ওই বাড়িতে সে একাই বান্দী নয়, আরো তিনজন আছে। দক্ষিণ ভারতের একটি প্রৌঢ়া রাধুনী আছে, শ্রীলংকার একটি যৌবনবতী বান্দী আছে, ফিলিপাইনের একটি রোগা ফ্যাকাশে মেয়ে আছে। বুড়ী রাধুনীটা সব সময়ই বিরক্ত, সে কারো সাথে কথা বলে না, মাঝেমাঝে একা একা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে আর পাঁচ মাস, ফিলিপাইনের রোগা মেয়েটে ফ্যালফ্যাল করে তাকায়, চোখ দুটি তার উন্মাদের চোখের মতো, সে মাঝেমাঝে এমনভাবে তাকায় যেনো সে খুব দূরে কিছু দেখছে পাচ্ছে। সুখী মনে হয় শ্রীলংকার যৌবনবতীকে, তার বিশেষ কোনো কাজ করতে হয় না, সে বেশি সময় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করতেই ব্যস্ত থাকে। সে ঢলঢল করে, পিঠ বাহু বুক থেকে কাঁপন ছড়ায়।
শ্রীলংকার যৌবনবতী সুফিয়ার কাছে এসে মাঝেমাঝেই বলে, মালিক আসছেন না, আমার ভালো লাগছে না।
সুফিয়া বুঝতে পারে না মালিক না এলে তার ভালো লাগবে না কেনো।
মেয়েটি বলে, মালিক আমাকে বহুত ভালোবাসেন, আমি মালিকের জান।
শুনে কেমন যেন লাগে সুফিয়ার।
মেয়েটি সুফিয়ার দিকে মাঝেমাঝে ঈর্ষার চোখে তাকায়।
মেয়েটি বলে, মক্কা থেকে ফিরে মালিক আমাকে সোনার হার কিনে দেবেন।
মালিক এতো ভালো? ভাবতে গিয়ে ভয় পায় সুফিয়া।
শ্রীলংকার যৌবনবতী সুন্দরী বাঁদিটি এক সময় সুফিয়াকে তার সামনে মডেলের মতো দাঁড়াতে বলে। মডেল? সুফিয়া প্রথম রাজি হয় না, কিন্তু তাকে দাঁড়াতেই হয়। মেয়েটি সুফিয়ার ঠোঁটে একটি আঙুল বুলিয়ে বলে, তোমার ঠোঁট পাতলা, মালিক পাতলা ঠোঁট পছন্দ করে না, তবে তার দুই ছেলে এমন ঠোঁট পছন্দ করে। সুফিয়া ঠোঁট সরিয়ে নিয়ে বসে পড়তে চায়, পারে না; মেয়েটি তার বুকে ও পাছায় হাত দিয়ে দেখে বলে, মালিক তোমার বুক আর পাছা পছন্দ করবে। বড়ো বুক পাছা মালিকের পছন্দ। মেয়েটির চোখে সে ঈর্ষা দেখতে পায়। কিন্তু বড়ো বুক পাছা মালিকের পছন্দ–এর অর্থ কী, এর অর্থ কী, সুফিয়া বুঝতে পারে না; সে দৌড়ে তার ঘরে গিয়ে মেঝের ওপর বসে পড়ে।
তিনচার দিন পর মালিকের পরিবার ফিরে আসে।
মালিকের বয়স চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশের মতো, দেখতে সে কদর্য, দেখেই ঘেন্না লাগে। এখানে আসার পর সুন্দর কিছু দেখতে পায় নি সুফিয়া, যা দেখে তাই কদর্য। মালিকের চার বউ। তাদের বয়স পঁয়ত্রিশ থেকে পঁচিশের মধ্যে। মালিকের অনেকগুলো ছেলেমেয়ে। সুফিয়া বুঝতে পারে তারা হঠাৎ ধনী হয়েছে, কিন্তু নিচু জাতের লোক, এমন লোকেরা আমাদের দেশে বস্তিতে থাকে। সবাই দেখতে কদর্য, চিৎকার ছাড়া কথা বলে না, তাদের খুব অদ্র অসভ্য মনে হয় সুফিয়ার। কোরান পড়া ছাড়া তারা আর লেখাপড়া জানে না। তাদের টাকা আছে, কেমন টাকা আছে সুফিয়া বুঝতে পারে না, সুফিয়া দেখতে পায় তারা কোনো কাজ করে না। কাজ না করে টাকা আসে কোথা থেকে?
মালিক বিকেলেই সুফিয়াকে তার ঘরে ডাকে। সুফিয়া কাঁপতে কাঁপতে মালিকের সামনে উপস্থিত হয়। সুফিয়া দেখে মালিক ও তার দুই বউ বসে আছে। সে সালাম করতে যায়, মালিক তাকে ধরে শুয়োরের মতো দুটি ময়লা হাত দিয়ে তার ঠোঁট, বুক, পাছা টেপে। তার চামড়া ছিঁড়ে যেতে চায়। সুফিয়া নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, পারে না; সে চিৎকার করে কাঁদে, কিন্তু মালিকের বউ দুটিও তাতে বিচলিত হয় না।
মালিক বলে, তোমার দেহ আইচ্ছা কড়া, তুমি আইচ্ছা মাল, বাংলাদ্যাশেও এই রকম মাল আছে?
মালিকের ফাটা বাঁকা ঘিনঘিনে ঠোঁট নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। বউরা সুফিয়ার দিকে তাকায়, সুফিয়া পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে।
মালিক বলে, আইজ রাইতে তুমি আমার লগে শুইবা, আমার সাদ মিটলে সপ্তায় পাঁচ দিন আমার লগে আর দুই দিন আমার দুই পোলার লগে শুইবা। তুমি আইচ্ছা মাল, আমার সাদ মিটতে কয়েক মাস লাগবে।
মাথা ঘুরে সুফিয়া মাটিতে পড়ে যায়।
মালিক তার দুই ছেলেকে ডাকে। দুটি কুৎসিত ছেলে, পনেরো ষোলে বছরের মতো বয়স, মালিকের ডাকে উপস্থিত হয়।
মালিক বলে, মাইয়াটারে তগো লিগাই আনাইছিলাম, কিন্তু দেইখ্যা আমার পছন্দ হইয়া গেছে, মাইয়াটারে লইয়া আমিই শুমো, আমার সাদ মিটলে তরা পাবি, আইজ থিকা শ্রীলংকার মাইয়াটারে লইয়া তরা থাক। ওহাব তিন দিন নিবি, হাশেম তিন দিন নিবি, একদিন আমার লিগা রাকবি।
ওই রাতেই মালিক ধর্ষণ করে সুফিয়াকে। সুফিয়া ছিঁড়েফেড়ে যায়, রক্তে ভেসে যায়, ভেঙেচুরে যায়। ওটা ধর্ষণের প্রথম রাত, তারপর মালিক নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে। সুফিয়াকে, সুফিয়া হতে থাকে ধর্ষিত, ধর্ষিত, ধর্ষিত, ধর্ষিত।
ওই অন্ধকারে ধর্ষিত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না সুফিয়ার। সুফিয়া পালানোর চেষ্টা করে, দেখে পালানোর কোনো উপায় নেই। কেউ তাকে সাহায্য করার জন্যে নেই, সবাই তাকে পাহারা দিচ্ছে আটকে রাখার জন্যে। শ্রীলংকার যৌবনবতী তার বিরুদ্ধে চলে গেছে, মেয়েটির মনে হচ্ছে তার কাছে থেকে মালিককে কেড়ে নিয়েছে সুফিয়া। মালিক তাকে সোনার হার দেবে বলেছিলো, ওই হার সে পায় নি। মেয়েটির মনে হয় মালিক সুফিয়াকে সেই হার দিয়েছে। বাড়ির পাহারাদারগুলো পাষণ্ড, তাদের পেরিয়ে বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। বাড়িটা একটা নোংরা দুর্গ। মালিকের চার বিবি সব সময় ব্যস্ত ঝগড়াঝাটিতে, তাদেরই কোনো সুখ নেই, সুফিয়ার কথা তারা ভাবতেও পারে না। সুফিয়া আটকে পড়ে মরুভূমির নোংরা অন্ধকার দুর্গে, যেখানে ধর্ষণই সত্য, আর কিছু সত্য নয়।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো