে নিশ্চয় পরা গতী লাভ করবেন। অতএব যখন এই অনিত্য দুঃখময় মর্ত্তলোকে মনুষ্য দেহ ধারন করেছে, তখন অন্যান্য সমস্ত কর্তব্য ত্যাগ করে আমাকেই ভজনা করে।
মন্মনাঃ ভব মত্ ভক্ত যাজী মাম্ নমস্কুরু ।
মাম্ এব এষ্যসি যুক্তৈবম্ আত্মনম্ মত্পরায়ণঃ ।৩৪।
অর্থ-তোমার মনকে আমার ভাবনায় নিযুক্ত করে আমাকে প্রনাম কর এবং আমার পূজাকর। সম্পুর্নরুপে আমাকে আশ্রয করে তুমি অবশ্যই আমাকে লভ করবে।
ওং তত্সদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসূপনিষত্সু ব্রহ্মবিদ্যাযাং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুনসংবাদে
রাজবিদ্যারাজগুহ্যযোগো নাম নবমোঽধ্যাযঃ ॥৯॥
১০.বিভূতিযোগ
ভগবান উবাচ
ভূয় এব মহাবাহো শৃনু মে পরমম্ বচঃ ।
যত্ তে অহম্ প্রীয়মানয় বক্ষামি হিতকাময়া ।।১
অর্থ-ভগবান বললেন হে মহাবাহো তুমি আমার প্রিয় পাত্র তাই তেমার হিতকামনায় আমি যা পুর্বে বলেছি তার থেকেও উত্কৃষ্ট তত্ত্ব বলছি তুমি তা মনোযোগ সহকারে শ্রবন কর।
ন মে বিদুঃ সুরগণাঃ প্রভবম্ ন মহার্ষয় ।
অহম্ আদিঃ হি দেবানাম্ মহষীনাম্ চ সর্বশঃ ।।২
অর্থ-মহর্ষিরা বা দেবতারাও আমার উত্পত্তি অবগত হতে পারে না কারন আমি দেবতা ও মহর্ষিদের আদি কারন।
যঃ মাম্ অজম্ অনাদিম্ চ বেত্তি লোক মহেশ্বরম্ ।
অসংমূঢ় সঃ মর্ত্তেষু সর্বপাপৈঃ প্রমুচ্যতে ।।৩
অর্থ-যিনি আমাকে আদিহীন জন্মরহিত ও সর্বলোকের মহেশ্বর বলে জানেন, মানুষের মধ্যে তিনিই মোহশুন্য হয় এবং সমস্ত পাপথেকে মুক্ত হন।
বুদ্ধিঃ জ্ঞানম্ অসংমোহ ক্ষমা সত্যম্ দমঃ শমঃ ।
সুখম্ দুঃখম্ ভবঃ অভাবঃ ভয়ম্ চ অভয়ম্ এব চ ।।৪
অহিংসা সমতা তুষ্টিঃ তপঃ দানম্ যশঃ অযশঃ ।
ভবন্তি ভাবাঃ ভূতানাম্ মত্তঃ এব পৃথগবিধাঃ ।।৫
অর্থ-বুদ্ধি, জ্ঞান, মোহমুক্তি, ক্ষমা, সত্য, বাহ্যেইন্দ্রিয় ও অন্তরিন্দ্রিয়ের সংযম, সুখ,দুঃখ, জন্ম,মৃত্যু, ভয়, অভয়, অহিংসা, সমচিত্ততা, সন্তোষ, তপস্যা, দান, ধর্ম নিমিত্ত কীর্ত্তি ও অধর্ম নিমিত্ত অকির্ত্তি এই সবই আমার থেকে উত্পন্ন হয়।
মহর্ষয়ঃ সপ্ত পুর্বে চত্বার মনবঃ তথা ।
মদভাবাঃ মানসঃ জাত্ঃ যেসাম্ লোক ইমাঃ প্রজাঃ ।।৬
অর্থ-সপ্ত মহর্ষি তাদের পুর্বজাত সনকাদি চার কুমার এবং চতুর্দশ মনু, সকলেই আমার মন থেকে উত্পন্ন হয়েছে, এবং এই জগতের স্থাবর জঙ্গম আদি সমস্ত প্রজা তারাই সৃষ্টি করেছেন।