মহাদেশনেত্রীর মুখের হাসি ফিরিয়ে আনার জন্যে শক্তির উৎসবাদী এক গণতান্ত্রিক রাজপুরুষ অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আমরা আবার ক্ষমতায় যাইতাছি, ম্যাডাম; ক্ষমতায় যাওনের আমাদের দেরি নাই, দুই তিন মাসের মধ্যেই আমরা আবার ক্ষমতায় যামু।
মহাদেশনেত্রী জিজ্ঞেস করেন, কীভাবে যাবেন?
উই নিড ইসলাম, মানি, অ্যান্ড মাসেল, ম্যাডাম, বলেন অবজেনারেল (তিন দশকের রাজনীতির বিকাশের ফলে এই মূল্যবান শব্দটি ঢুকেছে রাষ্ট্রভাষায়, সমৃদ্ধ হয়েছে রাষ্ট্রভাষা) কেরামতউদ্দিন, টু উইন দিস ইলেকশন, অ্যান্ড ইলেশনে আমাদের জিততেই হবে। দে আর রাসকেলস, উই ক্যানট অ্যালাও দেম টু রুল দি কান্ট্রি। দে বিলং টু দি স্ট্রিট, দে আর শ্লোগানমংগারস।
আমাদের আবার ক্ষমতায় আসতে হবেই, বলেন অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু। (‘যেতে’র বদলে তিনি আসতে বলেন, তাঁর মনে হয় তারা এখনো ক্ষমতায় আছেন), পিপল আমাগো পক্ষে, আমরা ক্ষমতার বাইরে থাকতে পারি না, আমরা অই হারামজাদাগো হাতে দ্যাশ ছাইড়া দিতে পারি না। আমাদের ঠিক মতন ক্যান্ডিডেট দিতে হইবে, ঠিক মতন কাজ করতে হবে, আর মাননীয় প্রেসিডেন্ট সাহেবকেও দরকার হইলে কাজে লাগাতে হবে।
মহাদেশনেত্রী জিজ্ঞেস করেন, ক্যান্ডিডেট করবেন কাদের?
তিনি একবার একটি সিংহাসন দেখতে পান; তাঁর চোখ একবার ঝিলিক দিয়ে উঠে আবার অন্ধকার যায়।
যারা জিতবো, যাদের ট্যাকা আছে, মাসেল আছে, যারা মুসলমান বলে প্রাউড ফিল করে, তাদের ক্যান্ডিডেট করতে হবে, বলেন রাজপুরুষ মোহাম্মদ সোলায়মান হাওলাদার, এককালের মাওপন্থি ছাত্রনেতা, আর আমাদের বংশের নীতি ত ঠিকই করা আছে। মাসেল আর ট্যাকা দরকার, ড্যামক্র্যাসিতে এই দুইটা ছাড়া হয় না।
মহাদেশনেত্রী বলেন, এইটা ভালো করে দেখবেন।
কেরামতউদ্দিন বলেন, ড্যামক্র্যাসি মিস্ মাসল প্লাস মানি, এটা ভুললে আমাদের চলবে না; ড্যামক্র্যাসিতে শুধু মানি ইজ নট ইনাফ।
আমাগো ক্যাডারগো রেডি রাখতে হইবো, বলেন লিয়াকত আলি মিয়া, সারা দেশে ছড়াই দিতে হইবো।
আমাদের ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে মাননীয় জেনারেলরা থাকবেন, ব্রিডেডিয়ার, কর্নেল, মেজর থাকবেন, তাঁরাই আমাদের বংশের মূলশক্তি, বলেন অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু, আর থাকবেন কয়েকজন মাননীয় বুরোক্র্যাট, ব্যারিস্টার; থাকবেন আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় ভাইরা যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন, আর ক্যাডারগো কয়জনরেও লইতে হইবো। আর মাননীয় মহাদেশনেত্রীর রিলেটিভরা তো আছেনই। খালি আমাদের পার্টি থেকে ক্যান্ডিডেট দিলে হইবে না, অন্য পার্টি থেকেও ভাগাইতে হবে।
দ্যাখতে হবে তাদের টাকা আছে কিনা, মাসেল আছে কিনা, বলেন ছয়ফুর চাকলাদার, দ্যাখতে হবে কয়টা ক্যান্দ্র দখলের শক্তি আছে তাগো। দ্যাখতে হইবে তারা হিন্দুগো বাড়িতে আটকাইয়া রাখতে পারে কিনা।
ক্যাডার আর মানি আমাগো প্রব্লেম না, বলেন রুস্তম আলি পন্টু, এই কয় বচ্ছরে এই দুইটা আমাদের হয়ে গেছে।
ইট উইল বি এ ফ্যানাটিকেলি রিলিজিয়াস ইলেকশন, এ হোলি ওয়ার, এ ক্রুসেড, বলেন রাজপুরুষ ব্যারিস্টার কুদরতে খুদা, সবার উপরে থাকবে আমাদের রাষ্ট্রধর্ম। মাননীয় ম্যাডাম প্রথম আমাদের কয়েকজনকে লয়ে ওমরা করবেন, জনগণের উপর ওমরার ইনফ্লুয়েন্স অত্যান্ত বেশি, আমরা মক্কায়ও আলোচনা করবো।
রাজাকার রাজবংশের সঙ্গে আমাদের একটা আতাত দরকার, খোজাগুলির সঙ্গেও বোঝাঁপড়া দরকার, বলেন মোহাম্মদ সোলায়মান হাওলাদার, অইবার রাজাকার রাজবংশ আমাদের হেল্প করছে।
তাদের রাজাকার বলা ঠিক না, বলেন ছয়ফুর চাকলাদার, তারা আমাদের দোস্ত; তাগো অবদান তোলন ঠিক না। তাছাড়া আমাদের মহান নেতা তাগো ভালোবাসতেন, তাগো অনেক পোস্ট দিয়াছিলেন।
কিন্তু অরা কি আমাগো সঙ্গে আসবো?, বলেন অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু, অরা তো আমাগো বিরুদ্ধে তিন বছর আন্দোলন করছে। অগো এতোগুলি সিট দিলাম, এতোগুলি মাইয়ালোক মেম্বার দিলাম; তারপরও অরা বিট্রে করলো।
মহদেশনেত্রী বলেন, পলিটিক্সে শেষ কথা বলে কিছু নেই।
আমরা সেইবার রাজাকারদের জন্যে পঞ্চাশটা আসন ছেড়ে দিয়েছিলাম, বলেন ব্যারিস্টার কুদরতে খুদা, অদের বলতে হবে এইবার ষাইটটা ছেড়ে দিবো যদি অরা পার্টনার হয়; আর খোজাবংশকে বলতে হবে আমাদের সাপোর্ট করলে অদের নেতাকে। জেল থেকে বের করে আনবো, সব মামলা খারিজ করে দিবো।
মহাদেশনেত্রী বলেন, কিন্তু আমি অকে জেলেই রাখতে চাই, অইটাকে আমি বাইরে দেখতে চাই না; আই হেইট হিম, হি ইজ এ কিলার।
মহাদেশনেত্রীর চোখের সামনে আবার সিংহাসন ঝিলিক দিয়ে ওঠে।
তাইলে একটা উপায় আছে, বলেন রুস্তম আলি পন্টু, অর স্ত্রীর লগে আমরা মিট করতে পারি।
সবাই বলেন, অবশ্যই মিট করতে হবে, শি ইজ ভেরি পাওয়ারফুল ইন দি পার্টি।
রুস্তম আলি পন্টু বলেন, অর স্ত্রী খুবই অ্যামবিশাস, আর অর স্ত্রীও চায় না ও জেল থেকে বের হউক, তার কারণ আপনারা জানেন, অই মিস্ট্রেসগুলিন, আমরা অর স্ত্রীকে বুঝাইতে পারি যে তিনিই হবেন দলের নেত্রী। আমাগো লগে আসলে তাঁকে একদিন আমরা প্রধানমন্ত্রী করবো।
মহাদেশনেত্রী একবার রুস্তম আলি পন্টুর মুখের দিকে স্থিরভাবে তাকান।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো