অধিযজ্ঞঃ কথম্ কঃ অত্র দেহে অস্মি মধুসুদন ।
প্রয়ান কালে চ কথম্ জ্ঞেয়ঃ অসি নিয়তাত্মভিঃ ।।২
অর্থ-হে মধুসুদন এই দেহে অধিযজ্ঞ কে,এবং কিরুপে তিনি অবস্থিত? মৃত্যুকালে জিতেন্দ্রিয় ব্যক্তিরা কিভাবে আপনাকে জানতে পারেন।
ভগবান ঊবাচ
অক্ষরম্ পরমম্ ব্রহ্ম সভাবঃ অধ্যাত্মম্ উচ্যতে ।
ভূতভাবোদ্ভবকর বিসর্গ্রঃ কর্ম সংজ্ঞিতঃ ।।৩
অর্থ-ভগবান বললেন নিত্য বিনাশ রহিত জীবকে বলা হয় ব্রহ্ম এবং তার স্বভাবকে অর্থাত্ প্রতি দেহে সেই আত্মার অবস্থিতিকে অধ্যাত্ম বলে। ভূত বস্তুর উত্পত্তিকর দেবতাদের উদ্দেশ্যে দ্রব্যাদি ত্যাগরুপ যজ্ঞকে কর্ম বলে।
অধিভূতম্ ক্ষরঃ ভাবঃ পুরুষঃ চ অধিদৈবতম্ ।
অধিযজ্ঞ অহম্ এব অত্র দেহে দেহভূতাম্ বর ।।৪
অর্থ-হে অর্জুন নশ্বর জড়া প্রকৃতি অধিভূত। অধিদৈব শব্দে সমস্ত দেবতাদের সমষ্টি রুপ বিরাট পুরুষকে জানবে;এবং দেহীদের দেহান্তরগত অন্তর্যামী পুরুষরুপে আমিই অধিযজ্ঞ।
অন্ত কালে চ মাম্ এব স্মরন মুক্তা কলেবরম্ ।
যঃ প্রয়াতি সঃ মদ্ভাবম্ যাতি নাস্তি অত্র সংশয় ।।৫
অর্থ-মৃত্যুর সময় যিনি আমার স্মরন করে দেহত্যাগ করেন, তিনি তত্ক্ষণাত্ আমার ভাবই প্রাপ্ত হন। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই।
যম যম অপি স্মরন ভাবম্ ত্যাজতি অন্তে কলেবরম্ ।
তম্ তম্ এব এতি কৌন্তেয় সদা তত্ভাব ভাবিতঃ ।।৬
অর্থ-মৃত্যুর সময় যিনি যে ভাবে স্মরন করে দেহ ত্যাগ করেন, তিনি সেইভাব ভাবিত তত্ত্বকেই লাভ করেন।
তস্মাত্ সর্বেষু কালেষু মাম্ অনুস্মর যুধ্য চ ।
ময়ি অর্পিত মনঃ বুদ্ধিঃ মাম্ এব এষ্যসি অসংশয়ঃ ।।৭
অর্থ-অতএব হে অর্জুন-সর্বদা আমাকে স্মরন করে তোমার স্বভাব বিহিত যুদ্ধ কর, তা হলে আমাতে তোমার মন ও বুদ্ধি অর্পিত হবে এবং নিঃসন্দেহে তুমি আমাকে লাভ করবে।
অভ্যাস যোগযুক্তেন চেতসা ন অন্যগামিনা ।
পরমম্ পুরুষম্ দিব্যম্ যাতি পার্থ অনুচিন্তয়ন ।।৮
অর্থ-হে পার্থ অভ্যাস যোগে যুক্ত হয়ে অনন্যগামী চিত্তে যিনি আমার ধ্যান করেন, তিনি অবশ্যই আমাকে প্রাপ্ত হয়।
কবিম্ পুরানাম্ অনুশাসিতারম
অণোঃ অনিয়াংসম অনুস্মরেদ যঃ ।
সর্বস্য ধাতারম্ অচিন্ত রুপম্
আদিত্যবর্নম তমসঃ পরস্তাত্ ।।৯
অর্থ-সর্বজ্ঞ সনাতন নিয়ন্তা সুক্ষ্য থেকে সুক্ষ্যতর,সকলের বিধাতা,জড় বুদ্ধির অতীত,অচিন্ত পুরুষরুপে পরমেশ্বর ভগবানের ধ্যান করা উচিত্। তিনি সুর্যের মত জোর্তিময় এবং সেই জড়া প্রকৃতির অতীত।
প্রায়ানকালে মনসা অচলেন
ভক্তা যুক্তঃ যোগবলেন চ এব ।
ভ্রুবোঃ মধ্যে প্রানম্ আবেশ্য সম্যক
সঃ তম্ পরম্ পুরুষম্ উপৈতি দিব্যম্ ।।১০
অর্থ-যিনি মৃত্যুর সময় অচঞ্চল চিত্তে ভক্তি সহকারে পুর্নযোগ অভ্যাস বশত ভ্রুযুগলের মধ্যে প্রানকে স্থীর করে পরমেশ্বর ভগবাকে স্বরন করেন, তিনি অবশ্যই সেই দিব্য পরম পুরুষকে প্রাপ্ত হয়।
যত্অক্ষরম্ বেদবিদঃ বদন্তি
বিশন্তি যত্ যতয়ঃ বীতরাগঃ ।
যত্ ইচ্ছন্তঃ ব্রহ্মচর্য্যম চরন্তি
তত্ তে পদম্ সংগ্রহেন প্রবক্ষ্যে ।।১১
অর্থ-বেদবিদ পন্ডিতেরা যাকে অক্ষর বলে অভিহিত করেন,বিষয় আশক্তি শুন্য সন্নাসীরা যারে লাভ করার ইচ্ছায় ব্রহ্মচর্য্য পালন করেন তাদের কথা আমি তোমাকে বলব।
সর্বদ্বারানি সংযম্য মনঃ হৃদি নিরুধ্য চ ।
মুর্ধি আধায় আত্মনঃ প্রানাম আস্থিতঃ যোগধারনম্ ।।১২
অর্থ-ইন্দ্রিয়ের সবকটি দ্বার সংযত করে মনকে হৃদয়ের নিরুধ্য করে ভ্রুদ্বয়ের মধ্যে প্রান স্থাপন করে যোগে স্থীত হতে হয়।
ওঁ ইতি একাক্ষরম ব্রহ্ম ব্যাহারন মাম্ অনুস্মরন ।
যঃ প্রযাতি ত্যজন দেহম্ সংযাতি পরামাম্ গতিম্ ।।১৩
অর্থ-যোগ অভ্যাসে প্রবৃত্ত হয়ে পবিত্র ওঙ্কার উচ্চারন করতে করতে কেউ যদি পরমেশ্বর ভগবাকে স্মরন করে দেহ ত্যাগ করেন,তিনি অবশ্যই পরমগতি লাভ করে।
অনন্য চেতাঃ সততম্ যঃ মাম্ স্মরতি নিত্যশঃ ।
তস্য অহম্ সুলভঃ পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিনঃ ।।১৪
অর্থ-যিনি একগ্র চিত্তে কেবল আমাকেই নিরন্তর স্মরন করেন, আমি সেই নিত্তযুক্ত ভক্ত যোগিদের কাছে সুলভ হই।
মাম্ উপেত্য পুনঃ জন্ম দুঃখালয়ম্ অশাশ্বতম্ ।
ন অপ্নুবন্তি মহাত্মনঃ সংসিদ্ধিম্ পরমাম্ গতাঃ ।।১৫
অর্থ-মহাত্মগন ভক্তিপরায়ন যোগীগন, আমাকে লাভ করে আর এই দুঃখ্যপুর্ন নশ্বর সংসারে পুনরায় জন্মগ্রহন করেন না, তারা সর্বোচ্চ সিদ্ধি লাভ করেছেন।
আব্রহ্ম ভূবনাত্ লোকাঃ পুনঃ আবর্তিনঃ অর্জুন ।
মাম উপেত্য তু কৌন্তেয় পুনর্জন্ম বিদ্যতে ।।১৬
অর্থ-হে অর্জুন ভূবন থেকে ব্রহ্মলোক পর্য্যন্ত সমস্ত লোকই পুনরাবর্তনশীল কিন্তু হে কৌন্তেয়, আমাকে লাভ করলে তার আর জন্ম হয় না।
সহস্রযুগ পর্যন্তম্ অহঃ যত্ ব্রহ্মনঃ বিদুঃ ।
রাত্রিম যুগ সহস্রান্তাম তে অহোরাত্র বিদঃ জনাঃ ।।১৭
অর্থ-মনুষ্য মানের সহস্র চতুর্যুগে ব্রহ্মার একদিন এবং সহস্র চতুর্যুগে তার একরাত্র।
অব্যক্তাত্ ব্যক্তয়ঃ সর্বাঃ প্রভবন্তি অহরাগমে ।
রাত্রি আগমে প্রলীয়ন্তে তত্র এব অব্যক্ত সংজ্ঞকে ।।১৮
অর্থ-ব্রহ্মার দিনের সমাগমে সমস্ত আকৃতি বিশিষ্ঠ বস্তু অব্যক্ত থেকে অভিব্যক্ত হয়, এবং ব্রহ্মার রাত্রীর আগমনে তা পুনরায় লয় প্রপ্ত হয়।
ভূত গ্রামঃ সঃ এব অয়ম্ ভূত্বা প্রলিয়তে ।
রাত্রি আগমে অবশঃ পার্থ প্রভবতি অহঃ আগমে ।।১৯
অর্থ-হেপার্থ সেইভূত সমুহ পুনপুন উত্পন্ন হয় ব্রহ্মার রাত্রি সমাগমে লয়প্রাপ্ত হয়,