যেয়ো না যেয়ো না মদিনা-দুলাল
যেয়ো না যেয়ো না মদিনা-দুলাল,
হয়নি যাবার বেলা।
সংসার-পাথারে আজও দুলে পাপের ভেলা।
আজও হয়নি যাবার বেলা॥
মেটেনি তোমারে দেখার পিয়াসা,
মেটেনি কদম জিয়ারত আশা,
হজরত, এই জমেছে প্রথম
দীন-ই-ইসলাম মেলা॥
ছড়ায়ে পড়েনি তোমার কালাম
আজিও সকল দেশে,
ফিরিয়া আসেনি সিপাহিরা তব
আজও বিজয়ীর বেশে॥
দীনের বাদশা চাও ফিরে চাও
শোনো দুর্দিনে বেদনা ভোলাও
গুনাহ্গার এই উম্মতে তব
হানিয়ো না অবহেলা॥
রবে না এ বৈকালি ঝড় সন্ধ্যায়
চিত্রা-গৌরী – ঠুংরি
রবে না এ বৈকালি ঝড় সন্ধ্যায়।
বহিবে ঝিরিঝিরি চৈতালি বায়॥
দুপুরে যে ধরেছিল দীপক তান
বেলাশেষে গাহিবে সে মুলতানে গান,
কাঁদিবে সে পুরবিতে গোধূলিবেলায়॥
নৌবতে বাজিবে গো ভীম-পলাশি
উদাস পিলুর সুরে ঝুরিবে বাঁশি,
বাজিবে নূপুর হয়ে তটিনী ও-পায়॥
রাখিসনে ধরিয়া মোরে, ডেকেছে মদিনা আমায়
আশাবরি পিলু – কারফা
রাখিসনে ধরিয়া মোরে,
ডেকেছে মদিনা আমায়।
আরফাত-ময়দান হতে
তারই তকবীর শোনা যায়॥
কেটেছে পায়ের বেড়ি,
পেয়েছি আজাদি ফরমান,
কাটিল জিন্দেগি বৃথাই
দুনিয়ার জিন্দান-খানায়॥
ফুটিল নবির মুখে
যেখানে খোদার বাণী,
উঠিল প্রথম তকবীর
‘আল্লাহ্ আকবর’ধ্বনি,
যে দেশে পাহাড়ে মুসা
দেখিল খোদার জ্যোতি,
যাব রে যাব সেইখানে,
রব না পড়িয়া হেথায়॥
যে দেশের ধুলিতে
আছে নবিজির চরণ-ধূলি,
সে-ধূলি করিব সুর্মা,
চুমিব নয়নে তুলি,
যে দেশের বাতাসে আছে
নবিজির দেহের খোশবু,
যে দেশের মাটিতে আছে
নবিজির দেহ মিশে হায়॥
খেলেছে যেথায় ফাতেমা,
খেলেছে হাসান ও হোসেন,
যাব সেই বেহেশ্তে ধরার,
খোদার ওই ঘর কাবা যথায়।
শহিদি ঈদগাহে দেখ আজ জমায়ত ভারি
পিলু-খাম্বাজ – দাদরা
শহিদি ঈদগাহে দেখ আজ জমায়ত ভারি।
হবে দুনিয়াতে আবার ইসলামি ফরমান জারি॥
তুরান ইরান হেজাজ মেসের হিন্দ মরক্কো ইরাক,
হাতে হাত মিলিয়ে আজ দাঁড়ায়েছে সারি সারি॥
ছিল বেহোশ যারা আঁশু ও আপশোশ লয়ে,
চাহে ফিরদৌস তারা জেগেছে নও জোশ লয়ে।
তুইও আয় এই জমা-তে ভুলে যা দুনিয়াদারি॥
ছিল জিন্দানে যারা আজকে তারা জিন্দা হয়ে
ছোটে ময়দানে দারাজ-দিল আজি শমশের লয়ে।
তকদির বদলেছে আজ উঠিছে তকবীর তারই॥
সকাল হল, শোন রে আজান, ওঠ রে শয্যা ছাড়ি
সকাল হল, শোন রে আজান, ওঠ রে শয্যা ছাড়ি।
মসজিদে চল দীনের কাজে ভোল দুনিয়াদারি॥
ওজু করে ফেল রে ধুয়ে নিশীথ রাতের গ্লানি,
সিজদা করে জায়-নামাজে ফেল রে চোখের পানি,
খোদার নামে সারাদিনের কাজ হবে না ভারী॥
নামাজ পড়ে দু-হাত তুলে প্রার্থনা কর তুই,
ফুল-ফসলে ভরে উঠুক সকল চাষির ভুঁই,
সকল লোকের মুখে হউক আল্লার নাম জারি॥
ছেলেমেয়ে সংসার-ভার সঁপে দে আল্লারে,
নবিজির দোওয়া ভিক্ষা কর রে বারে বারে,
তোর হেসে নিশি প্রভাত হবে, সুখে দিবি পাড়ি॥
সাহারাতে ফুটল রে রঙিন গুলে-লালা
পাহাড়ি – কারফা
সাহারাতে ফুটল রে
রঙিন গুলে-লালা।
সেই ফুলেরই খোশবুতে
আজ দুনিয়া মাতোয়ালা॥
সে ফুল নিয়ে কাড়াকাড়ি
চাঁদ সুরুয গ্রহ তারায়,
ঝুঁকে পড়ে চুমে সে ফুল
নীল গগন নিরালা॥
সেই ফুলেরই রওশনিতে
আরশ কুরসি রওশন,
সেই ফুলেরই রং লেগে
আজ ত্রিভুবন উজালা॥
সেই ফুলেরই গুলিস্তানে
আসে লাখো পাখি,
সে ফুলেরে ধরতে বুকে
দুলে রে ডাল-পালা॥
চাহে সে ফুল জিন ও ইনসান
হুর পরি ফেরেশতায়,
ফকির দরবেশ বাদশা চাহে
করতে গলে মালা॥
চেনে রসিক ভোমরা বুলবুল
সেই ফুলের ঠিকানা,
কেউ বলে হজরত মোহাম্মদ
কেউ বা কমলিওয়ালা॥
সৈয়দে মক্কী মদনী আমার নবি মোহাম্মদ
মিশ্র খাম্বাজ – কারফা
সৈয়দে মক্কী মদনী
আমার নবি মোহাম্মদ।
করুণা-সিন্ধু খোদার বন্ধু
নিখিল মানব-প্রেমাস্পদ॥
আদম নূহ্ ইবরাহিম দাউদ
সোলেমান মুসা আর ইসা,
সাক্ষ্য দিল আমার নবির,
তাদের কালাম হল রদ॥
যাঁহার মাঝে দেখল জগৎ
ইশারা খোদার নূরের,
পাপ দুনিয়ায় আনল যে রে
পূণ্য বেহেশ্তি সনদ॥
হায় সেকান্দর খুঁজল বৃথাই
আব-হায়াত এই দুনিয়ায়,
বিলিয়ে দিল আমার নবি
সে সুধা মানব সভায়।
হায় জুলেখা মজল বৃথাই
ইউসোফের ওই রূপ দেখে,
দেখলে আমার নবির সুরত
যোগীন হত ভসম্ মেখে।
শুনলে নবির শিরীন জবান,
দাউদ মাগিত মদদ॥
ছিল নবির নূর পেশানীতে,
তাই ডুবল না কিশতী নূহের,
পুড়ল না আগুনে হজরত
ইব্রাহিম সে নমরুদের,
বাঁচল ইউনোস মাছের পেটে
স্মরণ করে নবিব পদ,
দোজখ আমার হারাম হল
পিয়ে কোরানের শিরীন শহদ॥