• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
শনিবার, ডিসেম্বর 2, 2023
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result
  • বইয়ের নামঃ কবিতার দিকে ও অন্যান্য রচনা
  • লেখকের নামঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
  • বিভাগসমূহঃ কাব্যগ্রন্থ

০১. কবিতা ও সংস্কৃতি

আমরা যদি আঙুল তুলে দেখিয়ে দিতে পারতুম যে, কোন সংস্কৃতির কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ, তাহলে ধরতে পারা যেত, কোন কবিতা কোন সংস্কৃতির এলাকার মধ্যে পড়ে কিংবা পড়ে না। কিন্তু তেমনভাবে আমরা আঙুল তুলতে পারছি কোথায়? যত সহজে একটা রাষ্ট্র, রাজ্য, জেলা, মহকুমা কিংবা পৌর এলাকার সীমানা আমরা নির্দেশ করতে পারি, সংস্কৃতির সীমানা তত সহজে নির্দেশ করবার জো নেই। দিনের আলো যেরকম নিজের শেষ সীমানার স্পষ্ট কোনও নির্দেশ না-রেখে রাত্রির অন্ধকারে হারিয়ে যায়, একটা সংস্কৃতিও ঠিক তেমনভাবেই অন্য সংস্কৃতির মধ্যে গিয়ে মেশে। বস্তৃত, না-আলো না-আঁধার গোধূলির এলাকা এক্ষেত্রে আরও বড়ো বলেই ধাঁধাটা আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়, এবং একটা সংস্কৃতির শেষ সীমানার পিলপেগুলোকে খুঁজতে খুঁজতে, হঠাৎ একসময়ে আমরা বুঝতে পারি যে, ইতিমধ্যে আমরা আর-একটা সংস্কৃতির ভিতর-মহলে এসে ঢুকে পড়েছি।

তিরিশের এক ইংরেজ কবিও ঠিক এই রকমের একটা ধাঁধার কথা তুলেছিলেন। তবে তাঁর সমস্যার ক্ষেত্রটা ছিল আরও ছােটো। সংস্কৃতির সঙ্গে কবিতার যোগসম্পর্ক নয়, তিনি খুঁজছিলেন এক ধরনের কবিতার সঙ্গে আর-এক ধরনের কবিতার যোগসূত্র। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ইংরেজি কবিতাকে একটা উদ্যান হিসেবে কল্পনা করে নিয়ে সেই উদ্যানকে কি আমরা ছোটোবড়ো কতকগুলো টুকরোয় ভাগ করে ফেলতে পারি, এবং সেই টুকরোগুলোর চারধারে বেড়া বেঁধে বলতে পারি যে, দ্যাখো, এইটে হচ্ছে ওয়ার্ডসওয়ার্থের বাগান, আর ওইটে হচ্ছে শেলির? সেই কবি, ডে-লুইস, নিজেই অতঃপর জানাচ্ছেন যে, না, তা আমরা পারি না।

বলা বাহুল্য, কবিতার ক্ষেত্রে যে-বেড়া বাঁধা যায় না, সংস্কৃতির বৃহত্তর ক্ষেত্রে তাকে বাঁধতে যাওয়া আরও হাস্যকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কেন-না, এক সংস্কৃতি যেখানে অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে যায়, সেই টোয়াইলাইট জোন সে-ক্ষেত্রে আরও বড়ো। কথাটা সত্য আমাদের বঙ্গীয় সংস্কৃতি সম্পর্কেও। সীমানা-নিৰ্দেশক কোনও পিলপে কিংবা চেকপোস্ট সেখানে আমাদের চোখে পড়ে না। কিংবা সাইনবোর্ড লটকে কেউ সেখানে আমাদের বলে দেয় না যে, এই তুমি বঙ্গসংস্কৃতির এলাকা ছাড়িয়ে অন্য সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকছে। তাহলে তার চৌহদ্দি আমরা কীভাবে বুঝে নেব, এবং কীভাবেই-বা নিশ্চিত হয়ে বলব যে, আধুনিক ংলা কবিতা বলতে যা আমরা বুঝি, তা এই বঙ্গসংস্কৃতির চৌহদ্দির মধ্যে পড়ে না?

তবে, বঙ্গসংস্কৃতির চতুঃসীমার স্পষ্ট কোনও নির্দেশ না-পেলেও, আধুনিক বাংলা কবিতার সঙ্গে তার যোগ-সম্পর্ক নিয়ে যে কেন প্রশ্ন ওঠে, সেটা আমরা ঠিকই বুঝতে পারি। প্রশ্ন ওঠবার কারণ আর কিছুই নয়, আমাদের এই বঙ্গভূমির সংস্কৃতি সম্পর্কে যে একটা মোটাদাগের ধারণা অনেকে লালন করে থাকেন, আধুনিক বাংলা কবিতার প্রকৃতিকে তাঁরা চট করে তার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন। না। ফলে তাঁরা অস্বস্তি বোধ করেন, তাদের মনের মধ্যে এই নতুন ধাঁচের কবিতা সম্পর্কে নানা সংশয়ের ছায়া পড়তে থাকে, এবং একসময়ে তারা বলেও বসেন যে, আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এর কোনও যোগ-সম্পর্ক নেই, এটা নেহাতই বাইরেথেকে-আমদানি-করা কিংবা উপর-থেকে-চাপিয়ে-দেওয়া উটকো একটা ব্যাপার।

স্বীকার করা ভালো যে, মোটা-দাগের এই ধারণা আসলে মোটা-দাগের কিছু অনুষ্ঠানকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠে। অর্থাৎ এমন কিছু অনুষ্ঠানের কাছে সে প্রশ্রয় পায়, যার সাংস্কৃতিক কুলপরিচয় নিয়ে তর্কের কোনও অবকাশ নেই, এবং খুব সহজেই যাকে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক জীবনের অঙ্গীভূত ব্যাপার বলে শনাক্ত করতে পারি। যথা মাঘমণ্ডল কিংবা পৌষপার্বণ। এ যে আমাদের বঙ্গসংস্কৃতির একেবারে খাসমহলের ব্যাপার, তা নিয়ে কোনও তর্কই কখনও উঠবে না। বলা বাহুল্য, এই রকমের আরও অসংখ্য অনুষ্ঠান আমাদের রয়েছে। কিন্তু শুধু এইসব অনুষ্ঠানকেই যদি আমরা আমাদের সংস্কৃতির একমাত্র অভিজ্ঞান বলে গণ্য করি, এবং শুধু এরই উপরে নির্ভর করে পেতে চাই আমাদের সংস্কৃতির সার্বিক পরিচয়, তা হলে আমাদের অবস্থা হবে সেইসব অন্ধের মতো, যাদের কেউ-বা শূড়, কেউ বা লেজ আর কেউ-বা পায়ের উপরে হাত বুলিয়ে হাতির চেহারা আন্দাজ করতে চেয়েছিল। হাতি নামক প্রাণীটির তারা খণ্ড-পরিচয় পেয়েছিল, পূর্ণ-পরিচয় পায়নি। একটু আগে যেসব অনুষ্ঠানের উল্লেখ করেছি, তার মধ্যেও বস্তৃত আমাদের সংস্কৃতির একটা খণ্ড-পরিচয় ধরা রয়েছে। এগুলি আমাদের সংস্কৃতির। সেই অংশের মধ্যে পড়ে, মূলত যা গ্রােমজ সংস্কৃতি কিংবা লোকসংস্কৃতি। এদের যোগ অনেকটাই আঞলিক ধর্মবিধি, সংস্কার কিংবা লোকচারের সঙ্গে। এবং শুধু এরই উপরে নির্ভর করে যদি আমরা বঙ্গসংস্কৃতির পরিচয় পাবার চেষ্টা করি, তাহলে তার পূর্ণ পরিচয় আমরা জানতে পারব না।

কার্যত আমরা অনেকে কিন্তু তা-ই করে থাকি। সংস্কৃতির বিচার করতে বসে অতিমাত্রায় নির্ভর করি এইসব আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া কিংবা লক্ষণের উপরে। এবং মধ্যযুগের বাংলা কাব্যে যেহেতু লোকসংস্কৃতির এলাকাভুক্ত নানা পদ্ধতি-প্রক্রিয়ার লক্ষণ খুবই ভুরিপরিমাণে ছড়িয়ে আছে, তাই সেই কাব্যকে বিশুদ্ধ বঙ্গীয় সংস্কৃতির ফসল বলে গণ্য করতে আমাদের কোনও অসুবিধে হয় না। মধ্যযুগ অবসিত হবার পরেও আমাদের কবিতায় এসব লক্ষণ অনেক পরিমাণে থেকে গিয়েছিল। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ছিল ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের কবিতায়। খুবসম্ভব সেই কারণেই গুপ্তকবিকে আমরা খাটি বাঙালি কবি বলতে অভ্যস্ত হয়েছি।

গুপ্তকবি খাঁটি বাঙালি কবি ছিলেন হয়তো, কিন্তু খুব বড়ো দরের কবি ছিলেন কি না, সেটা সন্দেহের বিষয়। যা দিয়ে কবিতা লেখা হয়, সেই উপকরণের ঊর্ধ্বে যিনি উঠতে পারেন, তাকেই আমরা বড়ো কবি বলি। গুপ্তকবি সে-ক্ষেত্রে তার উপকরণের দ্বারাই শৃঙ্খলিত, তার ঊর্ধ্বে তিনি উঠতে পারেননি। কিন্তু সে-কথা এখন থাক। ‘খাঁটি বাঙালি কবি’ সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্র যা বলেছিলেন, আপাতত সেটাই আমাদের বিচার্য। বঙ্কিম বলেছিলেন, “এখন আর খাঁটি বাঙালি কবি জন্মে না- জন্মিবার জো নাই- জন্মিয়া কাজ নাই।” কথাটার অর্থ কী? আসলে, বঙ্কিম খুব স্পষ্ট করেই উপলব্ধি করেছিলেন যে, সামাজিক যে-পরিবেশ আমাদের কবিতার ক্ষেত্রে তথাকথিত খাঁটি বাঙালিয়ানাকে উৎসাহিত করে, সেই পরিবেশটিাই আর নেই। তিনি লক্ষ করেছিলেন যে, এতাবৎকােল যা ছিল মূলত গ্ৰামমুখী, ফলত লোকসংস্কৃতির নানা লক্ষণের দ্বারা আপাদমস্তক চিহ্নিত, নগরজীবনের বিকাশের সঙ্গে-সঙ্গে সেই বঙ্গসংস্কৃতির ক্ষেত্র স্বতই আরও প্রসারিত হয়েছে, এবং গ্রামীণ চরিত্রের পাশাপাশি তার একটা নাগরিক চরিত্রও গড়ে উঠেছে। তার চেয়েও বড়ো কথা, আমাদের সাহিত্যপ্রয়াস ইতিমধ্যে শহরে এসে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, এবং— সেই কারণে— তার মধ্যে আর গ্রামজি সংস্কৃতির মোটাদাগের লক্ষণগুলোকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। বলা বাহুল্য, এটাই যে স্বাভাবিক এবং এর জন্য হা-হুতাশ করা যে নিরর্থক, বঙ্কিম তা-ও খুব ভালোই বুঝেছিলেন। নইলে, “পৌষপার্বণে যে একটা সুখ আছে, বৃত্ৰসংহারে তাহা নাই” এ-কথা জেনেও তিনি বলবেন কেন যে, আমরা বৃত্ৰসংহারই চাই, তার বদলে “পৌষপার্বণ চাই না”?

এখানে একটা কথা বলে নেওয়া দরকার। সেটা এই যে, শহর। এদেশে আগেও ছিল। কিন্তু সেই শহর আর বঙ্কিমের সময়কার শহরের চরিত্র এক নয়। বঙ্কিমের শহর তো মধ্য-উনিশ শতকের কলকাতা। গ্রামজ সংস্কৃতির সঙ্গে তার চিত্তের সম্পর্ক নিশ্চয় আগের তুলনায়- ধরা যাক গ্রামজ সংস্কৃতির সঙ্গে শেষ মধ্যযুগীয় কৃষ্ণনগরের চিত্তের যে-সম্পর্ক, সেই তুলনায়— অনেক কমে এসেছিল। এখন আরও কমেছে। ফলত, যে ‘বৃত্ৰসংহার’কে বঙ্কিম- ‘পৌষপার্বণের তুলনায়— প্রগত মানসিকতার ফসল বলে মনে করেছিলেন, একালের কলকাতার শিক্ষিত সমাজ তাকেও বিশেষ প্ৰগত কিংবা প্রাসঙ্গিক ব্যাপার বলে গণ্য করে না। সাহিত্যমাত্ৰেই তো এক ধরনের উচ্চারণ। বৃত্ৰসংহারীও তা-ই। কিন্তু যে-ধরনের উচ্চারণ, একালের শিক্ষিত নাগরিক মানুষ তার সঙ্গে কোনও সাযুজ্য অনুভব করে। না, ফলে তার দ্বারা তার নান্দনিক ক্ষুধার তৃপ্তি ঘটে না। এই সহজ সত্যটাকে স্বীকার করে নিলেই ধরতে পারা যাবে যে, রবীন্দ্রনাথের সময় থেকে বাংলা কবিতা যে একটা ভিন্ন পথে মোড় নেয়, এবং সেইখানেই থেমে না গিয়ে ক্ৰমেই। আরও নূতনতর সম্ভাবনার মধ্যে খুঁজতে থাকে তার মুক্তি, এটা কোনও উটকো আকস্মিক ঘটনা নয়। আসলে আমাদের নাগরিক মানসিকতার ক্ৰমিক বিবর্তনের মধ্যেই কবিতার এই দিক-বদলের জমি ক্ৰমে তৈরি হয়ে উঠেছিল।

কিন্তু অত্যন্ত সহজ সত্যকেও অনেক ক্ষেত্রে আমরা স্বীকার করি না। এবং আমরা খেয়াল করে দেখি না যে, এরই ফলে আমাদের আচরণে ও উক্তিতে কত পার্থক্য ঘটে যায়। আমরা একদিকে আমাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনের তাড়নায় বৃহৎ-সংসার থেকে সরে গিয়ে ছোটোমাপের সংসার রচনায় প্রবৃত্ত হই, এবং অন্যদিকে একান্নাবতী পরিবারের জন্য সমানে আশ্রমোচন করি। আমরা একদিকে বিজলিবাতির সুবিধেটুকু গ্ৰহণ করতে ছাড়ি না, এবং অন্যদিকে বলি যে, রেড়ির তেলের আলোয় চক্ষু খুবই মিগধ থাকে, সুতরাং আমাদের ‘বাপ-পিতেমো’রা যে রেড়ির তেলের পিদ্দিম জ্বেলে পড়াশোনা করতেন, সেটাই ছিল ভালো ব্যবস্থা। মেয়েদের যে স্বয়ং-নির্ভর হওয়া দরকার, মনে মনে এইটে বুঝে গিয়ে আমরা একদিকে আমাদের কন্যাদের ইশকুল-কলেজে পাঠাই, এবং অন্যদিকে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলি, “আর কি এরা আদর করে পিড়ি পেতে অন্ন দেবে? আহা, কী কথাই না গুপ্তকবি লিখে গিয়েছেন!” আসলে এসব মায়াকান্না ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা যদি সত্যিই বুঝতুমি যে, একান্নবর্তী পরিবারই ভাল, রেড়ির তেলের আলোই ভালো এবং স্ত্রীজাতিকে হেঁসেলের মধ্যে আটকে রাখাই ভাল, তা হলে নিশ্চয় একান্নবর্তী পরিবার থেকে আমরা বেরিয়ে আসতুম না, বিজলিবাতিকে আমাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দিতুম না এবং বাড়ির মেয়েদের ইশকুল-কলেজে পাঠাতুম না। কিন্তু তাতে আমরা রাজি নই। আমরা একই সঙ্গে বর্তমানের আঁচল ধরে চলব, এবং অতীতের জন্যে মায়াকান্না কঁদব। ভেবেও দেখব না যে, এটা কত বড়ো ভণ্ডামি।

