ব্যারিস্টার কুদরতে খুদা বলেন, ইউ আর এ ভেরি নলেজেবল পলিটিশিয়ান, ইউর সেন্স অব হিস্ট্রি অ্যান্ড ফরেন পলিসি ইজ প্ৰফাউন্ড, ইউ শুড গো টু দি পার্লামেন্ট।
এইরূপে নমিনেশন দিতে দিতে উৎসবাদী বংশের নমিনেশন দেওনের কাজ শ্যাষ হয়, ডিফিকাল্ট কাজ তারা সহজেই শ্যাষ করেন। কোনো ডিফিকাল্টি হয় নাই, পথ দেখানের জইন্যে তাঁদের প্রদর্শক আছেন।
রাজাকার রাজবংশের কোনো ইন্টারভিউ হয় না। ড্যামোক্রেসি হইছে কুফরি, ড্যামোক্রেসি হইল নাছারা ইহুদিদের ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এইটা তারা দ্যাশ থিকা দূর কইর্যা দিবে, একদিন যখন তারা তলোয়ার দিয়া দ্যাশ দখল কইর্যা ফেলবো তখন ড্যামোক্রেসির শুয়োরটারে শ্যাষ করবো; এখন উপায় নাই কুফরি ড্যামোক্রেসির পলিটিক্স তাগো করতে হইতেছে, ইলেকশন করতে হইতেছে, দারাইতে হইতেছে, আল্লার নামে তোট চাইতে হইতেছে, এইটা কুফরি, আল্লার ভোট চাইতে হইবো ক্যান? সব ভোটই ত আল্লার। তবু ইলেকশন করতে হইতেছে, কিন্তু ইন্টারভিউর দরকার নাই, আল্লার লোকজনের নাম আগে থিকাই ঠিক করা আছে, খালি গো নামগুলি জানাই দিলেই চলবে।
রাজাকার রাজবংশের শুরার মজলিস বসে।
এক নম্বর আমির, দুই নম্বর আমির, আর আর পবিত্র পলিটিশিয়ানরা টুপি আসকান আতর ইত্যাদির মইধ্যে সেজেগুঁজে বসেন।
আমির অধ্যাপক আলি গোলাম প্রথমে আল্লার সমস্ত প্রশংসা করেন, তারে ধইন্যবাদ দেন, তার দোয়া চান, আর নাছারাদের ইলেকশনে অংশ লওয়ার জইন্যে মাফ চান। নিশ্চয়ই তিনি মাফ করবেন, তিনি দয়ালু ও ক্ষমাশীল।
আমির বলেন, নাছারাদের ইলেকশন কুফরি, তবু এই ইলেকশনে আমরা অংশ নিতেছি কেননা আমরা আল্লা আর আবু আলার দ্যাশ স্থাপন করতে চাই, এখন দ্যাশে আমাদের পপুলারিটি বৃদ্ধি পাইয়াছে, পারায় পারায় মসজিদ উঠিছে, মানুষ দিনরাত সালাত পড়িছে, এইবার আমাদের অবস্থা অনেক ভাল। ইনশাল্লা আমরা একশো সিট পাইব, আর আগামী ইলেকশনে আমরা দুইশো সিট পাইব, তখন আমরা পাওয়ারে যাইয়া আবু আলার ইসলামি রাষ্ট্র স্থাপন করিব।
উপস্থিত সবাই বলেন, আলহামদুলিল্লা, আল্লার রাষ্ট্র স্থাপনে দেরি হইতেছে বলিয়া আমরা কষ্ট পাইতেছি, আল্লা আমাদের মাফ করিবেন।
আমির বলেন, ইলেকশন দিয়া আল্লার রাষ্ট্র স্থাপন করা ইমানের দুর্বলতা, এই রাষ্ট্র মানুষরে তোশামোদ কইর্যা স্থাপন করতে হয় না, আল্লার রাষ্ট্র আল্লার শক্তিতে জোর কইর্যা স্থাপন করিতে হয়, যাহারা বাধা দেয় তাহাদের মস্তক ছিন্ন করিতে হয়, কিন্তু আমাদের সেই শক্তি নাই, একদিন আল্লা শক্তি দিবেন।
সবাই হু হু করে কেঁদে ওঠেন, চোখ মুছতে মুছতে বলেন, হে আল্লা, আমাদের সেই শক্তি দান করুন, যাহাতে আমরা ইমানের জোরে তলোয়ারের জোরে আপনার রাষ্ট্র স্থাপন করিতে পারি। হে আল্লা, আমাদের তলোয়ার দান করুন, যেমন তলোয়ার আপনে দিয়াছিলেন তারেকরে, খালেদরে, কাশেমরে, বকতিয়ার খিলজিরে; যেই তলোয়ার আপনে দিয়াছেন তালেবানরে।
আমির বলেন, এইবার আমি সেই সব মমিন ন্যাতাদের নাম পড়িতে জনাব মওলানা রহমত আলি ভিস্তিরে আদেশ দিতেছি, যাহারা এইবার আল্লার নামে ইলেকশনে দারাইবেন।
সবাই বলেন, আলহামদুলিল্লা।
মওলানা রহমত আলি ভিস্তি আমির সাহেবের থেকে অনেক বলিষ্ঠ, তিনি এর আগে ভোট পেয়েছেন, আমির আলি গোলাম কখনো ভোট পান নাই। তাই তার গলায় জোর বেশি, ইমান বেশি।
রহমত আলি ভিস্তি বলেন, আমাদের ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হইবেই, কেহই তাহা থামাইয়া রাখতে পারিবে না, ইনশাল্লা এইবার ইলেকশনে আমরা একশো থিকা একশো তিরিশটা সিট পাইব।
সবাই বলেন, আলহামদুলিল্লা।
রহমত আলি ভিত্তি প্রার্থীদের নাম পড়তে শুরু করেন, মজলিশ ভরে মারহাবা মারহাবা আলহামদুলিল্লা আলহামদুলিল্লা ধ্বনি উঠতে থাকে।
ওই ধ্বনিতে চারদিকে মরুভূমি মরীচিকা জ্বলজ্বল করে ওঠে।
খোজাগণতান্ত্রিক রাজবংশের নমিনেশন লইয়া যেই সমস্ত মজার কাণ্ড হয়, তা আর বলনের দরকার নাই।
নমিনেশন হইয়া গেলে আবার মক্কাশরিফ যাওনের পালা আসলো।
আমাগো রাজাবাদশারা আইজকাল রিলিজিয়ন ছাড়া বাঁচতে পারেন না, পাজেরো চালাইয়া গিয়া তারা সালাত কইর্যা আসেন, তগো দমে দমে আল্লাহু। এই পচা মাটি ময়লা খাবড় এমন পাকপবিত্র আর আগে হয় নাই। একদিন এই খাল বিল নদী নালা তাগো সোয়াবে রুব-আল খালি হইয়া উঠবো, সেই দিন দেরি নাই। এমন যদি হইত তারা দিনে পাঁচবার মক্কাশরিফ মদিনাশরিফ জেদ্দাশরিফ রিয়াদশরিফ যাইতে আসতে পারতেন, সেইখানকার বালি কপালে মাথায় শরিলে লাগাইতে পারতেন, পাথরে চুমা খাইতে পারতেন, তাইলে খুব ভালো হইত, আমরা আরো ভোট দিতাম; কিন্তু আইজও সেই সুবিধা হয় নাই, যাইতে আসতে সময় লাগে, জিন নাই বিমানে যাইতে হয়। প্রত্যেক দিন তারা যাইতে পারেন না, পলিটিক্স করতে গেলেই একবার ওইখানে ঘুইর্যা আসেন, ড্রেস বদলিয়ে আসেন, চেহারায় নতুন মেকাপ লাগাইয়া আসেন, দ্যাশটারে তাক লাগাই দ্যান। আমাগো পলিটিক্স আর রিলিজিয়ন একই ব্যাপার, একটার লগে আরেকটার লাগালাগি নাই, দুইটার মইধ্যে গলাগলি ভাব।
ক্যাদামাটির দ্যাশের পলিটিক্স করনের জইন্যে যাইতে হয় বালির দ্যাশে। শ্যামলা দ্যাশে ভোট পাওনের লিগা ঘুইর্যা আসতে হয় মরুভূমি। পলিটিক্স! ড্যামোক্রেসি! একদিন দ্যাশটা রুব-আল খালি হইয়া উঠবো।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো