আমরা বোঝতে পারি পলিটিক্স হইছে জীবন্ত ব্যাপার, তার বদল ঘটে; মানুষ আগে যা বোঝতে পারে নাই আজ তা বোঝাতে পারব না, সেইটা কোনো কথা না। পলিটিক্সে বারবার বোঝতে হয়, কবরে যাওনের আগেও বোঝতে হয়।
জ্যানারেল টিপ সুলতান খুব আপন লোক আছিলেন জনগণমন গণতান্ত্রিক রাজবংশের। ওই বংশ থিকা অনেক কিছু পাইছেন; এইবার তিনি রাজনীতি করবেন বইল্যা শোনতে পেলাম। আমরা ধইরাই নিছিলাম তিনি জনগণমনে যোগ দিবেন, মুক্তিযুদ্ধকে আগাই দিবেন। আমরা শোনতে পাই মুক্তিযুদ্ধ আইজও শ্যাষ হয় নাই, যুদ্ধ চলতেছে।
আমরা যা দ্যাখলাম তাতে খুশি হওন ছাড়া উপায় নাই।
তিনি ঢাকা ক্লাবের ফুলের দোকান থিকা দুই শো কেজি একখানা তোড়া নিয়া গিয়া শক্তির উৎসবাদী বংশের মহাদেশনেত্রীর নিকট হাজির হলেন। মহাদেশনেত্রী অতো ভারি তোড়া আগলাইতে পারছিলেন না বলে জনতিনেক রাজপুরুষ ফুলের তোড়া কান্ধে করে দাঁড়াইলেন। ফুলের জীবন ধন্য হইল।
তিনি মহাদেশনেত্রীর পায়ে হাত দিয়া সালাম করিলেন। এইটা পলিটিক্স।
মহাদেশনেত্রী বললেন, জ্যানারেল টিপ সুলতান দ্যাশের গৌরব, তিনি আমদের বংশেরও গৌরব, আমাদের ভিক্টরি কেউ আটকাইতে পারবে না। আমরা পাওয়ারে যাবই। পিপল আমাগো ভোট দেয়ার জইন্য ওয়েট করছে।
টিপ সুলতান বললেন, মহাদেশনেত্রীর পায়ে হাত দিয়া আমি আমার কান্ট্রির পায়ে হাত দিলাম, পিপলের পায়ে হাত দিলাম, আই অলোয়েজ সার্ভড় মাই কান্ট্রি, ফ্রম নাউ অন আই শ্যাল সার্ভ মাই মহাদেশনেত্রী অ্যান্ড মাই কান্ট্রি টুগেদার উই আর সার্টেন টু গো টু পাওয়ার, বাংলাদেশে উৎসবাদী বংশ ছাড়া পাওয়ারে যাওয়ার কারো রাইট নাই। মহাদেশনেত্রী জিন্দাবাদ।
আমরাও দূর থিকা জিন্দাবাদ দিতে থাকছি।
এইভাবে বর্ন পলিটিশিয়ানরা পিতার পেট থিকা খালাস হওয়া পলিটিশিয়ানরা পাঙ্গাশরা দ্যাশরে পলিটিক্সে মাতিয়ে তুলছেন, আমাদের ভাবনাচিন্তা একেবারে লোপ পেতে বসছে, আমরা যা ভাবি–মূর্খ আমরা, ভাবতে পারি না, গরিবের আবার ভাবনা কী–পলিটিশিয়ানরা তার উল্টো ভাবেন উল্টা করেন। এইখানে রাজা আর প্রজার চিন্তার ফারাক, রাজার চিন্তা আর কর্ম হচ্ছে রাজকীয়, প্রজার চিন্তা আর কাম হইছে প্রজাকীয়, দুইটা বিপরীত হইবই।
বাজারে খুব গুজব উঠছিলো যে অপসর পাওয়া বিখ্যাত সেক্রেটারি আলাউদ্দিন মিয়া শক্তির উৎসবাদী বংশে গিয়া যোগ দিবেন; ওই বংশ তার জইন্যে অনেক করছে, দুই তিনবার অ্যাক্সটেনশন দিয়া তারে বুড়া কইর্যা ফেলছে, কিন্তু তিনি বুড়া হন নাই, একেবারে তরতাজা আছেন, তিনিও তাগো জইন্যে অনেক করছেন, কিন্তু ঘুম থিকা উঠে কাগজে দ্যাখলাম তিনি জনগণমন গণতান্ত্রিক বংশে যোগ দিয়া বড় বক্তৃতা দিয়ে বসছেন।
তিনি বলছেন, উৎসআলার দ্যাশরে করাপশনে ভরে দিছে। অ্যাট দ্যাট টাইম আমি আটটা মিনিস্ট্রির সেক্রেটারি ছিলাম, দেখছি ওই দলের মিনিস্টার এমপিরা পুকুর থিকা কলসি ভরে পানি তোলার মতো ব্যাংক থিকা টাকা তুলে নিছে। দে আর এ প্যাক অফ করাপ্ট পিপল, দে আর রবার্স, যারা দেশরে ডুবিয়ে দিছে। দেশরে উদ্ধার করার জইন্যে মহাজননেত্রীর প্রিন্সিপালই আসল, তাই আমি এই বংশে জয়েন করে ধন্য হলাম। আমি, ফ্রিডম ফাঁইটার ছিলাম, মরা পর্যন্ত ফ্রিডম ফাঁইটার থাকব।
শুনে আমরা হাতে হাতে তালে তালে তালি দিতেছি।
মহাজননেত্রী বললেন, যেই বংশে আলাউদ্দিন মিয়া সাহেবের মত দশটা মিনিস্ট্রির সেক্রেটারি যোগ দিলেন, সেই বংশ জনগণের নিজের বংশ, এই বংশ পিপলের কথা চিন্তা করা ছারা আর কিছু চিন্তা করে না, পিপল এইবার আমাদের বংশরে পাওয়ারে। পাঠাইবই, ইনশাল্লা। তারা পাওয়ার কাইরা নিছিল, জনগণ তা এইবার নিয়া আসবে, আমরা দ্যাশে পিপলেল ড্যামোক্রেসি প্রতিষ্ঠা করব।
পাল্টা দিকে উল্টা কারবার করে বসছেন ছয় মিনিস্ট্রির অপসরআলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আজম সৈয়দ। তারে আমরা ভাবছিলাম জনগণমন বংশের লোক, সেই শুরুর সময় এক লাফে তিনি টংয়ের পর টংয়ে উঠছিলেন, গতবারও তারে দেখছি জনগণের রাজবংশে ফ্রিডম ফাইটিং আর আল্লতাল্লা নিয়ে লাফের পর লাফ দিতে, এইবার দেখি তিনি জয়েন করছেন শক্তির উৎসবাদী রাজবংশে, বড় বড় কথা বলছেন মহাদেশনেত্রী আর তার মহান স্বামী সম্পর্কে। তাঁর ফুলের তোড়াটার ওজন পাঁচ শো কেজি, পিপলেরও সাধ্য নাই ওই তোড়া তুইল্যা বুকের কাছে ধরে।
পলিটিক্স ব্যাপারটাই পলিটিকেল, জনগণের জনকেরও সাধ্য নাই বোঝে।
মহাদেশনেত্রী ওই তোড়ার ওপর দাঁড়িয়ে সকলের উদ্দেশে বলছেন, মোহাম্মদ আজম সৈয়দ প্রমাণ করেছেন আমাদের বংশই আসল বংশ, পিপল আমাদের বংশরেই পাওয়ারে দেখতে চায়, তিনি অদের বংশ ত্যাগ করে আসছেন, কারণ পিপল ওই বংশরে চায় না, ওই বংশরা দ্যাশটারে সেল করে দিবে, দ্যাশের ফ্রিডম থাকবে না, দ্যাশটারে ভুটান কইর্যা তুলবে।
মোহাম্মদ আজম সৈয়দ বলেন, এই দ্যাশের অল টাইমের পলিটিশিয়ানদের মধ্যে মহাদেশনেত্রী একজন গ্রেট পলিটিশিয়ান, শি ইজ দি ওয়াইফ অফ দি গ্রেটেস্ট পলিটিশিয়ান এভার বর্ন ইন আওয়ার কান্ট্রি, তার পেছনে দারাতে পেরে আমি ধন্য হলাম, জনগনআলাজ আর বিট্রেয়ার্স, দে আর কাফে, পিপল তাদের ভোট দিবে না, তারা পাওয়ারে যেতে পারবে না। দে উইল ডেস্ট্রয় দি কান্ট্রি ইফ দে ক্যান গো টু পাওয়ার।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো