তারা সবাই মনে মনে মুনাজাত করে ওঠানো দুই হাত ভরে ভোট সংগ্রহ করে চোখ বন্ধ করেন, পবিত্রভাবে দুই হাত নিজেদের মুখে বুলান, মাথায় বুলান,বুকে বুলান। দুই একজনে বুকে ফুঁ দেন।
মহাজননেত্রী বলেন, ক্যান্ডিডেটগো ডাকনের আগে নীতিমালাটা আরেকবার ঠিক কইর্যা লই, তাইলে কাজ সহজে হবে। এইবার ক্ষমতায় আমাদের যাইতে হবেই, ঠিক ক্যান্ডিডেট দিতে হবে।
আবদুর রহমান বলেন, প্রথম নীতি হচ্ছে মহাজননেত্রী তিনটা কি চাইরটা। কসৃটিটিউয়েন্সি থিকা কন্টেস্ট করবেন, অই সিটগুলি আমাগো থাকবো, আমরা প্রধান ন্যাতারা সবাই নমিনেশন পাইবো, আমরা কয়জন দুইটা আসন থিকা ইলেকশন করবো।
নিজামউদ্দিন আহমদ বলেন, দুই চাইরটা সিটে এখন নমিনেশন দেয়া হইবো না, অইগুলি মহাজননেত্রী পরে নিজে বুঝে ঠিক করবেন, শ্যাষ মোমেন্টে অন্য বংশ থিকা কোনো সবচাইতে বেটার ক্যান্ডিডেট যদি আইস্যা পড়ে, তখন অইগুলিতে তাগো দার করান যাইব।
মহাজননেত্রী বলেন, আমিও এই নীতিটা ভাবতেছিলাম, আমার মনে হয় শক্তির উ ৎসআলাগো বংশ থিকা দুই একটা জ্যানারেল, দুই চাইরটা ভাল রাজাকার ভাইগ্যা। আসতে পারে, তখন তাগো নিতে পারবো।
রজ্জব আলি বলেন, আমি একটা জ্যানারেল আর দুই তিনটা ভাল রাজাকারের কথা ভাবতেছিলাম, অগো নিলে ভাল হইত।
মহাজননেত্রী বলেন, তাগো নাম কন, দেখি পছন্দ হয় কি না।
রজ্জব আলি নামগুলি বলেন।
মহাজননেত্রী বলেন, এই নামগুলি আমিও ভাবতেছিলাম, তাগো নিলে শিউর জিতবো, চিন্তা করতে হইব না।
আবদুল হাই বলেন, তয় এইগুলি খুব ডিজঅনেস্ট, পাশ কইর্যা সুবিধা পাইলে উৎসআলাগো লগে যোগ দিতে পারে, এইটা ভাইব্যা দেখেন।
আবদুর রহমান বলেন, ইনিরা ত নমিনেশন পাওয়ার লিগা দরখাস্তই করে নাই, আর ওই জ্যানারেল সাহেব উৎসআলাগো নমিনেশনের লিগা দরখাস্ত করছে, সেইখানে নমিনেশন পাওনের লিগা লাইগ্যা রইছে। আমাগো লগে কুঅপারেশন করে নাই, অনেক ডাকছি এই দিকে আসে নাই।
রজ্জব আলি বলেন, কুদরত আলি চৌধুরী রাজাকার আছিল, খোজাবংশে আছিল, উৎসআলাগো লগেও আছিল; তবে তিনি প্রবীণ অ্যাক্সপেরিয়েন্ড পলিটিশিয়ান, দ্যাশে অত্যান্ত শ্রদ্ধেয় মানুষ, সে এইবার কোনো দল থিকা নমিনেশন চায় নাই, তারে নিলে। আমাগো সুবিধা হইব।
মহাজননেত্রী বলেন, তার সঙ্গে আমার চাচা-ভাস্তির সম্পর্ক, এখনই তারে আমি টেলিফোন কইর্যা আমাগো দল থিকা দারাইতে রিকুয়েস্ট করি। আমার রিকুয়েস্ট চাচা ফেলতে পারবো না।
আবদুল হাই বলেন, তারে যেইখান থিকা দারাইতে দিবেন সেইখানে কফিলউদ্দিন মিয়া আমাগো অত্যান্ত ভাল ক্যান্ডিডেট, সে সব সময় আমাগো দল করে, দলরে সে অইখানে টিকাই রাখছে, কুদরত আলি চৌধুরী সাহেবকে সেইখান থিকা নমিনেশন দিলে কফিলউদ্দিন বিগড়াইয়া যাইতে পারে।
মহাজননেত্রী বলেন, দলের জইন্যে এইটুকু স্যাক্রিফাইস ত করতেই হবে, পাওয়ারে যাওয়ার জইন্য সব রকমের স্যাক্রিফাইসের জইন্যে রেডি থাকতে হবে। কফিলউদ্দিন মিয়ারে আমি বুঝ মানাই দিব, পাওয়ারে আসলে তারে বড় কিছু দিলেই হইবো।
আবদুর রহমান বলেন, টেলিফোন কইর্যা দেখি চৌধুরী সাবরে পাওয়া যায় কি না। পাইলে এখনই কথাটা ফাইনাল হইতে পারে।
সেলুলার টিপে টিপে সেলুলারটা তিনি মহাজননেত্রীকে দেন।
মহাজননেত্রী বলেন, আস্সালামাইকুম চাচা, আমারে চিনতে পারছেন? আপনের শরীরটা ভাল ত?
কুদরত আলি চৌধুরী বলেন, তোমার গলা চিনতে পারুম না অতটা বুড়া আইজও হয় নাই, আই অ্যাম নট সো আৌল্ড অ্যাজ আদার্স থিংক, তোমার পার্টি ত এইবার পাওয়ারে যাইব, তুমি প্রাইম মিনিস্টার হইবা, এইটা আমি তোমারে বইল্যা রাখলাম। আই কংগ্রেচুলেট ইউ।
মহাজননেত্রী বলেন, সেইটা আপনের দোয়া, চাচা। পাওয়ারে আমরা না গেলে দ্যাশটা আর ঠিক থাকবো না, তবে আপনেরে ছারা আমি পাওয়ারে কীভাবে যাই, আপনেরে লইয়াই পাওয়ারে যাইতে চাই, চাচা।
কুদরত আলি চৌধুরী বলেন, আমি ত এইবার পলিটিক্স থিকা দূরে আছি, আই এনজয় এনাফ পাওয়ার ইন মাই লাইফ, এখন মরনের আগে একটু রেস্ট লইতে চাই, পাওয়ার আর ভাল লাগে না।
মহাজননেত্রী বলেন, আপনে রেস্ট নিলে দ্যাশ চলবো কি কইর্যা, চাচা? আপনারে এইবার আমার দল থিকা ইলেকশন করতে হইব, আপনেরে ছারা আমাগো চলবো না। এইবার আমরা আপনেরে লইয়াই পাওয়ারে যাইতে চাই, আপনে না করলে হইব না।
কুদরত আলি চৌধুরী বলেন, আমি ত নমিনেশন পাওনের দরখাস্ত করি নাই, সময় ত শ্যাষ হইয়া গেছে।
মহাজননেত্রী বলেন, চাচা, আপনে রাজি হন, এখনই আমি আপনের কাছে ফর্ম পাঠাই দিতেছি, আপনের আসতে হইব না, খালি সই কইর্যা দিবেন, বাকিটা আমরাই করবো। খালি আপনের সাইনটা চাই, চাচা।
কুদরত আলি চৌধুরী বলেন, ঠিক আছে, তুমি যখন বলতেছ তখন আর না করি কেমনে। ফর্মটা পাঠাই দেও, আমি দারামু।
আস্সালামাইকুম বলে সেলুলার রেখে মহাজননেত্রী বলেন, আমরা একজন শিউর ক্যান্ডিডেট পাইলাম, পাওয়ারে যাইতে হইবই।
কুদরত আলি চৌধুরীর জন্যে একটি ফর্ম পাঠিয়ে দেয়া হয়, একটা সিট শিউর।
ক্যান্ডিডেটদের ইন্টারভিউ শুরু হয় এর পর। অই ইন্টারভিউ বোর্ডে যেই সব কথাবার্তা হয় সেই সব কথাবার্তা টপ সিক্রেট, বাইরে বলন যায় না। আমরা দূর থিকা যা শুনছি, জনগণ আমরা, আমাগো শুনায় ভুল হইতে পারে, বলনেও ভুল হইতে পারে, তার দুই একটা কথা বলন যায়। তবে এইটা খুব গোপন কথা, মনে করতে হইব। আমরা কিছু শুনি নাই আমরা কিছু বলি নাই, সব কিছু ভিতরে চাইপ্যা রাখছি।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো