নমিনেশন পেপার জমা দেয়ার ধুম পড়ে গেছে দেশে।
দলে দলে সারা দ্যাশ থিকা পলিটিশিয়ানরা আইসা নমিনেশন পেপার জমা দিতেছে; বেশি নমিনেশন পেপার জমা পড়তেছে দুই বংশের বাক্সে, তারা একেকদিন একটা আরেকটাকে ছাড়াই যাইতেছে। হাজার হাজার পলিটিশিয়ান, হাজার হাজার নমিনেশন পেপার, হাজার হাজার ফুলের তোড়া, লাখ লাখ সাপোর্টার। দ্যাশে ড্যামোক্রেসির পৌষমাসের মেলা বসে গেছে। আমাদের দেশ হইল পৃথিবীর সবচেয় ঘন গণতন্ত্র ডেন্সেস্ট ড্যামোক্রেসি।
জনগণমন গণতান্ত্রিক রাজবংশের মহাজননেত্রী আর রাজপুরুষেরা বেশ খুশি; কিন্তু বেশি খুশি হতে পারছেন না।
শক্তির উৎসবাদী রাজবংশের মহাদেশনেত্রী ও রাজপুরুষেরা বেশ বিচলিত; কিন্তু বিচলিত খুশির মইধ্যে আছেন।
রাজাকার রাজবংশ বিসমিল্লা বলে আল্লার নামে সোজা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
খোজাগণতান্ত্রিক রাজবংশ চুরমার, মাজা ভাঙা কাত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আর আর রাজবংশ পলিটিশিয়ান খুঁজে পাচ্ছে না।
মহাজননেত্রী রাজপুরুষদের নিয়ে বসেছেন; তাঁরা নমিনেশন পেপার জমা পড়নের তাৎপর্য আর সম্ভাব্য রেজাল্ট সম্পর্কে আলোচনা করছেন।
মহাজননেত্রী বলেন, আমাগো বংশের বাক্সেই এইবার সবচাইতে বেশি পেপার পড়ছে, কেভিডেটরাও ভাল, এইবার জনগণ যদি মুখ তুইল্যা চায়।
মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, অন্য বংশ থিকা ভাইগ্যাও আমাগো দলেই ক্যান্ডিডেট বেশি আসছে, এইটাও সুলক্ষণ, পলিটিক্সের টেন্ডেন্সিটা বুঝা যাইতেছে, এখন আল্লা আর জনগণ মুখ তুইল্যা চাইলেয় হয়।
কলিমউদ্দিন মৃধা বলেন, তয় তিন চাইরটা জ্যানারেল আর সেক্রেটারি বিট্রে করছে, এতবার প্রমিজ করল আমাগো কাছে যে আমাগো দলে জয়েন করবো, ক্যান্ডিডেট হইব, কিন্তু বিট্রে করলো।
মহাজননেত্রী বলেন, অইগুলি সবই কি উৎসআলাগো নমিনেশন পাইব? অগো বংশ ত আগে থিকাই জ্যানারেল আর সেক্রেটারিতে ভইরা আছে। অইগুলির উপর চোখ রাখতে হইব, দরকারে আসবে।
মোহাম্মদ রজ্জব আলি বলেন, অইটা হইল মেলিটারি আর আমলাগো দল, অই রকম ক্যান্ডিডেট তারা ছারব না, যত পাইব ততই লইব। সবগুলিরেই ননিনেশন দিব, জনগণরে অরা এইসব দেখাইয়া বুঝাইতে চায় যে উত্তর পারা অগো লগে আছে, আসল জায়গায় অগো পাওয়ার আছে।
মহাজননেত্রী একটু বিচলিত হন; একটু পর তিনি বলেন, চোখ রাখতে হবে জ্যানারেলগো মইধ্যে কে কে বাদ পড়লো, পছন্দ হইলে আমরা তাগো ধইর্যা আনুম। উত্তর পারা আমাগোও এইটা এইবার আমরাও দেখায়ে দিব। দুই একজনের কথা আমি ভাইব্যা রাখছি।
মোহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, কারে কারে ধইরা আনতে হবে বইলেন, আমরা ধইর্যা আনুম। অগো নমিনেশনের দিন অগো অফিসের কাছে লোক দারা করে রাখুম, তারা ধইরা নিয়া আসবো।
নিজামউদ্দিন আহমদ বলেন, জংধরা কাচিহাতুড়িআলারা যে ধরাধরি করতেছে, এইবার তাগো কি করব?
মহাজননেত্রী বলেন, অই বেইমানগুলিরে এইবার দরজায়ও আসতে দিব না। গেলবার অইগুলিরে দিয়া ঠকছি, মোনাফেকের মতন গোপনে গোপনে আমাগো বিরুদ্ধে কেন্ডিডেট দিছে, উৎসআলাগো সঙ্গে প্যাক্ট করছে, আর কয়টা মোনাফেক বেইমান পাশ কইর্যা অগো লগে গিয়া যোগ দিছে। অইগুলির মুখে ঝারু মারি।
মোহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, সারা দুইন্যা ভইর্যা অইগুলি বেইমানি করতেছে আর ডোবতেছে, দ্যাশের মানুষ অগো চায় না।
মোহাম্মদ রজ্জব আলি বলেন, নমিনেশন পেপার ত জমা পরলো, এইবার ওমরাটা কইর্যা আসন দরকার। আল্লার ঘরে গিয়া নামাজ পইরা কান্দনকাটন দরকার, রহমানুর রহিম এইবার যদি মুখ তুইল্যা চায়।
মহাজননেত্রী বলেন, পরশু দিনই ওমরা করতে চলেন, দিনটা ভাল আছে, ওমরাটা সাইর্যা এসে নমিনেশন দিব। আল্লারে ডাইক্যা আসলে তিনি মুখ তুইল্যা চাইবেন, জনগণও এইটা ভাল চোখ দেখব, তারাও মুখ তুইল্যা চাইব।
তাঁরা ঠিক করে ফেলেন পরশু দিনই ওমরা করতে যাবেন, চল্লিশজনের একটা বড়ো দল যাবেন, আল্লার আর জনগণের চোখে এইটা না পইড়্যা পারে না। এসে তাঁরা ক্যান্ডিডেটদের ইন্টারভিউ নেবেন, বাছাই করে নেবেন ঘেঁকে হেঁকে, দেখে দেখে, অনেককে এরই মাঝে দেখে রেখেছেন, বেস্ট ক্যান্ডিডেট নেবেন, যাদের নাম আছে ডাক আছে পপুলারিটি আছে ট্যাকা (এইটা এক নম্বর) আছে (আর হাতে ভাল ক্যাডার আছে, এইটা দরকার, নিউট্রাল পিসফুল ইলেকশনেও এইটা ছাড়া চলে না–এইটা চুপে চুপে আলাপ করা হয়)।
শক্তির উৎসবাদী গণতান্ত্রিক রাজবংশের বাক্সেও নমিনেশন পাওয়ার দরখাস্ত বোঝাই হয়ে উঠেছে, তবু তাদের চিন্তা যাচ্ছে না, শুধু চিন্তা করতে হচ্ছে; বৈঠকে বসে তাঁরা নানারূপ পলিটিকেল চিন্তাভাবনা করছেন।
মহাদেশনেত্রী বলেন, আপনাদের কি মনে হয়? ঠিক ক্যান্ডিডেটরা নমিনেশনের জইন্য দরখাস্ত করছে ত?
রুস্তম আলি পন্টু বলেন, ভাল দরখাস্ত পরছে, সবই পাওয়ারফুল পপুলার মানিড। ক্যান্ডিডেট, কারে রাইখ্যা কারে নমিনেশন দিব, তা ঠিক করাই ডিফিকাল্ট হইব। ভাল ক্যান্ডিডেট দিতে হইব।
অবজেনারেল কেরামতউদ্দিন বলেন, উই মাস্ট নমিনেট দি বেস্ট ক্যান্ডিডেটস্ হু হ্যাভ মানি, পাওয়ার, অ্যান্ড পপুলারিটি। ইলেকশনে উইন করতেই হবে।
রুস্তম আলি পন্টু বলেন, মহাদেশনেত্রী চাইরটা আসনেই দারাইবেন, অই সিটগুলি আমাগো সিউর সিট, পরেও আমাগো হইব, মহাদেশনেত্রীর ইমেজটাও ঠিক থাকবো; আর বংশের লিডাররা যারা চাইবেন তারা দুইটা কইর্যা আসনে দারাইবেন।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো