‘হুঁ–তারপর?’
‘মুরলীধরের পরে এক মেয়ে ছিল, হরিপ্রিয়া। সে সর্পাঘাতে মারা গেছে। তার চরিত্র সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানি না। তবে জামাইটি সহজ মানুষ।’
‘জামাই!’
পাণ্ডে জামাই মণিলালের কথা বলিলেন। তারপর গদাধর ও তুলসীর পরিচয় দিয়া ব্বিরণ শেষ করিলেন, ‘গদাধরটা ন্যালা-ক্যাবলা; তার যেটুকু বুদ্ধি সেটুকু দুষ্ট্র-বুদ্ধি। আর তুলসী-তুলসী মেয়েটা যে কী তা আমি বুঝে উঠতে পারিনি। নিবোধ নয়, ন্যাকাবোকা নয়, ইচড়ে পাকাও নয়; তবু যেন কেমন একরকম।’
ব্যোমকেশ ধীরে-সুস্থে একটি সিগারেটে অগ্নিসংযোগ করিয়া বলিল, ‘আপনি যেভাবে চরিত্রগুলিকে সমীক্ষণ করেছেন, তাতে মনে হয় আপনার বিশ্বাস। এদের মধ্যে কেউ পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে ঈশানবাবুর মৃত্যুর জন্য দায়ী।’
পাণ্ডে একটু হাসিয়া বলিলেন, ‘আমার সন্দেহ তাই, কিন্তু সন্দেহটা এখনও বিশ্বাসের পযায়ে পৌঁছয়নি। বৃদ্ধ অধ্যাপককে মেরে কার কি ইষ্টসিদ্ধি হল সেটা বুঝতে পারছি না। যা হোক, আপনার মন্তব্য এখন মুলতুবি থাক। আজ বিকেলবেলা দুর্গে যাওয়া যাবে; সেখানে সরেজমিন তেজবিজ করে আপনার যা মনে হয় বলবেন।’
পাণ্ডে অফিসের কাজ দেখিতে চলিয়া গেলেন। ব্যোমকেশ আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘কি মনে হল?’
বলিলাম, ‘সবই যেন ধোঁয়া-ধোঁয়া।’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘ধোঁয়া যখন দেখা যাচ্ছে, তখন আগুন আছে। শাস্ত্ৰে বলে, পর্বতো বহ্নিমান ধূমাৎ।’