খাপ থেকে উন্মাদ
সেনাপতির তলোয়ারের মত বেরিয়ে পড়তে চাইছে লোকটির অঙ্গ, পুরুষ-অঙ্গ।
ঢুকে যাচ্ছে সে সুনসান বাড়িটির ভেতর,
গাল গলা টিপে যুবতীটিকে গলিয়ে খেলতে থাকা শিশুটিকে
লোকটি, দীর্ঘদিন মনে মনে যা চাইছিল, তার তীব্র, গভীর গোপন সাধটি সে মেটায়,
ধর্ষণ করে।
শিশুটির বয়স পাঁচ। লোকটি সিদ্ধান্ত নেয়, পাঁচ তার অনেক হয়েছে,
এখন থেকে সে আর পাঁচের নয়, তিন চারের স্বাদ নেবে।
তুই কোথায় শেফালি
আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তুই কোথায়
আমার খুব তোকে স্পর্শ করতে ইচ্ছে করছে
তোর সঙ্গে আমার খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে
অনেকক্ষণ ধরে কথা, সারাদিন ধরে কথা, সারারাত ধরে কথা
আমার জানতে ইচ্ছে করছে অনেক কিছু
আমাকে একটু একটু করে, আমার খুব কাছে বসে, চোখে তাকিয়ে
চোখে না তাকিয়ে, হেসে, না হেসে, চুলে বিলি কেটে কেটে না কেটে কেটে
তুই বলবি সব, যে কথাগুলো বলার তোর কথা ছিল।
আমারও তো শোনার কথা ছিল শেফালি।
তুই কোথায় শেফালি?
যেখানে আছিস, সেখানে কি তোকে এখন দুবেলা খেতে দেয়?
তোকে জামা কাপড় দেয়, টাকা পয়সা দেয়?
নাকি তোকে কাপড় ধুতে পাঠিয়ে জলকলের মেশিনে হাত দিতে বলে,
যেন তুই জ্বলে যাস, যেন তুই ছাই হয়ে যাস!
যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তারা তোর আর্তনাদ শোনে, যেন হাত না বাড়ায়, যেন না বাঁচায়!
যেন দাঁডিয়ে দাঁড়িয়ে তারা তোর মরে যাওয়া দেখে!
তোর কিছু গোপন স্বপ্ন ছিল,
সেই স্বপ্নের কথা তুই বলবি বলেছিলি,
একটি ঘরের স্বপ্ন ছিল তোর, তোর নিজের ঘরের,
জন্মে তো কখনও নিজের কোনও ঘর দেখিসনি!
সেই স্বপ্ন, নিজেই নিজের জীবনের কষর্নী হওয়ার স্বপ্ন।
খুব গোপন স্বপ্ন।
আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোকে,
কাছে বসে, আমাকে ছুঁয়ে না ছুঁয়ে, কেঁদে না কেঁদে
তুই সেইসব সর্বনাশা স্বপ্নের কথা, বেহায়া বেশরম সুরে বলবি, সারাদিন বলবি
চারদিকে কোথাও তুই নেই কেন, হাত শুধু ফিরে ফিরে আসে,
আমাকে পেতে দে তোকে, পেতে দে,
ফিরিয়ে দিস না শেফালি!
তুষারের ঝড়ে
হঠাৎ কে যেন আমাকে ছুড়ে দিল এখানে, তুষারের ঝড়ে
যতদূর চোখ যায়, যতদূর যায় না, চোখ ধাঁধানো সাদা, শুধু সাদা, শুধু সাঁ সাঁ
উদ্বাহু নৃত্য চলছে তুষার-কন্যার, শুকনো পাতার মত আমাকে ওড়াচ্ছে,
পাকে ফেলে খুলে নিচ্ছে গা ঢাকার সবকটা কাপড়।
আমার চুল চোখ,
আমার সব,
আমার সর্বাঙ্গ ঢেকে গেছে তুষারে।
আকাশ নেমে এসেছে একেবারে কাছে, ছুঁতে নিলেই
জীবন্ত একটি ডাল খসে পড়ল,
আকাশ এখন আর আকাশের মত নয়,
মুখ থুবড়ে সেও পড়েছে ঝড়ে।
দুএকটি গাছ হয়ত ছিল কোথাও, ভেঙে ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে তুষার-স্তূপে
প্রকৃতির কাফন আমাকে মুড়িয়ে নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে কোথাও, কোনও গর্তে।
ঠোঁটদুটো কাঁপছে আমার, কান লাল হয়ে আছে, নাকে গালে রক্ত জমে আছে,
হাতের আঙুলগুলো সাদা, হিম হয়ে থাকা সাদা,
আঙুলগুলোকে আঙুল বলে বোধ হচ্ছে না, কয়েক লক্ষ সুঁই যেন বিঁধে আছে আঙুলে,
আমি কিছু শুনতে পাচ্ছি না আর, কিছুকে দেখতে পাচ্ছি না,
সব সাদা, মৃত্যুর মত নৈঃশব্দের মত চন্দ্রমল্লিকার মত
একটু একটু করে রক্তহীন হচ্ছে ত্বক,
একটু একটু করে তীব্র তীক্ষ্ণ শীতার্ত দাঁত আমাকে খেতে খেতে খেতে খেতে
আমার পা থেকে, হাত থেকে উরুর দিকে বাহুর দিকে হৃদপিণ্ডের দিকে উঠে আসছে,
উঠে আসছে।
আমি জমে যাচ্ছি
জমে যাচ্ছি আমি
গোটা আমিটি
বরফের
একটি
পিণ্ড
হয়ে
যাচ্ছি …
ও দেশ, ও কলকাতা, একটু আগুন দিবি?
তোমার কী!
বলেছিলে জিনস পরে যেন না ঘুমোই
জিনস পরেই কিন্তু ঘুমোচ্ছি,
ইচ্ছে করেই খুলে রাখছি না।
কেন রাখবো?
আমার যদি ত্বকে অসুখ হয়, সে আমার হবে,
তোমার কী!
তুমি তো আমাকে আর ভালোবাসো না যে আমার কিছু একটা মন্দ হলে তুমি কষ্ট পাবে!
হোক না অসুখ, হোক।
তোমার জন্য
আমি ঘুম থেকে জেগে উঠছি, তোমার জন্য উঠছি,
শুয়ে আছি অনেকক্ষণ বিছানায়, তোমার জন্য,
মনে মনে আমি তুমি হয়ে আমাকে দেখছি,
তুমি আমাকে এরকম শুয়ে থাকতে দেখতে পছন্দ করছো হয়ত,
শুয়ে থেকে তোমাকে ভাবছি, তোমাকে কাছে চাইছি,
হয়ত তুমি পছন্দ করছো আমি যে ভাবছি, আমি যে চাইছি।
উঠে চা করে আনছি,
তোমার দেখতে ভালো লাগবে যে আমি চায়ে চুমুক দিচ্ছি, তাই দিচ্ছি।
স্নান করছি, তোমার জন্য করছি।
তুমি হয়ে আমার নগ্ন শরীরে আমি তাকিয়ে আছি,
যে পোশাকে আমাকে মানায় মনে করো, সে পোশাক পরছি,
গান গাইছি, যে রকম গাইলে তুমি বিহ্বল হও,
হাসছি, যে ভাবে হাসলে তুমি হাসো,
দিনের কাজগুলো প্রতিদিন আধখেঁচড়া থেকে যাচ্ছে, মন নেই কোথাও,
দিনকে ঠেলে পাঠাতে থাকি দ্রুত রাতের দিকে, রাত পার করছি যেন রাত নয়,
ভয়ঙ্কর একটি সাঁকো দৌড়ে পেরোচ্ছি।
আমি দিন পার করছি কোনওরকম কাটিয়ে না কাটিয়ে
সব এড়িয়ে পেরিয়ে সেই সময়ের কাছে পৌঁছতে চাইছি, যে সময়টিতে তুমি আসবে।
আমি বেঁচে আছি তোমার জন্য, তোমার সঙ্গে দেখা হবে বলে একদিন।
দুঃখ
যখন দুঃখ আমাকে অন্ধকার একটি গর্তের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে
তখন আমার শরীর কোনও একটি শরীর যে করেই হোক চায়
দুঃখের দীর্ঘ ছায়া হৃদয় ঢেকে দিতে থাকে আর শরীরখানা পাগল হয়ে ওঠে সুখ পেতে
পাগল হয়ে প্রেম চায় কারও প্রেমের পাগলামো চায়
দুঃখ চায় না
নষ্ট মেয়ে
ওরা কারো কথায় কান দেয় না, যা ইচ্ছে তাই করে,
কারও আদেশ উপদেশের তোয়াককা করে না,
গলা ফাটিয়ে হাসে, চেঁচায়, যাকে তাকে ধমক দেয়
নীতি রীতির বালাই নেই, সবাই একদিকে যায়, ওরা যায় উল্টোদিকে
একদম পাগল!
কাউকে পছন্দ হচ্ছে তো চুমু খাচ্ছে, পছন্দ হচ্ছে না, লাত্থি দিচ্ছে