এই ভণ্ডামি আসলে আমাদের সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রেই চলেছে। প্রশ্নটা অবশ্য সর্বদা ঠিক ভালো-মন্দেরও নয়। এমনকি প্রয়োজন-অপ্রয়োজনেরও নয়। বরং বলা যায়, সাযুজ্যবোধের। আমাদের শহুরে শিক্ষিত মানুষদের অনেকেই যে ময়দানে গিয়ে সংস্কৃতি-সম্মেলনের ছাউনির তলায় বসে, দেহতত্ত্বের গান শুনে কিংবা কবির লড়াই দেখে মুগ্ধ হন, তাতে বিস্ময়ের কিছুই নেই। কেন-না, এ তো আমরা জানিই যে, যা একেবারে আহেলা বিদেশি বস্তু, তা-ও অনেকক্ষেত্ৰে- আর কিছু নয়, শুধু আউটল্যানডিশ বলেই— আমাদের চিত্তে কিছুটা মোহের সঞার করে। দেহতত্ত্ব কিংবা কবির লড়াই তো সে-ক্ষেত্রে আমাদের ঘরেরই জিনিস, সুতরাং তার সান্নিধ্যে এসে কেউ মুগ্ধ হলে আমরা বিস্মিত হব কেন। কিন্তু শহুরে শিক্ষিত মানুষরা যখন নিতান্ত মুগ্ধ হয়েই ক্ষান্ত হন না, উপরন্তু বলেন যে, ওরই মধ্যে তাঁদের চিত্তের মুক্তি, তখন একটু ধাঁধা লাগে বইকি। তার কারণ, যে-পরিবেশে তারা লালিত হয়েছেন ও যে-ধরনের শিক্ষা তারা পেয়েছেন, তাতে তাদের চিত্তবৃত্তি আরও সূক্ষ্ম ও জটিল হবার কথা, এবং— সেই কারণেই- লোকসংস্কৃতির ওই দুই নিদর্শনের সঙ্গে র্তাদের বিশেষ সাযুজ্যবোধ করবার কথা নয়। বস্তৃত তাদের অনেক বেশি আত্মীয়তা বোধ করবার কথা আরও সূক্ষ্ম এবং আরও জটিল গান কিংবা কবিতার সান্নিধ্যে এসে।

হতে পারে যে, সত্যিই তাদের একাংশ তা করেন না। সে-ক্ষেত্রে সন্দেহ স্বাভাবিক যে, যদিও তারা শহুরে সংস্কৃতির কোলে বর্ধিত হয়েছেন, তবু নাগরিক পরিবেশ ও শিক্ষার সূক্ষ্মতা ও জটিলতা তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। (সেটা যে একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার, তা-ও নয়। বস্তৃত, আজন্ম শহরে কাটিয়েও চলনে-বালনে আমৃত্যু এক ধরনের গ্রাম্য সারল্য বজায় রেখে যান, এমন মানুষও এই কলকাতায় অনেক চোখে পড়বে।) অন্যদিকে, সূক্ষ্মতা ও জটিলতার মধ্যে যাঁরা আদৌ অস্বস্তি বোধ করেন না, এবং চরিত্রে ও মেজাজে যাঁরা সর্বৈব আর্বান, বৈঠকখানায় বাঁকুড়ার ধর্মঠাকুরের ঘোড়া কিংবা পুরুলিয়ার ছৌ-নৃত্যের মুখোশ সাজিয়ে তাঁরা যখন আধুনিক বাংলা কবিতার আদ্যশ্ৰাদ্ধ করেন, এবং ঘোষণা করেন যে, এই কবিতা আমাদের সংস্কৃতির বহির্ভূত একটা ব্যাপার, ফলত এতে আমাদের নান্দনিক ক্ষুধার তৃপ্তি নেই, তখন তাঁদের ভণ্ড না-বলে কোনও গত্যন্তর থাকে না।

ভণ্ডামির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মুখতা। ভণ্ডেরা সব জেনেশুনেও যে অতীতের জয়ধ্বনি দেয়, তার কারণ, তারা জানে যে, তাতেই হাততালি মিলাবার সম্ভাবনা। সেকেলে ছায়াছবিতে দূরবাসী স্বামীকে যে-কারণে একটু শিথিল-চরিত্রের মানুষ হিসেবে দেখানো হত, এবং মদিরাক্ষী মায়াবিনীর খপ্পর থেকে যে-কারণে তাকে আবার সাধবী রমণীর কাছে ফিরিয়ে আনা হত, কিংবা শ্রমিকের প্রণয়িনী নায়িকার শিল্পপতি-পিতাকে দিয়ে যে-কারণে অতি উদাত্ত কণ্ঠে বালানো হত, “ভাইসব, এই কারখানা আমি তোমাদের নামেই লিখে দিলুম”, একেলে নাগরিক মজলিশেও ঠিক সেই একই কারণে অনেকসময়ে সেকেলে ধাঁচের কবিতার জন্য অশ্রুমোচন করা হয়। এ আর কিছুই নয়, নিছক ক্ল্যাপট্র্যাপের ব্যাপার।

আর মূর্খেরা সে-ক্ষেত্রে জানেও না যে, জীবন্ত যে-কোনও সংস্কৃতির সীমারেখা কীভাবে দিনে দিনে, আমাদের দৃষ্টির অগোচরে, দূর থেকে আরও দূরে সরে যেতে থাকে। একটি জীবন্ত ভাষা যেভাবে অন্য ভাষার শব্দ আত্মসাৎ করে, একটি জীবন্ত সংস্কৃতিও ঠিক তেমনভাবেই রচনা করে তার নবীনতর প্রয়াসের ক্ষেত্র, কিংবা হাত বাড়িয়ে দেয় অন্যবিধ প্রবণতার দিকে, এবং এইভাবেই ক্ৰমে বাড়িয়ে নেয়। তার সীমানা। এই যে জীবন্ততা, এরই দিকে আঙুল তুলেছিলেন এক বাঙালি কবি। সংস্কৃতি-বিষয়ক এক বিতর্ক-বৈঠকে রহস্যচ্ছলে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, বঙ্গসংস্কৃতি বলতে কি আমরা এমন এক অট্টালিকার কথা বুঝব, যার নির্মাণকার্য আজ থেকে অনেককাল আগেই সমাপ্ত হয়ে গেছে, এবং যাতে আর এখন নতুন করে কিছু জানলা-দরজা ফোটাবার কিংবা যার ঘরের সংখ্যা কিছু বাড়িয়ে নেবার কোনও উপায়ই আর নেই?

না, তা আমরা বুঝি না। বঙ্গসংস্কৃতি যদি শুধু জারি সারি, আউল বাউল, পালপার্বণ, আলপনা আর পাঁচালির মধ্যেই আটকে থাকত, তাহলে বুঝতে হত যে, এর প্রাণশক্তি কবেই নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু সেটা হয়নি বলেই তার পরিসর এখন আগের তুলনায় অনেক বড়ো। একদিকে সে যেমন গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছে তার রাজ্যপাট, অন্যদিকে তেমনই ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত থেকে মাইকেল কি হেম নবীন পর্যন্ত এসেই তার দম ফুরিয়ে যায়নি। রবীন্দ্রনাথ থেকে জীবনানন্দ, সবকিছুকেই সে অক্লেশে আত্মসাৎ করতে পেরেছে। আরও পারবে। শহরে বসে চণ্ডীমণ্ডপের জন্য যিনি যতই হা-হুতাশ করুন, বঙ্গসংস্কৃতির অগ্রগতি তাতে আটকে থাকবে না।

চৈত্র, ১৩৮১

Previous Post

কবিতার বদলে কবিতা – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

Next Post

ভাদুড়ি সমগ্র – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

No Result
View All Result
  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
Next Post
ভাদুড়ি সমগ্র - নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

ভাদুড়ি সমগ্র - নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Go to mobile version