সে একবার বাড়ি থেকে পালিয়ে বের হয়েছিলো, অল্প পরেই তাকে ধরে আনা হয়। পালিয়ে বেশি দূর কোনো মেয়ের পক্ষে যাওয়ার কোনো উপায় নেই সেখানে। ধরে এনে তাকে এমনভাবে মারা হয় যে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
একবার সে বাড়ির ছাদে উঠে ডাকাডাকি করেছিলো, কেউ তার ডাক শোনে নি। ছাদ থেকে চাবুক মেরে মেরে তাকে নামিয়ে আনা হয়। চাবুকে চাবুকে অজ্ঞান হয়ে যায় সুফিয়া, সাত দিনে জ্ঞান ফেরে নি।
কয়েক মাসের মধ্যেই সুফিয়ার একবার গর্ভপাত ঘটানো হয়। ভালোভাবে হয় না, তার ভেতর থেকে রক্ত তিরতির করে বেরোতেই থাকে। ঠিক হ’তে অনেক সময় লেগে যায়।
সুফিয়া শুকিয়ে যেতে থাকে, ফ্যাকাশে হয়ে যেতে থাকে, পাগল হয়ে যেতে থাকে, জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে থাকে।
কয়েক মাসের মধ্যে তার আরেকবার গর্ভপাত ঘটানো হয়। এইবার রক্ত আর থামতে চায় না, সুফিয়ার সালোয়ার সব সময় ভেজা থাকে।
পাগল হয়ে ওঠে সুফিয়া।
মালিক, আর তার দুই ছেলে নিয়মিত ধর্ষণ করে চলে সুফিয়াকে। সুফিয়া আর চিৎকারও করে না, শুকনো মরা পাগলির মতো পড়ে থাকে; তারা রাতের পর রাত। দিনের পর দিন ছিঁড়েফেড়ে ফেলতে থাকে সুফিয়াকে।
মাসে দশ হাজার রুজি করার জন্যে রিয়াদের উদ্দেশে যাত্রার কয়েক মাসের মধ্যেই সুফিয়া গলায় ফাঁসি দিয়ে মারা যায়।
মহাজননেত্রী যখন তার বিশাল পুণ্যবান দলবল নিয়ে ওমরা করার জন্যে বিমানে উঠছিলেন, তখন সুফিয়ার লাশ এসে বিমানবন্দরে নামে।
আমাগো সুফিয়া আমাগো মইধ্যে ফিইর্যা আসে।
কয়েক দিনের মধ্যেই মহাজননেত্রী পুণ্য অর্জন করে, মুখ আর পোশাক অদ্ভুত বদল করে, মাথায় আবায়া না কী সব বেঁধে, হাতে তসবি নিয়ে ড্যামোক্রেসির ইলেকশনের দ্যাশে ফিরে আসেন। তাঁর ছবি দেইখ্যা আমরা তাঁরে চিনতে পারি না, মনে হয় আমরা কী যেন দেখতেছি, কিন্তু আমরা খুশি হই যে তিনি এইবার ইলেকশনের এ টু জেড দেইখ্যা ছাড়বেন, আল্লা আর মানুষ তার দিকে মুখ তুইল্যা না চাইয়াই পারে না। মনে হয় আমাগো দ্যাশে এই ধর্ম আসলো, এর আগে খাঁটিভাবে আসে নাই, আটশো বছরে যা হয় নাই তিনি কয় দিনেই তা কইর্যা আসলেন।
সুফিয়ার কথা তিনি জানেন না, এইটা ভালো।
মহাজননেত্রী ফিরে আসলেন, আমরা তার নবরূপ দেখে আজ্জব তাজ্জব হচ্ছি, আর অমনি, দু-দিন পরেই, চললেন মহাদেশনেত্রী পঞ্চাশজন পুণ্যবান নিয়ে ওমরা করতে। ক্যাম্পেইন শুরু হইল। তিনি সঙ্গে বেশি লোক লইছেন, তাঁর ধর্মে ভক্তি আরো বেশি, তার পুণ্য আরো বেশি হইব, পলিটিক্সটাও বেশি হইব, ড্যামোক্রেসি আরো খুশি হইব, আমাদের এই মনে হইতে থাকে, আমরাও খুশি, খুশির ওপর খুশি। তিনি তার পোশাক বদল করে নিছেন, সোন্দর পলিটিকোরিলিজিয়াস রিলিজিওপলিটিকেল পোশাক। তার স্টাইল আছে, আমরা গরিবরা সব সময়ই দেখে মুগ্ধ হই, স্টাইল করে তিনি মাথাটারে সাজিয়েছেন, ধর্মও থাকলো স্টাইলও হইল। এইটা আমরা গরিবরা খুব পছন্দ করি।
মহাদেশনেত্রী যেই দিন গিয়া সেইখানে পৌঁছলেন সেই দিন সেইখানে একটা ঘটনা ঘটতেছিলো। ঘটনাটা তিনি জানতে পারেন নাই; তুচ্ছ ঘটনা।
সেই দিন সেইখানে চৌদ্দ বছরের একটি মেয়েকে পাথর ছুঁড়ে মারা হচ্ছিলো।
মেয়েটির নাম সারা। সারার অপরাধ সে জিনা করেছে, হুদুদ করছে, আল্লার বিরুদ্ধে পাপ করেছে; তাই তাকে পাথর ছুঁড়ে মারা হচ্ছে। যেই পুরুষরা এই কাজ করেছে, তারা ধরা পড়ে নাই।
সারা ধরা পড়েছে, প্যাটটা তার, ওই পেটে কে বা কারা কি ঢুকাইছে, তাগো সেইখানে কোন দাগ লাগে নাই, মজা কইর্যা তারা কাইট্যা পড়ছে, সারার মতন চিৎ আর অজ্ঞান হইয়া পইড়া থাকে নাই, মাসে মাসে তাগো সেই জায়গা ফুইল্যা ওঠে নাই। তাই তারা ধরা পড়ে নাই।
তার যখন প্যাট হয় তখনও সে তেরো বছরের আছিল, সাড়ে নয় মাসে তার চৌদ্দ বছর হয়েছে। এই মাসগুলি সে ধার কইরা বাইচ্যা আছিল।
যেই রাতে সেই ঘটনা ঘটে সেইটা ছিলো বৃহস্পতিবারের রাইত। বৃহস্পতিবার ওই দেশে ফুর্তির দিন, উইক এন্ড, দ্যাশে মজা করন যায় না, তাই ওই দিন তারা দলে দলে আমিরাতে যায় মজা করতে, শুক্রবারের ঝামেলায় পড়তে চায় না। মজা করে ফিরে। আসে শনিবার বিকেলে। সারার বাপ মা সেদিন আমিরাত চলে গিয়েছিলো; বাড়িতে সেই রাতে ছিলো মাত্র সারা, অনেক দূরের ঘরে বান্দীরা, আর ছিলো তার সতেরো বছরের ভাই করিম। ওই রাতে তার ভাই করিম পার্টি দেয়, প্রত্যেক বৃহস্পতিতেই সে পার্টি দেয়; ফুর্তির পার্টিতে আসে তার বয়সের ইয়ার দোস্তরা। সন্ধা থেকে নিচের তলায় শুরু হয় তাদের উদ্দাম পার্টি, মদ, মারিইউয়ানা, সাথে উদ্দাম পশ্চিমা সঙ্গীত; বারোটার দিকে তা উদ্দামতম হয়ে ওঠে, পশ্চিমা সঙ্গীতের তাণ্ডবে বাড়ির চারপাশ গমগম করতে থাকে। সারা নিজের ঘরে ঘুমোতে পারে না। সে বুঝতে পারে ভাই ও তার বন্ধুরা মদ খাচ্ছে, গাঁজা টানছে, আর নাচছে।
সঙ্গীতের সুরের তাণ্ডবে টিকতে না পেরে সারা পার্টির ঘরে গিয়ে উপস্থিত হয়, সে তাদের শব্দ কমানোর জন্যে চিৎকার করতে থাকে। নাচের ঘরটি আধো অন্ধকার, রঙিন আলোতে ভরপুর। সারার পরা তখন রাতের স্বচ্ছ পোশাক, ভেতরে না ঢুকে সে। দরোজায় মাথা ঢুকিয়েই ডাকাডাকি করে। কেউ তার ডাক শোনে না, তাই সে ভাইকে খোঁজার জন্যে ভেতরে ঢোকে। ভাইকে সে পায় না, ভাই হয়তো কোনো বাথরুমে বমি করছিলো। ভাইয়ের মাতাল বন্ধুরা তাকে দেখেই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার পোশাক ছিঁড়েফেড়ে তারা তাকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে, একের পর এক সারাকে ধর্ষণ করতে থাকে। তার শরীর নানা জায়গায় ক্ষতবিক্ষত হয়; সারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো