ভিস্তি সাহেব তাকে ছাড়েন না; কিন্তু মেয়েটির শরীরে জোর আছে, সে ভিস্তি সাহেবের অণ্ডকোষে চাপ দেয়। ভিস্তি সাহেব ব্যথায় চিৎকার করে ওঠেন।
সালেহা উঠে দাঁড়ায়, ঘোমটা দিতে দিতে বলে, এমুন করলে হুজুর, আমি। খালাম্মারে কইয়া দিমু, আল্লায় আপনেরে দোজগে দিব। আপনে মাইষের বাচ্চা না, আপনে একটা জানোয়ারের পয়দা।
ভিস্তি সাহেবের বলতে ইচ্ছে হয়, তুই আমারে ঠিক চিনছস, সালেহা, আমি কতো বড়ো জানোয়ার তা তরে না, সারা দেশরে দেখাইয়া দিমু।
তবে তিনি তা বলেন না, তিনি সালেহার পা ধরে বলেন, তুই কইছ না, সালেহা, আমারে তুই মাপ কইর্যা দে। তরে আমি মহব্বত করি, তরে আমি বিয়া করুম। আইজ রাইতে তর লগে আমি থাকুম।
সালেহা বলে, বিয়ার আমার কাম নাই, এমুন জাউরার লগে আমি বিয়া বহুম না, গ্যারামে আমারে কতজনে বিয়া করতে চায়।
মেয়েটির পেটে একটা ছুরি ঢুকিয়ে দিতে ইচ্ছে হয় ভিস্তি সাহেবের; কিন্তু মেয়েটির শরীরে এতো গোস্ত, আর ওই গোস্তে এতো মশলা, তা ভালো করে খাওয়ার আগে ছুরি ঢাকোনো ঠিক হবে না বলেই তার মনে হয়। নিজের বিবির শরীরে তিনি গোস্ত খুঁজে পান না, শিনার দিকেও কোনো চর্বি আর গোস্ত পান না, তাই তাকে ভেঙেচুরে তিনি কিছু একটা করেন; কিন্তু সালেহাকে তার মনে হয় কোরবানির চর্বিঅলা গাভীর মতো, যার দেহভরা চর্বি আর ওলানভরা জমাট দুধ। সালেহাকে তিনি এরপর আরো কয়েকবার চিৎ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু পেরে ওঠেন না; মেয়েটি যেমন চালাক, তেমনি শক্তিমান। তিনি শুভদিনের অপেক্ষায় থাকেন, নিশ্চয়ই দিন আসবে, যেদিন তিনি সালেহার গোস্ত খাবেন।
রাজাকারদের সিপাহসালার হয়ে যে-রাতে তিনি বাসায় ফেরেন, ফিরতে ফিরতে ঠিক করেন তাঁর পাকিস্থানে বিশ্বাসটা তিনি প্রথম পরীক্ষা করবেন সালেহার ওপরই। ওই মাইয়াটা দেখতেশুনতে এই দেশটার মতোই, ওর শরিলে একটা জয়বাংলা জয়বাংলা গন্ধ আছে; অর শরিলের জয়বাংলা ছাড়াইয়া দিতে হবে, ওইখানে পাকিস্থান জিন্দাবাদ ঢুকাইয়া দিতে হইবে। পাকিস্থানে যার ইমান আছে, তাকে কোনো কিছুই আটকাতে পারে না, তার সামনে কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
সালেহা দরোজা খুলে দেয়ার পরই তিনি তাকে জোরে জড়িয়ে ধরে রান্না ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সালেহার একটি নখ তার গালে বিধে যায় (ওই দাগটা এখনো আছে), সালেহার চিঙ্কারে তাঁর বিবি কাঁপতে কাঁপতে রান্না ঘরে এসে দেখে ভিস্তি সাহেব সালেহার গলা চেপে কাজ করে চলছেন।
বিবি চিৎকার করে ওঠে, হুজুর, আপনে এইটা কী করতাছেন? আপনের গুনা হইতাছে। আল্লারসুলের কথা মনে আনেন।
ভিস্তি সাহেব উঠে দাঁড়ান, এবং স্ত্রীকে একটা চড় মারেন। স্ত্রী ঘুরে পড়ে যায়, তবু উঠে দাঁড়িয়ে বলে, আপনে জিনা করতাছেন, আমার ভাগ অন্য মাইয়ালোকরে দিতাছেন, আপনে দোজগে যাইবেন।
ভিস্তি সাহেব বলেন, বিবি, তুমি ভাইবো না, বান্দির লগে সহবত করলে জিনা হয়, গুনা হয় না। বান্দি মনিবের মাল।
বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলে, এই কথা আমি মানি না, আপনে জিনা করছেন, অন্য মাইয়ালোকের ইজ্জত নষ্ট করছেন। আল্লা আপনের লিগা দোজগ লেইখ্যা রাখছে, আপনে হাবিয়ায় যাইবেন।
ভিস্তি সাহেব বলেন, বিবি, চুপ থাকো; আরেকটু টু শব্দও শুনতে চাই না।
বিবি বলে, আমি চুপ থাকুম না।
ভিস্তি সাহেব বিবিকে একটা চড় মারেন, বিবি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়; তিনি আবার সালেহাকে ধর্ষণ করেন।
এখন তার সাথে পলিটিক্স করছেন শক্তির উৎসবাদী বংশের নেতা অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু, এবং তিনি পলিটিক্সে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন পন্টুকে। আমরা জনগণরা দেখেছি এককালে তারা অনেক বছর এক সাথে ছিলেন, দেখে আমাদের ভালো লাগতো, খুশি হতাম আমরা, দুই রাজবংশের মধ্যে শাদিই হয়ে গিয়েছিলো বলে আমরা ভাবতাম, তারপর আবার তালাক হয়ে যায়। রাজবংশগুলোর শাদি আর তালাকে আমরা অবাক। হই না, বিবাহ হলে তো তালাক হতেই পারে, এটাকে আমরা রাজনীতি মনে করি।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলেন, আস্সালামুআলাইকুম, মওলানা রহমত আলি। ভিস্তি সাহেব, আমার সেলাম নেন। অনেক দিন পর কথা বলছি, গলাটা চিনতে পারছেন কি না জানি না।
রহমত আলি ভিস্তি বলেন, ওআলাইকুমসাল্লাম ওআ রহমতুল্লাহে বরকত হু, আপনে কে কথা বলতাছেন, ভাইজান? আপনের গলাটা চিনা চিনা লাগছে।
রুস্তম আলি বলেন, আমি অধ্যক্ষ রুস্তম আলি পন্টু বলতেছি। চিনতে পারতেছেন ভাইজান?
রহমত আলি ভিস্তির দিলটি প্রথম একটু বেজার হয়, পরমুহূর্তেই শান্ত হয়ে ওঠে; এবং বলেন, ভাইজান, আপনেরে চিনবো না ক্যান? আপনে দেশের বড় ন্যাতা, অনেক বছর সামনা সামনি দেখা নাই, তয় ভোলনের কথাই ওঠে না।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলি বলেন, ভাইজান, এক সোম ত আমরা এক লগেই আছিলাম, আবার এক লগেই থাকতে হইব, আপনের লগে আমি একটু বসতে চাই, মহাদেশনেত্রীও বসতে চান আপনার লগে। আমাগো মহাদেশনেত্রী আপনের কথা মাঝেমাঝেই বলেন আইজকাল।
মওলানা রহমত আলি ভিস্তি বলেন, বসন ত লাগবোই, ভাইজান; খালি রাস্তায় ত পলিটিক্স হয় না, না বসলে আসল পলিটিক্স হয় না। আপনেগো মহাদেশনেত্রীর কথাও আমরা সব সময় কই।
রুস্তম আলি বলেন, রাস্তার পলিটিক্স ত লোকদ্যাখাইন্যা পলিটিক্স, আসল পলিটিক্স হইছে একখানে বইস্যা পলিটিক্স।
চমৎকার খুব ভাল লাগলো