প্রকৃতিম্ স্বাম্ অবষ্টভ্য বিসৃজইম পুনঃ পুনঃ ।
ভূতগ্রামম্ ইমম্ কৃত্স্নম্ অবশম্ প্রকৃতেঃ বশাত্ ।৮।
অর্থ-হে-কৌন্তেয় কল্পান্ত সমস্ত জড় বস্তু আমারই প্রকৃতে প্রবেশ করে,এবং পুনরায় কল্পারম্ভে প্রকৃতির দ্বারা আমি তাদের সৃষ্টি করি।
ন চ মাম্ তানি কর্মানি নিবধ্নন্তি ধনঞ্জয় ।
উদাসীনবত্ আসিনম্ অসক্তম্ তেষু কর্মষু ।।৯
অর্থ-হে ধনঞ্জয় সেই সমস্ত কর্ম আমাকে আবদ্ধ করতে পারে না। আমি সেই সমস্ত কর্মে অনাসক্ত ও উদাসিনের ন্যায় অবস্থিত থাকি।
ময়া অধ্যক্ষেন প্রকৃতিঃ সুয়তে সঃ চরাচরম্ ।
হেতুনা অনেন কৌন্তেয় জগত্ বিপরিবর্ততে ।।১০
অর্থ-হে কেন্তেয় আমার অধ্যক্ষতার দ্বারা ত্রিগুনাত্তিকা মায়া এই চরাচর বিশ্ব সৃষ্টি কও। প্রকৃতির নিয়মে এই জগত্ পুনঃ পুনঃ সৃষ্টি হয় এবং ধংস হয়।
অবজানন্তি মাম্ মূঢ়া মানুষীম্ তনুম্ আশ্রিতম্ ।
পরম ভাবম্ অজানন্তঃ মম্ ভূত মহেশ্বরম্ ।।১১
অর্থ-আমি যখন মানুষ রুপে অবতীর্ন হই,মুর্খেরা আমাকে অবজ্ঞা করে তারা আমার পরম ভাব সম্বন্ধে অবগত হন না, এবং তারা আমাকে সর্বভূতের মহেশ্বর বলে জানে না।
মোঘশাঃ মোঘকর্মানঃ মোঘজ্ঞানা বিচেতসঃ ।
রাক্ষসীম্ আসুরীম্ চ এব প্রকৃতিম্ মোহিনীম্ শ্রিতাঃ ।।১২
অর্থ-এই ভাবে যারা মোহচ্ছন্ন হয়েছে তারা রাক্ষসী বা আসুরী ভাবের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেই মোহছন্ন অবস’ায় তাদেরও মুক্তি লাভের আশা, তাদের স্বকাম কর্ম এবং জ্ঞানের প্রয়াস সমস্তই ব্যর্থ হয়।
মহাত্মনঃ তু মাম্ পার্থ দৈবীম্ প্রকৃতিম্ আশ্রিতাঃ ।
ভজন্তি অনন্যমনসঃ জ্ঞাত্বা ভূত আদিম্ অব্যয়ম্ ।১৩
অর্থ-হে পার্থ মোহযুক্ত মহাত্মাগন আমার দৈবী প্রকৃতি আশ্রয় করেন। তারা আমাকে সর্বভূতের কারন ও অবিনাশী জেনে অনন্য চিত্তে ভজনা করেন।
সততম্ কীর্তয়ন্ত মাম্ যতন্তঃ চ দৃঢ়ব্রতাঃ ।
নমস্যন্তঃ চ মাম্ ভক্তা নিত্যযুক্ত উপাসতে ।।১৪
অর্থ-ব্রহ্মচর্য্যাদি ব্রতে দৃঢ়নিষ্ট ও যত্নশীল হয়ে সেই ভক্তরা সর্বদা আমার মহিমা কির্তন করে এবং সর্বদা ভক্তি পুর্বক আমার উপসনা করেন।
জ্ঞানযজ্ঞেন চ অপি অন্যে যজন্তঃ মাম্ উপাসতে ।
একত্যেন পৃথক্তেন বহুধা বিশ্বতমুখম্ ।।১৫
অর্থ-অন্য কেউ কেউ জ্ঞান যজ্ঞের দ্বারা, অভেদ চিন্তাপুর্বক, কেউ কেউ বহুরুপে প্রকাশিত ভেদ চিন্তাপুর্বক, এবং অন্য কেউ আমার বিশ্বরুপের, উপসনা করে।
অহম্ ক্রতুঃ অহম্ যজ্ঞঃ স্বধা অহম্ অহম্ ঔষধম্ ।
মন্ত্র অহম্ অহম্ এব আজ্যম্ অহম্ অগ্নিঃ অহম্ হুতম্ ।।১৬
অর্থ-আমি অগ্নিষ্টোম আদি শ্রৌত যজ্ঞ আমি বৈশ্যদেব আদি স্মার্ত যজ্ঞ,আমি পিত্রিপুরুষদের উদ্বেশ্যে কর্ম,আমি রোগ নিবারক ভেষজ, আমি মন্ত্র, আমি হোমের ঘৃত,আমি হোমাগ্নি এবং আমিই হোমক্রিয়া।
পিতা অহম্ অস্য জগতঃ মাতা ধাতা পিতামহঃ ।
বেদ্যম্ পবিত্রম্ ওঙ্কার ঋক সাম্ যজুঃ এব চ ।।১৭
অর্থ-আমিই জগতের পিতামাতা সর্ব প্রাণীর কর্মফল প্রানদাতা এবং পিতামহ ঋক সাম এবং যজুঃ (বেদসমুহ)।
গতিঃভর্তা প্রভূ সাক্ষী নিবাসঃ শরনম্ সুহৃত্ ।
প্রভবঃ প্রলয়ঃ স্থানম্ নিধানম্ বীজম্ অব্যয়ম্ ।।১৮
অর্থ-আমি সকলের গতীভর্তা প্রভু সাক্ষীনিবাস শরণ,সুহৃদ, উত্পত্তি, নাশ,স্থিতি, হেতু এবং অব্যয় বীজ।
তপামি অহম্ অহম্ বর্ষম্ নিগৃহ্নামি উত্সৃজামি চ ।
অমৃতম্ চ এব মৃত্যুঃ চ সত্ অসত্ চ অহম অর্জুন ।।১৯
অর্থ-হে অর্জুন আমি তাপএবং আমি বিষ্টি, আমি জল বর্ষনকারী ও জল আকর্ষন করি; আমি অমৃত এবং আমি মৃত্যু; আমি সত্ত্বা এবং সত্ত্বাহীন।
ত্রৈবিদ্যা মাম্ সোমপাঃ পুত পাপাঃ
যজ্ঞৈঃ ইষ্টা সর্গতিম্ প্রার্থয়ন্তে ।
তে পুন্যম্ আসাদ্য সুরেন্দ্র লোকম
অশ্নন্তি দিব্যান দিবি দেবভোগান ।।২০
তে তম ভূক্তা সর্গ লোকম্ বিশালম্
ক্ষীনে পুন্যে মর্ত্যলোকম্ বিশন্তি ।
এবম্ ত্রয়ী ধর্মম্ অনুপ্রপন্না
গতাগতম্ কাম কামাঃ লভন্তে ।।২১
অর্থ-ত্রিবেদ যজ্ঞগন যজ্ঞ অনুষ্ঠান দ্বারা আমাকে আরাধনা করে যজ্ঞাবশিষ্ঠ সোমরস পান করে পাপ মুক্ত হন এবংস্বর্গ কামনা করেন। তারা পুন্য কর্মের ফল স্বরুপ ইন্দ্র লোকলাভ কওে দিব্য স্বর্গসুখ উপভোগ করেন। তারা সেই বিপুলস্বর্গলোক উপভোগ করে পুন্য ক্ষয় হলে আবার মর্তলোকে ফিরে আসেন। এই ভাবে ত্রিবেদক্ত ধর্মের অনুষ্ঠান করে ইন্দ্রিয় ভোগ আকাঙ্খি মানুষেরা সংসারে জন্ম মৃর্ত্যর আবর্তে আবর্তিত হয়।
অনন্যাঃ চিন্তয়ন্তঃ মাম্ যে জনাঃ পর্যুপাসতে।
তেষাম্ নিত্য অভিযুক্তানাম্ যোগক্ষেমম্ বহামি অহম্ ।।২২
অর্থ-অনন্য চিত্তে আমার চিন্তায় মগ্নহয়ে যারা আমার উপসনা করে আমি তাদের সমস্ত অভাব পুরন করি এবং তাদের প্রাপ্ত বস্তু সংরক্ষণ করি।
যে অপি অন্য দেবতা ভক্তাঃ যজন্তে শ্রদ্ধায়ান্বিতাঃ ।
তে অপি মাম্ এব কৌন্তেয় যজন্তি অবিধিপুর্বকম্ ।।২৩
অর্থ- হে কৌন্তেয় যারা ভক্তি পুর্বক অন্য দেবতাদের পূজা করেন তারাও অবিধি পুর্বক আমারই পূজা করেন।
অহম্ হি সর্ব যজ্ঞানাম্ ভোক্তা চ প্রভূঃ এব চ ।
ন তু মাম্ অভিজানন্তি তত্ত্বেন অতঃ চ্যবন্তি তে ।।২৪
অর্থ-আমিই যজ্ঞের ভোক্তা ও প্রভূ। যারা আমার চিন্ময় স্বরুপ জানেনা তারা আবার সংসার সমুদ্রে অধোপাতিত হয়।