লিঙ্গপূজা
উত্থিত শিশ্নের মত ইফেল টাওয়ার,
উরুদেশে সকালসন্ধা পূজারির ভিড়, কড়ি ঢালছে, চূড়োয় উঠছে,
প্রসাদ খাচ্ছে…
আকাশ লুকিয়ে রেখেছে তার ভেজা মেঘযোনী,
আর লিঙ্গ কেবল লিঙ্গ দেখিয়েই জগত ভোলাচ্ছে।
কখনও সে কালো, কখনও সোনালি, হলুদ…
তা হোক, পূজারিরা এর যে কোনও রঙেই মুগ্ধ।
আমি লিঙ্গে বিশ্বাসী নই,
ভগবানের লিঙ্গকেই পরোয়া করি না, ইফেল কোন ছার!
শরীর
অনেক তো কথা হল,
চাষের, তাসের, ইতিহাসের, পাশের
বাড়ির ঘাসে হাঁটা দু একটি রাজ হাঁসের!
এবার শরীরের কথা বলি, চল।
ভালবেসেস্পর্শকরি ত্বক, লোমকূপ,
নিবিয়ে সন্ধেবাতি, ধূপ।
শব্দের ঝড়, হৈ রৈ, চিৎকার
ফুরোলে শীৎকার
আর সঙ্গমের জন্য বাকি রাত রাখি তুলে
জীবনের জং ধরা জানলা দরজা খুলে।
শূন্যতা
কি যে হচ্ছে। কিছু কি হচ্ছে? কি হচ্ছে কে জানে।
কিছু কি হবে! কী হবে আর! কীই বা হতে পারে।
হলে কী! কি আর কিছু কি! কী জানি কী।
হচ্ছে না কিছুই।
কিছুই হবে না।
সাত আকাশ
দেখেছিলাম এক আকাশচারির মুখ।
আমাকে সে উড়িয়েছিল এক আকাশ দু’আকাশ করে
সাত আকাশে, দিয়েছিল শীর্ষসুখ!
সুখে আমি ভাসছিলাম, কাঁপছিল শরীর থিরথির।
নক্ষত্রের মত সে চুমু খেয়েছিল প্রতিটি লোমকূপ
নেমেছিল চুপ চুপ…
বিষম জোয়ার-জলে, সাঁতরেছিল সারারাত–
আহা! ছুঁড়ছিলাম সুখে দু’হাত।
আকাশচারি হঠাৎ হারিয়ে গেলে ভিড়ে
পেছনে দেখেনি ফিরে
কী করে পড়ছি আমি নিচে
মাটিতে, ধুলোর রাস্তায়, পিচে।
স্বপ্নের সেই আকাশ
যেখানে আকাশচারির বাস,
আর কেউ যেতে চায় যাক,
পালে যার হাওয়া আছে, নিজেকে হারাক।
ধুলোর ঠিকানা ছেড়ে আমি কোথাও যাব না
সাধ
তোমাকে কখনও বেড়াতে নিইনি
যেখানে চাঁদের নাগাল পেতে পাহাড়ের কাখে চড়ে বসে থাকে একটি দুষ্টু নদী, গায়ে হলুদের দিনে একঝাঁক নক্ষত্রের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুপ চুপ, টুপ করে জলে পড়ে নদীর সারা গায়ে চুমু খায় চাঁদ!
তোমাকে কি নিয়েছি
যেখানে সমুদ্র মন খারাপ করে বসে থাকে, আর তার জলতুতো পাখিগুলো অরণ্যের বিছানায় শুয়ে রাতভর কাঁদে। সমুদ্রের মন ভাল হলে নেমন্তন্ন করে পাখিদের, অঢেল খাবার আর পানীয়ের ছড়াছড়ি–পাখিরা বিষম খুশি, কিছু ফেলে, কিছু খায়। নাচে, গায়!
তোমাকে বড় নিতে ইচ্ছে করে
যেখানে বরফের চাঁইএর হাঁটুতে মাথা রেখে সুবোধ বালকের মত ঘুমিয়ে আছে আগ্নেয়গিরি, আর দিগন্তের মাথায় ঠোকর খেয়ে কেঁদে কেটে চোখ লাল করে অভিমানে দৌড়ে বাড়ি ফেরে হাওয়ার কিশোরী, দেখে বরফের চোখেও জল জমে মায়ায়।
তোমাকে কত কোথাও নিতে ইচ্ছে
যেখানে সাতরঙ জামা পরে প্রজাপতি চুমু খেতে যায় ঘাসফুলের ঠোঁটে, পাড়ার ন্যাংটো হরিণ তার জামা কেড়ে নিতে দৌড়ে আসে, দেখে প্রজাপতি লুকোয় রাঁধাচূড়া মাসির শাড়ির আঁচলে, ঘাসফুল ভেজা ঠোঁটে অপেক্ষা করে আরেকটি চুমুর।
তুমি নেই বলেই কী ইচ্ছেরা জড়ো হচ্ছে এমন …
সেন নদীর পারে
সেনের ঠান্ডা জলে ভাসছে জোনের শরীর পোড়া ছাই
আর তার পাড় ঘেঁসে হাঁটছে পুরুষ-পোশাক পরা জোনের মত দেখতে মেয়েরা।
এরা রোববার সকালে নরদামের ঘন্টা যখন একা একা বাজে
একশ লোক দেখিয়ে প্রেমিকের ঠোঁটে চুমু খায়–
(এরা কি জোনের ছাই জল ঘেঁকে তুলে চুমু খায় কখনও!)
শরীর পোড়া গন্ধ ছড়িয়ে ইতিহাস হাঁসের মত ভেসে যায় জলে
আর সেনের বাতাসে জোনের মত দেখতে মেয়েদের হৃদয় পোড়া গন্ধ
পুরোহিত কিংবা প্রেমিক–সবই তো আসলে পুরুষের জাত।
স্বপ্নের পালক
একটি দোয়েলের পাখায় স্বপ্নের পালক সেঁটে দিয়েছি
আকাশের ঠিকানায় দোয়েল সেটি পৌঁছে দেবে।
আমার স্বপ্নের কথা দোলনচাপা জানে, তাই এত সুগন্ধ ছড়ায় ও।
আমার স্বপ্নের কথা এবার আকাশ জানবে,
জানবে সে,
যাকে ভালবেসে আকাশের একটি ঠিকানা আমিও নেব।
স্বপ্নগুলো আমার এমন কিছু আহামরি কি!
নিতান্তই শাদামাটা। দুঃসহবাস থেকে জন্মের মত ছুটি।
স্বেচ্ছামৃত্যু
জীবনের চেয়ে বেশি এখন মৃত্যুতে বিশ্বাস আমার,
চেনা শহরের চেয়ে দ্বীপান্তরে
প্রেমের চেয়ে বেশি অপ্রেমে।
কেউ আমার, ধরা যাক কোথাও বসে আছি
ঘাসে অথবা ক্যাফেতে অথবা বাসস্টপে
কাছ ঘেঁসলেই মনে হয়
এই বুঝি জীবনের রঙের স্বাদের গন্ধের
কথা শোনাতে এল…
তড়িঘড়ি দৌড়ে যাই নির্জনতার দিকে
জমকালো বিষণ্ণতায়, শূন্যতার ভিড়ে
জন্ম থেকে এখানেই বাস আমার, এখানেই মানায় আমাকে।
হস্তমৈথুন
(পুরুষ ছাড়া নারী, সাইকেল ছাড়া মাছ)
পুরুষ ছাড়া গতি নেই নারীর!
হা হা! যুক্তি ভুতের বাড়ির।
ছুঁড়ে দাও ওসব ছেদো কথা!
জড়িও না আগাছা গুল্মলতা
খামোকা ওই নিখুঁত শরীরে।
কেন যাবে বিষ পিঁপড়ের ভিড়ে!
তোমার হাতে আছে তীর, তোমার হাতে তূণ
কর হস্তমৈথুন।