তিনি আরো বলেন, ‘যেই মাইয়াগুলি আগে দুদ ফুলাইয়া পাছা দুলাইয়া কোমর নাচাইয়া মার্কেটিংয়ে যাইত, তারা এইখন বোরখা হিজাব ছাড়া বাহির হয় না। মমিনরা বল, মাইয়ালোক উচা দুদ ফুলাইয়া আর চওরা পাছা দুলাইয়া রাস্তায় বাহির হইলে কোন মমিন না পাগল আয়? মমিনের পক্ষে তখন জেনা না কইর্যা উপায় থাকে না। অহন আর সেই অবস্তা নাই।‘
‘আরও মাশাল্লা, আর কয়দিন পর তারা কাবিনও চাইব না, একটা লোয়ার আংটি হইলেই হইব; স্বামীগো চাইরটা বিবি রাখতে দিব। স্বামীরা আবার তালাক দেওনের ক্ষমতা ফিইর্যা পাইব, যার তালাক দেওনের ক্ষমতা নাই, সে পুরুষ না, যার দুই তিনডো বিবি নাই, সে খাটি মুছলমান না, আলহামদুলিল্লা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা হিশাব নিয়া দেখছি বিশ বচ্ছর আগে ইনভার্ছিটি কলেজের বিশজনও মছজিদে যাইত না, এইখন শতকরা নব্বইজন ছাত্র আর মাস্টার মছজিদে যায়, শুকুরবার দৌড়াদৌড়ি পইর্যা যায়, আমরা খবর নিছি আগে ইনভাৰ্ছিটি কলেজের শতকরা ৯৯ জন ছাত্ৰমাস্টার খাড়াইয়া মুততো, এখন ৯৯জন বইস্যা মোতে, ঢিলা কুলুপ লইয়া চল্লিশ কদম হাডে; ইনভাৰ্ছিটিগুলির মুতাগারে এইখনে আমরাই ঢ়িলা কুলুপ সাপ্লাই করি, বচ্ছরে ষাইট টন টিলা কুলুপ সাপ্লাই করি। ইনফেকশন ফ্রি ঢিলা কুলুপ। আমরা সাকসেকফুল হইতেছি, পুরা সাকসেসফুল হইতে বাকি নাই, ইনশাল্লা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আস্তাগাফেরুল্লা, আগে আয়জানের সোমও মুরতাদরা গানবাইদ্য করত, পাছা দুলাইয়া ঢেমনি মাইয়াগুলি নাচত, সোভানাদুল্লা, এইখন কি দেকাতেছি, আয়জন দিলে সব চোপ অইয়া যায়, নাচ বন্দ হয়, গান বন্দ অয়, এমুন্ন কি যেই বেলেহাজ মাইয়াগুলি মগরবের সোম নানান ইনভাৰ্ছিটির সামনে বইস্যা ছ্যামরাগে লগে পীরিত করে, ডলাডলি করে, কাপোড় নাপাক কইর্যা ফালায়, হেরাও এইখন আয়জন শোনলে মাতায় কাপোড় তুইল্যা দেয়, ডলাডলি বন্দ কইর্যা দেয়, মজনুগো হাত সরাইয়া দ্যায়, সোবাহাল্লা, আমরা আগাই যাইতেছি, বেশি দেরি নাই পাক স্তান কায়েমের।’
‘সোভানাল্লা, এককালের কম্যুনিস্টরাও আমাগো লগে জয়েন করছে, হেরা অহন পাক স্তান আর ইছলাম ছাড়া কিছু বোজে না, আলহামদুলিল্লা, গত কয় মাসে আমি দশগণ্ডী কম্যুনিস্টরে তোবা পড়াইছি। কম্যুনিস্টরাও জিহাদে বিশ্বাস করতো, শ্রেণীসংগ্রামের জিহাদ, ক্যালাশস্ট্রাগলের জিহাদ, এইখনে তারা নিজেগো ভুল বুজতে পারছে, খাডি জিহাদে ফির্যা আইছে। দ্যাহ নাই, ১৯৭১-এ একদল কম্যুনিস্ট আমাগো লগে কাম করছে, সোভানাল্লা।’
তিনি আরো বলেন, ‘ডাক্তারগো ক্লিনিকে আর চেম্বারে গেলে এইখন মানুষ কি দ্যাকতে পায়? নাছারাগো কোনো বই দোকতে পায় না, দেখে আমাগো পরম মুরব্বি সৌদি রাজার উপহার দেওয়া আল কুরআন। ইঞ্জিনিয়ারগো অফিশে গ্যালে কি দেখে, দেখে আমাগো পরম মুরব্বি সৌদি রাজার উপহার দেওয়া আল কুরআন। আল্লার রহমতে নাজাতের আর দেরি নাই, আলহামদুলিল্লা।’
আমি এক সময় মার্ক্সবাদ করেছি
আমি এক সময় মার্ক্সবাদ করেছি, সাম্যবাদী ইশতেহার পড়েছি, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ ছাড়া আর কিছু বুঝি নি, সব কিছু ব্যাখ্যা করেছি মার্ক্স-এঙ্গেলসের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী ভাষায়, হেগেলকেও টেনে এনেছি; বলেছি, কম্যুনিষ্ট ইশতেহার হচ্ছে শ্ৰেষ্ঠ বই, শ্ৰেষ্ঠ ঘোষণা, নেতাদের সঙ্গে শ্লোগান দিয়েছি পথে পথে, কিছু পাই নি; আমাদের নেতারা রাশিয়ার ভোদকা আর চীনের বিড়ি পেতো, আমি তাও পাই নি; আলহজ এরশাদের সময় আমার নেতারা যখন তার পা চাটতে শুরু করে, মন্ত্রী প্ৰধান মন্ত্রী হতে শুরু করে, আমার ঘেন্না লাগে; তখন আমি সর্বহারা দলে যোগ দিই, এখানে সেখানে দু-একটি খুন করি, ডাকাতি করি—করতে ভালোই লাগে, দু-একটি মেয়েকে ধর্ষণ করি, আমি ঠিক ধর্ষণের মতো করি নি, তাদের আমি রাজি করাই, প্রথমে ছেড়েই দিই, তারপর থেকে তাদের সঙ্গে আমার কয়েকবার দৈহিক সম্পর্ক হয়, আমি ঠিক মতো পেরে উঠি নি, তারা সবাই বলে, ‘তুমি পারো না’, তখন আমি পারতাম না, এখন পারি, আমি ধীরেসুস্থে পারতে শিখেছি, তারপর আমি যোগ দিই ‘জামাঈ জিহাদে ইছলাম পার্টিতে। আমি মুক্তির পথ খুঁজে পাই, জীবন পাই।
জামাঈ জিহাদে ইছলাম আমাকে উদ্দীপ্ত করে, আমি প্ৰচণ্ড উত্তেজনা বোধ করি, ওই উত্তেজনা দেহের বিশেষাঙ্গের উত্তেজনার থেকে অনেক বেশি তীব্ৰ, অনেক বেশি প্রচণ্ড, আমি দেখতে পাই আমি বেঁচে উঠছি, আমি বেহেশতের স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠি। মওলানা মওদুদি, ইমাম গাজালি, আয়াতুল্লা খোমেনির বই, আর কোরান-হাদিছ, নেয়ামুল কোরআন, মুকছোদুল মামেনিন, বেহেস্তের জেওর পড়ে আমি বুঝতে পারি। এতোকাল আমি ভুল পথে ছিলাম, দোজগের রাস্তায় ছিলাম, এখন আমি ঠিক পথে এসেছি; এখানে সব সময়ই খোয়াব, সব সময়ই উত্তেজনা; পৃথিবীতে মুছলমান আর ইছলাম ছাড়া আর কিছু থাকবে না, এ-বিশ্বাস আমাকে মাতাল ক’রে তোলে–নাউজুবিল্লা, ‘মাতাল’ শব্দটি ঠিক হয় নি, আল্লা আমাকে মাফ করবেন; এ-সময়ই আমি একটি চমৎকার জীবন পাই। যখন মার্ক্সবাদী ছিলাম, যখন সৰ্বাহারা ছিলাম, তখন আমার কোনো জীবন ছিলো না; জামাঈ জিহাদে ইছলামে যোগ দেয়ার পর আমি প্ৰায় সবই পাই, বেহেশত তো পাবোই। যোগ দেয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই আমি জামাঈ জিহাদে ইছলাম-এর ‘মদিনাতুন্নবি’ অঞ্চলের নেতা হয়ে উঠি, আমার খুব চেষ্টা করতে হয় না; আমার প্ৰধান নেতারা বুঝতে পারেন যে-তিরিশটি মাদ্ৰাছার তালেব এলেম নিয়ে এআঞ্চলিক সংঘটি গঠিত, ওই সব হাফেজিয়া ফোরাকানিয়া কওমি কামিল দাখিল সাধারণ মাদ্ৰাছার তালেবানদের মাথায় ঘিলু নেই, যেমন তাদের মাথাও নেই, তাদের মগজ অন্য জায়গায়; তাই যোগ দেয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই আমি নেতা হয়ে উঠি, যা আমি কখনো হই নি।