নগেনবাবুর বউ বললেন, ওমা কী সর্বনাশ!
সুখদা এল।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে বলল, ওমা আমার কপাল! কাল মানুষটা সারাদিন এইখানে বসে, তখন তোমার টনক নড়ল না? বলি খবরটা দিল কে?
মলিনা এত কথার উত্তর দিল না।
মলিনা শুধু উভ্রান্তের মতো বলল, কোন্ ঘরে উঠেছে ও?
ঘরে আবার কি? এইখানেই। পাঁচ ঘরে। কত সাধলাম দুটো খেতে। তা কী আর খায়! এত বড়ো ঘেন্না সয়ে যে হার্টফেল করেনি, খাড়া বসে ছিল, এই ঢের! তারপর কখন যেন উঠে গেল। তা
তুমি আবার কী মনে করে?
মলিনা আরও উদ্ভ্রান্তের মতো বলে, ও কি ওর জিনিসপত্তর রেখে গেছে?
শোনো কথা, জিনিসপত্তর আবার কোথা?
আজ আসেনি ও?
আজ আবার কই এল? আর আসে মানুষ? আর মুখ দেখায়? পরিবার যার পরপুরুষের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, সে আর লোকালয়ে থাকে? মেয়ে জাতের মুখে তুমি কালি দিয়েছ মলিনা। তোমার কলঙ্কে আমাদের মাথা হেঁট!
মলিনা উঠে দাঁড়ায়।
মলিনা রাস্তায় বেরিয়ে অনেকগুলো গলার হাসি শুনতে পায়।
লহরে লহরে হাসি। তার সঙ্গে টুকরো টুকরো কথা।
ঘরের খোঁজ! জিনিসপত্তরের খোঁজ! আবার সংসার করবার সাধ না কি লো? হতে পারে। ছোঁড়া বোধহয় ভেগেছে। শুনল কোথায়? কে বলল?
কানের পর্দাটা পুড়ে যাচ্ছে। এত রোদ কেন?
মলিনা ছুটতে শুরু করল।
মলিনা এই ভর দুপুরের চড়া রোদ থেকে পালাবে।
.
খবরটা আনল সেই হাবা, কালা মদনা।
বলল, ও বাবা গো, সে কী রক্ত! যেন এক কুড়ি পাঁঠা কেটেছে?
তিন কুড়ি লোক ঠিকরে রাস্তায় বেরিয়ে এসে বলল, কোথায় কোথায়?
উই সেইখেনেই। সেই লেবেল ক্রসিংয়ের ওইখানে। মুখটা ঘেঁচে যায়নি, তাই সদ্য চিনতে পারলাম বামুন কাকি। রক্তে আর কাপড়চোপড়ের কিছু পদাথ্যি নেই–
ওরা শেষ অবধি শুনল না।
ছুটতে লাগল।
এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখবার সুযোগই বা কবার আসে জীবনে?