দেখে যা রে, দুলা সাজে সেজেছেন মোদের নবি
সিন্ধু – কারফা
দেখে যা রে, দুলা সাজে
সেজেছেন মোদের নবি॥
বর্ণিতে সে রূপ মধুর
হার মানে নিখিল-কবি॥
আউলিয়া আর আম্বিয়া সব
পিছে চলে বরাতি,
আশমানে যায় মশাল জ্বেলে
গ্রহ তারা চাঁদ রবি॥
হুর পরি সব গায় নাচে আজ,
দেয় ‘মোবারক বাদ’ আলম,
আরশ কুরসি ঝুঁকে পড়ে
দেখতে সে মোহন ছবি॥
আজ আরশের বাসর-ঘরে
হবে মোবারক-রুয়ত,
বুকে খোদার ইশক নিয়ে
নওশা ওই আল-আরবি॥
মেরাজের পথে হজরত
যান চড়ে ওই বোররাকে,
আয় কলেমা শাহাদতের যৌতুক
দিয়ে তাঁর চরণ ছোঁবি॥
নাই হল মা জেওর লেবাস এই হৃদে আমার
নাই হল মা জেওর লেবাস এই হৃদে আমার।
আল্লা আমার মাথার মুকুট রসুল গলার হার॥
নামাজ রোজার ওড়না শাড়ি ওতেই আমায় মানায় ভারী,
কলমা আমার কপালে টিম, নাই তুলনা তার॥
হেরা-গুহার হিরার তাবিজ কোরান বুকে দোলে,
হদিস কেকা বাজুবন্দ দেখে পরান ভোলে।
হাতে সোনার চুড়ি যে মা
হাসান হোসেন মা ফাতেমা,
(মোর) অঙ্গুলিতে অঙ্গুরি মা নবি চার ইয়ার॥
নামাজ পড় রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই
নামাজ পড় রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই।
তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই॥
সম্বল যার আছে হাতে
হজের তরে যা ‘কাবা’তে,
জাকাত দিয়ে বিনিময়ে শাফায়ত যে পাই॥
ফরজ তরফ করে করলি কবজ ভবের দেনা
আল্লা ও রসুলের সাথে হল না তোর চেনা।
পরানে রাখ কোরান বেঁধে,
নবিরে ডাক কেঁদে কেঁদে
রাতদিন তুই কর মোনাজাত‘আল্লা তোমায় চাই’।
নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া জাহান
নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া জাহান
জপে তোমারই নাম।
তারায় গাঁথা তসবি লয়ে নিশীথে আশমান
জপে তোমারই নাম॥
ফুলের বনে নিতি গুঞ্জরিয়া
ভ্রমর বেড়ায় তব নাম জপিয়া,
হাত লয়ে ফুল কুঁড়ির তসবি ফুলের বাগান
জপে তোমারই নাম।
সাঁজ সকালে কোকিল পাপিয়া
মধুর তব নাম ফেরে গাহিয়া,
ছলছল সুরে ঝরনার ধারা নদীর কলতান
জপে তোমারই নাম॥
বৃষ্টি ধারার তসবি লয়ে
তব নাম জপে মেঘ ব্যাকুল হয়ে
সাগর কল্লোল, সমকীর হিল্লোল
বাদল ঝড় তুফান
জপে তোমারই নাম॥
বক্ষে আমার কাবার ছবি
বাগেশ্রী-সিন্ধু – কাহারবা
বক্ষে আমার কাবার ছবি,
চক্ষে মোহাম্মদ রসুল।
শিরোপরি মোর খোদার আরশ্,
গাই তারই গান পথ-বেভুল॥
লায়লির প্রেমে মজনুঁ পাগল,
আমি পাগল ‘লা-ইলা’র,
বোঝে আমায় প্রেমিক দরবেশ,
অ-রসিকে কয় বাতুল॥
হৃদয়ে মোর খুশির বাগান,
বুলবুলি তায় গায় সদাই –
ওরা খোদার দয়া যাচে,
আমি খোদার ইশ্ক চাই॥
আমার মনের মসজিদে দেয়
আজান প্রেমের ‘মুয়াজ্জিন’,
প্রাণের পরে কোরান লেখা
‘রুহ’ পড়ে তা রাত্রিদিন।
খাতুনে-জিন্নাত আমার মা,
হাসান হোসেন চোখের জল,
ভয় করি না ‘রোজ-কিয়ামত’
পুলসিরাতের কঠিন পুল
মদিনার শাহানশাহ্ কোহ-ই-তূর-বিহারি
মদিনার শাহানশাহ্ কোহ-ই-তূর-বিহারি।
মোহাম্মদ মোস্তফা নবুয়তধারী॥
আল্লার প্রিয় সখা, দুলাল মা আমিনার,
খদিজার স্বামী, প্রিয়তম আয়েশার,
আসহাবের হামদম, ওয়ালেদফাতেমার,
বেলালের আজান, খালেদের তলোয়ার,
কেয়ামতে উম্মত শাফায়ত-কারী॥
তৌহিদ-বাণী মুখে, আল কোরআন হাতে,
খোদার নূর দেখি যার হাসির ইশারাতে,
যাঁর কদমের নীচে দোলে কত জিন্নাত,
যে দু-হাতে বিলাল দুনিয়ায় খোদার মহব্বত
মেরাজের দুলহা আল্লার আরশচারী॥
নয়নে যাঁর সদা খোদার রহমত ঝরে
সংসার মরুবাসী পিয়াসার তরে,
আনিল যে কওসর সাহারা নিঙাড়ি॥
মদিনায় যাবি কে আয় আয়
মদিনায় যাবি কে আয় আয়।
উড়িল নিশান দিনের বিষাণ বাজিল যাহার দরওয়াজায়॥
হিজরত করে যে দেশে
ঠাঁই পেলেন হজরত এসে,
খেলিতেন যথায় হেসে
হাসান হোসেন ফাতেমায়॥
হজরত চার আসহাব যথায় করলেন খেলাফত,
মসজিদে যাঁর প্রিয় মোহাম্মদ করতেন এবাদত;
ফুটল যেথায় প্রথম বীর খালেদের হিম্মত,
খোশ এলহান দিতেন আজান বেলাল যেথায়॥
যার পথের ধূলির মাঝে
আহমদের চরণের ছোঁয়া রাজে,
তৌহিদের ধ্বনি বাজে
যার আশমানে যার ‘লু’হাওয়ায়॥
মরুর ধূলি উঠল রেঙে রঙিন গোলাপ-রাগে
মরুর ধূলি উঠল রেঙে রঙিন গোলাপ-রাগে।
বুলবুলিরা উঠল গেয়ে মক্কার গুলবাগে॥
খোদার প্রেমের কোন দিওয়ানা
দ্বারে দ্বারে দেয় রে হানা,
নবীন আশার আলো পেয়ে ঘুমন্ত সব জাগে॥
এ কোন তরুণ প্রেমিক এল কাবার অঙ্গনে,
সবুজ পাতার নিশান দোলায় শুকনো খেজুর বনে॥
এল নব দ্বীনের নকিব
চির-চাওয়া খোদার হবিব,
নিখিল পাপী তাপী যাঁহার পায়ের পরশ মাগে॥
মোহর্মের চাঁদ এল ওই কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়
মর্সিয়া জয়জয়ন্তী মিশ্র – সাদ্রা
মোহর্মের চাঁদ এল ওই কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়।
ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা তারই মাতম শোনা যায়॥
কাঁদিয়া জয়নাল আবেদিন বেহোশ হল কারবালায়।
বেহেশতে লুটিয়া কাঁদে আলি ও মা ফাতেমায়॥
আজও শুনি কাঁদে যেন কুল মুলুক আশমান জমিন।
ঝরে মেঘে খুন লালে-লাল শোক-মরু সাহারায়॥
কাশেমের লাশ লয়ে কাঁদে বিবি সকিনা।
আসগরের ওই কচি বুকে তির দেখে কাঁদে খোদায়॥
কাঁদে বিশ্বের মুসলিম আজি, গাহে তারই মর্সিয়া।
ঝরে হাজার বছর ধরে অশ্রু শোকে হায়॥
যাবি কে মদিনায়, আয় ত্বরা করি
পিলু – কারফা
যাবি কে মদিনায়, আয় ত্বরা করি।
তোর খেয়া-ঘাটে এল পুণ্য-তরি॥
আবুবকর উমর খাত্তাব
আর উসমান আলি হাইদর
দাঁড়ি এ সোনার তরণির
পাপী সব নাই নাই আর ডর॥
এ তরির কান্ডারি আহমদ,
পাকা সব মাঝি ও মাল্লা,
মাঝিদের মুখে সারি-গান
শোন ওই ‘লা শরিক আল্লাহ্’!
পাপ দরিয়ার তুফানে আর নাহি ডরি॥
ইমানের পারানি কড়ি আছে যার
আয় এ সোনার নায়,
ধরিয়া দীনের রশি
কলেমার জাহাজ-ঘাটায়।
ফেরদৌস হতে ডাকে হুর পরি॥