এই পাঙ্গাশ মাছগুলির খেলা খুবই মজার।
আমাদের রাজবংশগুলি পাঙ্গাশমাছ খুব পছন্দ করে, তারা পাঙ্গাশমাছ কিননের জইন্যে পাঙ্গাশমাছ ধরনের জইন্যে পাগল হয়ে গেছে। যেমন করেই হোক ড্যামোক্রেসির ইলেকশনের মেজবানিতে চল্লিশায় পাঙ্গাশমাছ তাগো চাই-ই চাই। পাঙ্গাশমাছ না হলে ইলেকশনের চল্লিশা জমবে না, সবাই মনে করবে দাওয়াত দিয়ে ডালভাত খাওয়ানো হচ্ছে। তাই আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজবংশগুলি যেখানে সেখানে জাল ফেলছে পাঙ্গাশমাছ ধরার জন্যে, আর যদি ধরাই না যায় তাহলে কিনতে যাচ্ছে বাজার থেকে আস্ত পাঙ্গাশ। আমাগো দুইখানা বড়ো রাজবংশ বেরিয়ে পড়েছে পাঙ্গাশমাছ ধরতে পাঙ্গাশমাছ কিনতে; আর পাঙ্গাশমাছেরাও খুব চালাক, জালের নিচে পড়তে পড়তে পড়ছে না, কোন জালের নিচে পড়বে তা মেশিন দিয়ে হিশেব করছে, তারা নিজেদের বেচতে বেচতে বেচছে না, কোন বংশের কাছে নিজেকে বেচবে তা পকেট ক্যালকুলেটর দিয়ে দিনরাত হিশেব করছে। আমরা পাঙ্গাশগুলির খুব নামডাক শুনতে পাচ্ছি, খবরের কাগজগুলি বড়ো বড়ো করে খবর ছেপে ছবি ছেপে আমাদের জানাই দিচ্ছে কোন বংশ কয়টা পাঙ্গাশ ধরলো, কয়টা পাঙ্গাশ কোন দলের জালের ভিতর ঢুকলো।
আমাদের জনগণমন গণতান্ত্রিক রাজবংশ আর শক্তির উৎসবাদী গণতান্ত্রিক রাজবংশ মাঝেমাঝে বৈঠকে বসছে পাঙ্গাশ ধরার কৌশল বের করার জন্যে। জনগণমন গণতান্ত্রিকরা বৈঠকে এমন কৌশল নিচ্ছে :
মহাজননেত্রী বলছেন, এইবার আমাগো দলে দশ পনরটা সেক্রেটারি আর জ্যানারেল থাকতেই হইব, নাইলে দলের মুখ থাকব না।
মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলছেন, এইটা ত আমরা দলের বেসিক প্রিন্সিপাল হিশাবেই গ্রহণ করছি, জ্যানারেল আর সেক্রেটারিরা হইব দলের মাথার মণি।
কলিমউদ্দিন মৃধা বলছেন, তা আমাগো নিতেই হইব, নাইলে দল মুখ দেখাইতে পারব না, তবে একেকটার বাগরাবাই কম না।
মহাজননেত্রী জানতে চান, বাগরাবাই কেমুন?
নিজামউদ্দিন আহমদ বলেন, তারা প্রত্যেকেই মিনিস্টার হইতে চায়, আলাপের আগেই বইল্যা ফেলে মিনিস্টার করলে দল থিকা দারাইব।
মহাজননেত্রী বলেন, হ, আমরা তাগো মিনিস্টার ত করুমই; এইবার আমরা পাওয়ারে যেতে চাই, পাওয়ারে যাওয়ার জইন্যে যদি তাগো মিনিস্টার করতেই হয় তাইলে তাগো মিনিস্টার করুম।
মোহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, এইজইন্যে আমরা পার্সোন্যাল ইন্টারেস্টও ত্যাগ করতে প্রস্তুত, নিজেরা মিনিস্টার না হয়ে তাগো মিনিস্টার করুম, কিন্তু পাওয়ারে যেতেই হবে, এই ছাড়া উপায় নাই।
শক্তির উৎসবাদী গণতান্ত্রিক রাজবংশ পাঙ্গাশ ধরার জন্যে এমন কৌশল নেয় : মহাদেশনেত্রী বলেন, এইবার দলে কয়জন নতুন জ্যানারেল আসবেন?
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আশা করতেছি পনর কুড়িজন জ্যানারেল আমাগো সঙ্গে আসবেন।
মহাদেশনেত্রী বলেন, এত কম কেন? দলে আরো জ্যানারেল লাগবে।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আরও ধরনের চ্যাষ্টা করছি, ম্যাডাম, দ্যাশে জ্যানারেলের অভাব ঘইট্যা গেছে, এত বড় একটা দ্যাশে হাতে গণা কয়টামাত্র জ্যানারেল, দ্যাশে হাজারখানি রিটায়ার্ড জ্যানারেল থাকা দরকার আছিল।
মহাদেশনেত্রী জানতে চান, নাই কেন?
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আমাগো আমফোর্সে প্রমোশন এত কম যে জ্যানারেল বেশি নাই। তাগো মতন যোগ্য আর স্মার্ট লোক দ্যাশে নাই, তাগো প্রত্যেকের জ্যানারেল হইলে মানায়।
মহাদেশনেত্রী বলেন, এইবার পাওয়ারে গেলে প্রমোশন দিয়া এক হাজার জ্যানারেল বানাইবেন। জ্যানারেল ছাড়া দ্যাশ বিশ্বে মর্যাদা পায় না।
সোলায়মান হাওলাদার বলেন, আমরা সেই স্টেপ নিছিলাম, ম্যাডাম, আর কিছু দিন পাওয়ারে থাকলেই তা হইত, দ্যাশে জ্যানারেলের অভাব হত না।
মহাদেশনেত্রী জানতে চান, কয়জন সেক্রেটারি সাহেব এইবার আমাদের দলে আসতেছেন? সেক্রেটারি সাহেবদের খুব দরকার।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, পনর বিশজন হইব, ম্যাডাম। রিটায়ার্ড সেক্রেটারি ছাড়া দ্যাশ চালান খুব ডিফিকাল্ট, তারা অন্ধিসন্ধি সব জানে।
মহাদেশনেত্রী বলেন, আরো লাগবে, এই কয়জনে হবে না, পঁচিশ তিরিশজন সেক্রেটারি ছাড়া হবে না।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আমরা সেই চ্যাষ্টা করতেছি, ম্যাডাম। আমলাগুলি সব সময়ই আনফেইথফুল, যেই দিকে সুবিধা ওইগুলি সেই দিকেই দৌরায়, আগে আমাগো দিকে দৌরাইত এখন অন্য দিকে দৌরাইতেছে। এইবার সেক্রেটারিগুলি বড় বদমাইশ, তারা ইন্ডিয়াআলাগো দিকে লাইন দিতেছে।
মহাদেশনেত্রী বলেন, অই লাইন থিকা ধরে নিয়া আসেন, তাদের বলেন তাদের মিনিস্টার করা হবে। জ্যানারেল আর সেক্রেটারি ছাড়া দল দেখতে ভাল লাগে না, দলের মর্যাদা থাকে না।
ওই পাঙ্গাশগুলি তীব্র উত্তেজনায় সময় কাটাচ্ছে; চারদিক থেকে অফারের পর অফার পাচ্ছে, মিনিস্টার করা হবে মিনিস্টার, মাথা ঠিক রাখতে পারছে না। মিনিস্টার তো করা হবেই, সেটা কোনো ব্যাপার না; ব্যাপার হলো যেই দলে জয়েন করবো যেই জালে ধরা দিবো, তারা পাওয়ার পাবে তোর পাওয়ার না পেলে মিনিস্টার করবো কোন হান থিকা? তাই ধরা দেয়ার আগে চারদিকে তাকাই দেখন দরকার, গরিবগরবা পিপলের মুখের দিকে চেয়ে দেখন দরকার, পারলে তাদের ভিতর থিকা খবরটা বাইর করন দরকার, তারা কোন বংশরে পাওয়ারে পাঠাইব? পিপল কি জনগণআলাদের চায়? এইবার কি জনগণআলাদের অবস্থা বেশ ভালো না? মনে হয় পিপল এইবার তাদের পাওয়ারে পাঠাইয়া পরীক্ষা করে দেখতে চায়। কিন্তু…কিন্তু? যদি না পাঠায়? পিপল কি শক্তির উৎসআলাদের আবার চায়? এই কিছু দিন আগে না তাদের ঠেলে ফেলে দিলো?.চাইর মাসেই কি সেই কথা ভুইল্যা আবার পাওয়ারে পাঠাবে? পাঠাতেও পারে। মূর্খ পিপলের মতিগতি সাইকলজিস্টরাও বুঝতে পারে না। পাঠাতেও পারে? তার মানে কোনো শিউরিটি নাই, সবই আনসারটেন, কেউ জানে না কোনটায় জয়েন করবো, কোনটার জালে ধরা দিবো, কোনটার টোপ গিলবো? অত্যন্ত উত্তেজনায় আছেন পাঙ্গাশগণ। কে বলে দিতে পারে কোন বংশ জিতবে, পাওয়ারে যাবে?, পলিটিকেল প্যান্ডিটগুলো মাথা আরো খারাপ করে দিচ্ছে; একেক দিন একেক রকম বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী করে মাথা বিগড়ে দিচ্ছে। রাস্তার গণকের কাছে যাবো? হাত বাড়িয়ে বলবো, কোন দল জিতবে বলে দিন, আমি মিনিস্টার হইতে চাই? অ্যায়ারকন্ডিশন্ড অ্যাস্ট্রোলোজারের কাছে যাবো? পিরের বাড়ি যাবো? স্ত্রী, প্রাক্তন স্ত্রী, প্রেমিকা, প্রাক্তন প্রেমিকা, উপপত্নী, প্রাক্তন উপপত্নীর বাড়ি যাবো? কাজের মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করবো? বলে দাও কোন বংশ জিতবে? কোন বংশ এইবার পাওয়ারে যাবে? মাথা গরম হয়ে উঠছে পাঙ্গাশগণের।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো